দুর্গা পুজো চলে গেছে, বাঙালির মন খারাপ। এমতবস্থায় ক্ষতের ওপর প্রলেপ ছিল ঠান্ডা ঠান্ডা আবহাওয়া এবং আলোর উৎসবের আগমনের অপেক্ষা। সামনেই দীপাবলি যে! তবে এবারে দীপাবলিতে যেন আলোর বাজারে ঘনিয়েছে অন্ধকার। মাথায় হাত আলোর দোকানিদের। কারণ বিক্রি নেই একদম। বাজার শুকনো। দীপাবলিতে চিনের আলো, সে তো কবেই নিজের জায়গা করে নিয়েছে। ডায়মন্ড, ক্রিস্টাল ও পেনসিল টুনি তো হট কেকের মতো বিকিয়েছে গতবছর। সাঁঝবাতির রূপকথায় নিজেকে এঁকেছে ডিজে ডিস্কোস, রাইস অর্থাৎ এলইডি আলোর চেইন। এবছরের ট্রেন্ডে রয়েছে ছোট বড় নানা ধরনের প্রদীপ লাইট, ট্রি লাইট, ও ঝুমর।
আলোর বাজারে কোলাহল নেই আগের মতো। ছবি: শশী ঘোষ
মোমবাতি, প্রদীপের জায়গায় এসেছে এই সস্তার লাইট। কিন্তু তারাও বাজারে ভিড় টানতে ব্যর্থ। গত বছরের তুলনায় এবছরে আলোর দাম বেড়েছে সামান্যই, কিন্তু সরকারের ট্যাক্সের চাপে তা দেখাচ্ছে অনেক। ১২ ফুট রাইসের দাম হয়েছে ১৫০ টাকা। তবে চাঁদনী চকের আলোর ব্যবসায়ী নিয়াজ বললেন, "এই দামেও কেউ কিনতে চাইছেন না। বাজারে সেই ভিড় এখন আর নেই।" এজরা স্ট্রিটের তালিমের কথায়, "লেজার লাইট, রাইসের চাহিদা আছে, কিন্তু দাম বেশি হয়েছে বলে কেউ কিনতে চাইছেন না।"
আরও পড়ুন: Firecrackers banned: পশ্চিমবঙ্গে নিষিদ্ধ ১০৫, ছাড়পত্র পেয়েছে সাতটি শব্দবাজি
এবারে বাজারে চাহিদা লাইটের প্রদীপের। ছবি: শশী ঘোষ
প্রতিটি লাইটে প্রায় ২০-২৫ টাকা দাম বেড়েছে। ১৫০ থেকে ৮০০-১০০০, এই রেঞ্জের আলোই বেশি দোকানিদের স্টকে। আর অনলাইন ব্যবসা কিছুটা হলেও ফিকে করেছে এঁদের দোকানের জৌলুস। কিন্তু জাহিরের মতো ব্যবসায়ীরা বলছেন, "আলো হাতে নিয়ে, টেস্ট করে কোনটা বাড়িতে নিয়ে যাবেন সেটা দেখার মজা আমাদের মতো দোকানগুলোতেই আছে।" প্রসঙ্গত, এই লাইটের দাম কম বলে মধ্যবিত্ত ক্রেতারা ঝুঁকেছিলেন সেই দিকেই। এবার যদি তারও দাম বাড়তে থাকে তাহলে তো প্রমাদ গুণতে হবে দোকানিদের। "কিন্তু আমাদের তো কিছু করার নেই। ট্যাক্স তো দিতেই হবে। দাম না বাড়ালে সেটাই বা জোগাব কি করে বলুন?" বলছেন তালিম।
আলোর দোকানে সার দিয়ে রয়েছে এই ল্যাম্প ঝুমরও। ছবি: শশী ঘোষ
কালীপুজোর আগে শেষ রবিবার সামনে, তার আগে নিজেদের বাড়িকে আলোময় করতে চাইছেন প্রত্যেকেই। হুড়োহুড়ি এখনও চোখে না পড়লেও বিক্রির বাজার যে একটু সামলে যাবে সেই আশায় দিন গুনছেন দোকানিরা। পসরা সাজিয়ে বসে হতাশ চোখে তাকিয়ে থাকার সময় কিছুটা হলেও বদলাক। আতসবাজি থেকে টুনি, আলোর আনন্দে মাতুক কলকাতা।