ভোরের কুয়াশা, রাতে হিমের পরশ, উত্তুরে হাওয়া...বিকেল গড়াতে না গড়াতেই নামছে আঁধার। গায়ে উঠছে সোয়েটার কিংবা জ্যাকেট, কারও গলায় মাফলার, তো কারও মাথায় টুপি, ক্যালেন্ডার উলটে এসে গেল ডিসেম্বর মাসের পাতা। হ্যাঁ, বাঙালির লেপ-কম্বলে আলসেমি করার সময় আসন্ন। আবহাওয়া দফতর বলছে, এ শহরে শীত একেবারে দোরগোড়ায়। এমন মরশুমে প্রতি বছরের মতো শীতকাতুরে বাঙালি চড়ুইভাতি করে, হাঁটি হাঁটি পায়ে ঘুরে বেড়ায় নিজেদের পছন্দের ডেস্টিনেশনে। এবং শীতকালে এ শহরের চৌহদ্দিতে বাঙালির বরাবরের পছন্দের ডেস্টিনেশন অবশ্যই আলিপুর চিড়িয়াখানা।
বছরের অন্য দিনগুলোয় চিড়িয়াখানায় যে সমাগম দেখা যায়, শীতের মরশুমে তা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। এত মানুষের ভিড়ে জমাটি পরিবেশ তৈরি হয় চিড়িয়াখানা প্রাঙ্গণে। এ বছর মরশুমের শুরুতে কেমন সাড়া মিলছে চিড়িয়াখানায়? জবাবে আলিপুর চিড়িয়াখানার অধিকর্তা আশিস কুমার সামন্ত ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বললেন, "এ বছরের মরশুম মোটামুটি শুরু হয়ে গিয়েছে। ভালই ভিড় হচ্ছে। ছুটির দিনগুলোতে শনি ও রবিবার বেশি ভিড় হচ্ছে। প্রায় ২০ হাজারের মতো লোক হচ্ছে।"
কয়েকমাস আগে চিড়িয়াখানায় জন্ম নিয়েছিল জিরাফশিশু মুনিয়া। ফাইল ছবি, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
আরও পড়ুন, ট্রেকিং করতে গিয়ে প্লাস্টিক কুড়োলেন কলকাতার ‘বোহেমিয়ানরা’
কিন্তু এ বছর যে শীতে আলিপুর চিড়িয়াখানায় অ্যানাকোন্ডা দর্শনের আশা ছিল? দুঃখের বিষয়, এবার সেই আশা পূরণ হচ্ছে না। কারণ এখনও অ্যানাকোন্ডা আনা হয়নি, তবে তার ঘর তৈরির কাজ চলছে। অ্যানাকোন্ডা কবে আসছে? জবাবে আশিসবাবু বললেন, "শীতের পরই আসবে।" এবার চিড়িয়াখানার আকর্ষণ কী? জবাবে হাসলেন আশিসবাবু, "ক্যাঙারু দেখতে ভিড় হচ্ছে ভাল, তাছাড়া শিম্পাঞ্জি তো আছেই।" একইসঙ্গে তিনি জানালেন, "এবছর নিশাচর প্রাণীদের জন্য নতুন ঘর তৈরি করা হচ্ছে, ডিসেম্বরের শেষে কিংবা জানুয়ারির প্রথমে আশা করছি ঘরটি চালু করে দিতে পারব।"
অন্যদিকে, ডিসেম্বর তো শুরু, কিন্তু শীত কি এল কলকাতায়? জবাবে আলিপুর আবহাওয়া দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বললেন, "কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বুধবার ১৫.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১৫ ডিগ্রি হলে এবং তা দু-তিনদিন স্থায়ী হলে, তবে বলি যে শীত এসেছে। শীত কাছাকাছি চলে এসেছে বলা যায়। আগামী কয়েকদিন তাপমাত্রা এমনই থাকবে।" তবে জেলায় ইতিমধ্যেই শীত এসেছে, সেখানে পারদও নেমেছে।