/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/16/kumbhalgarh-fort-1-2025-10-16-19-13-40.jpg)
Kumbhalgarh Fort: কুম্ভলগড় দুর্গ।
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/16/kumbhalgarh-fort-2-2025-10-16-19-13-53.jpg)
কুম্ভলগড় দুর্গ
Kumbhalgarh Fort: রাজস্থানের পাহাড়ের কোলে আরাবল্লি পাহাড়ের বুক চিরে দাঁড়িয়ে আছে এক অসাধারণ দুর্গ— কুম্ভলগড় ফোর্ট। দূর থেকে দেখলে মনে হবে পাথরের কোনও স্বপ্ন। কাছে গেলে বোঝা যায়— প্রতিটি ইট, প্রতিটি প্রাচীর যেন বলছে এক হারিয়ে যাওয়া সময়ের কথা। দিনের আলো ফুরোলে, যখন সূর্য ডুবে যায় মরুভূমির ওপারে, তখন এই প্রাচীন প্রাচীরগুলো যেন অতীতের গান গুনগুন করে ওঠে।
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/16/kumbhalgarh-fort-3-2025-10-16-19-22-07.jpg)
এক রাজা, এক সাধু, আর এক অমর প্রতিজ্ঞা
১৫শ শতকে মেওয়ারের রাজা রানা কুম্ভ এই দুর্গ নির্মাণের উদ্যোগ নেন। কিন্তু যতবারই কাজ শুরু হয়, অদ্ভুতভাবে তা ব্যাহত হয়। রাজকর্মীরা বিশ্বাস করতে শুরু করেন — এই দুর্গ যেন নিজেই তৈরি হতে চাইছে না। একদিন এক সন্ন্যাসী এসে রাজার সামনে বললেন, 'এই দুর্গ তখনই সম্পূর্ণ হবে, যখন কেউ স্বেচ্ছায় আত্মবলিদান দেবে রাজ্যের রক্ষার জন্য।'
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/16/kumbhalgarh-fort-4-2025-10-16-19-22-46.jpg)
আজও স্মরণ করা হয় সেই ঘটনা
রানা কুম্ভ স্তব্ধ হয়ে যান। এরপর সেই সাধুই নিজের প্রাণ বিসর্জন দেন। যেখানে তাঁর মাথা পড়েছিল, সেখানে নির্মিত হয় দুর্গের মূল ফটক — হনুমান পোল, আর যেখানে দেহ পড়েছিল, সেখানে গড়ে ওঠে দুর্গের প্রাচীর। আজও দর্শনার্থীরা সেই স্থানকে শ্রদ্ধা জানাতে প্রদীপ জ্বালান।
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/16/kumbhalgarh-fort-5-2025-10-16-19-23-47.jpg)
এখানেই জন্ম নেন এক বিরাট বীর
এই দুর্গই ইতিহাসে অমর হয়ে আছে আরেক বীরের জন্মভূমি হিসেবে। তিনি মহারানা প্রতাপ। মুঘল সম্রাট আকবরের সামনে মাথা নোয়াতে তিনি অস্বীকার করেছিলেন। লোকমুখে শোনা যায়, প্রতাপের প্রথম কান্না নাকি প্রতিধ্বনিত হয়েছিল কুম্ভলগড়ের পাথুরে প্রাচীরের ভেতরেই। আর সেই প্রতিধ্বনি আজও নাকি শোনা যায় মরুভূমির হাওয়ায় ভেসে বেড়ানো নীরবতার মধ্যে।
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/16/kumbhalgarh-fort-6-2025-10-16-19-24-32.jpg)
স্থাপত্যের বিস্ময়
কুম্ভলগড় ফোর্টের প্রাচীরের দৈর্ঘ্য ৩৬ কিলোমিটার, যা চিনের গ্রেট ওয়াল-এর পর বিশ্বের দ্বিতীয় দীর্ঘতম দেওয়াল। দুর্গটির ভিতরে রয়েছে ৭টি বিশাল দরজা, ৩৬০টিরও বেশি মন্দির এবং অসংখ্য প্রাচীন স্থাপত্য। দুর্গটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১,১০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত, এবং এখান থেকে পুরো মেওয়ার রাজ্যের বিস্তীর্ণ দৃশ্য একনজরে দেখা যায়।
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/16/kumbhalgarh-fort-7-2025-10-16-19-25-33.jpg)
অসাধারণ দৃশ্য
রাতে, যখন দুর্গ আলোকসজ্জায় ঝলমল করে ওঠে, মনে হয় যেন তারাগুলি নেমে এসেছে রাজস্থানের পাহাড়ে। দুর্গের প্রতিটি প্রাচীর, প্রতিটি খিলান যেন স্মরণ করিয়ে দেয় মেওয়ার রাজবংশের গৌরব, ত্যাগ ও আত্মসম্মানের ইতিহাস।
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/16/kumbhalgarh-fort-8-2025-10-16-19-26-19.jpg)
আজকের কুম্ভলগড়
আজ কুম্ভলগড় রাজস্থানের অন্যতম জনপ্রিয় ঐতিহাসিক পর্যটন কেন্দ্র। প্রতিদিন হাজার হাজার দর্শনার্থী আসে এই 'গ্রেট ওয়াল অব ইন্ডিয়া' দেখতে। খানে প্রতিবছর আয়োজিত হয় কুম্ভলগড় ফেস্টিভ্যাল (Kumbhalgarh Festival)। যেখানে রাজস্থানের লোকসংগীত, নৃত্য ও সংস্কৃতির মিলন ঘটে। এই দুর্গ শুধু রাজস্থানেরই নয়, ভারতেরও আত্মমর্যাদার প্রতীক। এক রাজা, এক সাধু এবং এক অমর প্রতিজ্ঞার পাথরে লেখা ইতিহাস।