তৃতীয়ার দিন, ঘড়ির কাঁটায় বিকেল ৪.৩০। সাইক্লোন তিতলির জেরে কলকাতার আকাশ তখন ঘন মেঘে আচ্ছন্ন। শুরু হয়েছে বৃষ্টিও। এমন এক সময়ে একডালিয়া এভারগ্রিন ক্লাব প্রকাশ্যে নিয়ে এল তাদের বড়ো চাঁদমালা। কলকাতার বুকে এত বড়ো চাঁদমালা কেউ আগে করেনি । তবে তা যে দেবী দুর্গার হাতে শোভা পেয়েছে এমনটা কিন্তু নয়, এক পাঁচ তলা বাড়ির ছাদ থেকে ঝোলানো হয়েছে এই প্রকান্ড চাঁদমালাটি।
কলকাতার দেশপ্রিয় পার্কে ২০১৫ সালে যে বড় দুর্গার হিড়িক উঠেছিল, তারপর থেকেই মূলত এই ধরনের শিল্পকর্মের হুজুগ দেখা দিয়েছে, বলা বাহুল্য। একডালিয়ার ঠাকুর দেখতে এসে ডানদিকের উঁচু বিল্ডিংয়ের দিকে একটু ঘাড় উঁচিয়ে দেখলেই আপনার চোখে পড়বে চাঁদমালাটি।
চালচিত্র বানিয়েছেন এই দুই শিল্পী। ছবি: শশী ঘোষ
৩২ ফিটের এই চাঁদমালায় নিয়ম মেনেই রয়েছে তিনটি গোলাকার চাকতি। প্রত্যেকটি চাকতির প্রায় আট ফিট বৃত্ত। ইতিমধ্যে এই চাঁদমালা নাম লিখিয়েছে 'লিমকা বুক অফ ২০২০-র রেকর্ডসের' তালিকায়। পিন্টু রায় ও সৈকত দাস এই দুই শোলার শিল্পীকে নিয়ে এসে এই চাঁদমালাটি বানানো হয়েছে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে শিল্পী জানিয়েছেন, প্রায় একমাস সময় লেগেছে এই চাঁদমালাটি বানাতে। চাঁদমালার সঙ্গে করা হয়েছে আলোকসজ্জার কাজও।
উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন ক্যাকটাস ব্যান্ডের প্রধান গায়ক সিধু এবং প্লেব্যাক গায়িকা উজ্জয়িনী মুখার্জি। এক বেসরকারি সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বর্তমানে থিম পূজোর ভিড়ে অপরিহার্য চাঁদমালা যারা তৈরি করেন সেই শোলা শিল্পী বা মালাকারেরা থাকেন দারিদ্রের অন্ধকারে। বাংলার হারিয়ে যাওয়া হস্তশিল্প এই শোলার কাজ তথা চাঁদমালা তৈরির শিল্পকে বাঁচিয়ে তুলতে এই উদ্যোগ নিয়েছে ওই সংস্থা। একডালিয়ার অভিজাত মন্ডপের পাশে এবার দেখা যাবে আকাশচুম্বী চাঁদমালা।