দুর্গাপুজোর রেশ হিসেবে পুজো শেষের দিনকয়েক পরে বাংলার ঘরে ঘরে আরাধনা করা হয় দেবী কোজাগরীর। এবছর রবিবার কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো। পঞ্জিকামতে, উপবাসের পর এবছর সন্ধ্যা ৫টা ১৫ থেকে ৬টা ৫১-র মধ্যে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো করা উচিত। কোজাগরী শব্দটি 'কো জাগতি' কথা থেকে এসেছে। যেখানে সারারাত জেগে দেবীর অপেক্ষার কথাই বলা হয়েছে। সারা রাত জেগে পাশা খেলার রীতিও রয়েছে এই পুজোয়।
প্রতিবছর ঘরে ঘরে আরাধনার পাশাপাশি মালদহ জেলার বামনগোলা থানার গোবিন্দপুর গ্রামে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো উপলক্ষে একটি মেলার আয়োজন হয়। মালদহ জেলার কৃষ্ণনগর ও গোবিন্দপুর গ্রামেও কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো উপলক্ষে পূজা ও মেলার আয়োজন করা হয়। এবছরও সেই আয়োজন করা হবে।
কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোয় বিভিন্ন বাড়িতে থাকে খিচুড়ি ভোগ। কোনও কোনও বাড়িতে আবার সঙ্গে জোড়া ইলিশও দেওয়া হয়। সঙ্গে থাকে লাবড়া, বেগুন ভাজা, নানা ধরনের ভাজা। ভক্তদের ধারণা, দেবীকে সবজি ও চালের ভোগ দিলে তিনি আশীর্বাদ হিসেবে ঘরে ধনধান্যের অভাব হতে দেন না। সঙ্গে ফলমূল প্রসাদ তো থাকেই। যেমন- নারকেলের নাড়ু, তিলের নাড়ু, ভুশের নাড়ু। এছাড়াও লুচি, পায়েস ও মিষ্টির আয়োজন থাকে। পূর্ববঙ্গীয় রীতিতে লক্ষ্মীপুজোর দিন মাছের পাঁচ পদ রান্না হয়। আর, পশ্চিমবঙ্গীয় রীতিতে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর দিন লুচি, সুজির মত নিরামিষ ভোগ দেওয়ার রীতি চালু আছে। যেখানে, চালের কোনও কিছু রান্না হয় না।
আরও পড়ুন- দুর্গাবন্দনা শেষ হতেই দেবী হুগলির শিয়াখালায়, আজ জাগ্রত উত্তরবাহিনীর পুজো
কিছু বাড়িতে আবার কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোয় বাণিজ্যতরী সাজানোর রীতি রয়েছে। কলাগাছের কাণ্ড কেটে সেটা দিয়ে তৈরি করা হয় বাণিজ্যতরী। তাতে রাখা হয় টাকা, ধান, চাল, গম-সহ নানাধরনের শস্য। পাশাপাশি, ধান এবং মোহরের চিহ্ন দেওয়া আলপনা দেওয়ার রীতিও রয়েছে। বাড়ির সদর দরজা থেকে ধান ও মোহরের চিহ্ন-সহ আলপনা দেওয়ার রীতি বহু বাড়িতেই পালিত হয়। ভক্তদের বিশ্বাস, এতে কোনও পরিস্থিতিতেই বাড়িতে অর্থাভাব হয় না।