দীর্ঘ আড়াই মাস থমকে থাকার পর একটু একটু করে ছন্দে ফিরছে জীবন। খুলছে রেস্তোরাঁ, শপিং মল। প্রায় ৭০ থেকে ৭৫ দিন ঘরবন্দি থেকেছে তিলোত্তমা। দম বন্ধ করা বন্দি যাপনের পর যেন জীবনের তালা খুলছে একটু একটু করে। তবে দীর্ঘ বিচ্ছেদের পরপরই কি আলো আঁধারি রেস্তোরায় নিয়ে যেতে পারবেন মনের মানুষকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে উত্তর 'হ্যাঁ'। তবে কিনা'মুখোমুখি বসিবার বনলতা সেন' ভাবতে পারবেন না সঙ্গিনীকে। মিলবে না রেস্তোরাঁর নিভৃত কোণ, টেবিলের এপার ওপারের দুই টেবিল। সরকারি আদেশ অনুসারে নানারকম নিয়ম কানুন, সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং মেনে তবেই খুলছে রেস্তোরাঁ।
দক্ষিণ কলকাতার জনপ্রিয় রেস্তোরাঁ চেইন হাটারি জানাল, ৮ জুন নয়, তারা খুলছে ১৫ জুন থেকে। আপাতত ডেলিভারি, আর টেক অ্যাওয়ে চালু রয়েছে অবশ্য। পার্ক স্ট্রিটের পিটার ক্যাট কী বলছে? সোমবার থেকেই ভোজন রসিকদের জন্য খুলে গেছে পিটার ক্যাট। রেস্তোরাঁয় ঢোকার সময় হচ্ছে থার্মাল স্ক্রিনিং। টেবিলে টেবিলে থাকছে স্যানিটাইজার। ওয়েটারদের মুখে মাস্ক তো থাকছেই। একসঙ্গে নির্দিষ্ট সংখ্যক গ্রাহককেই রেস্তোরাঁর ভেতর ঢোকার অনুমতি দেওয়া হবে। তার বেশি হলে বাইরে অপেক্ষা করতে হবে, তাও আবার সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনেই। নিয়মিত স্যানিটাইজ করা হবে রেস্তোরাঁ। এতকিছুর জন্য খরচা বাড়ায় প্রতি প্লেট অর্ডারেই ১০ টাকা করে বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
মুঘলাই খানার ঠিকানা আউধ-১৫৯০ বলছে তারাও গ্রাহকদের জন্য দরজা খুলেই দিয়েছে। তবে সব কিছুই হবে সরকারি নিয়ম মেনে। খাবারের জন্য ডিজপোসেবল থালা ব্যবহার করতে বাধ্য হয়েছেন রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ। এতে সাময়িক ভাবে মুঘলাই মেজাজ খানিক নষ্ট হবে বটে, তবে সবচেয়ে আগে গ্রাহকদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রাখছেন তাঁরা। চারজনের টেবিলে এখন বসানো হবে দুজনকে। তাও আবার মুখোমুখি নয়, কোনাকুনি।
এই প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের জনপ্রিয় হ্যাং আউট ঠিকানা কেএফসিও খুলছে নানা নিরাপত্তামূলক বিধি মেনেই। যারা রেস্তোরাঁয় ঢুকে খাবেন, আর যারা খাবার প্যাক করে নিয়ে যাবেন, তাঁদের জন্য থাকছে আলাদা লাইন। লাইনে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা বাধ্যতামূলক। টাকা আদান প্রদান কমাতে বেশিরভাগ রেস্তোরাঁই ডিজিটাল পেমেন্ট পদ্ধতিই বেছে নিচ্ছে প্রথম কয়েক দিন।