Advertisment

গণেশের জন্মকাহিনি, কী বলছে কোন পুরাণ, চলুন জেনে নিই

লিঙ্গপুরাণ মতে, শিব নিজের শরীর থেকে গণেশের জন্ম দেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
GANESH

মহাভারতের লেখক ছিলেন গণেশ। ব্যাসদেব বলেছেন। আর, তাই শুনে গণেশ মহাভারত লিখেছেন। কথিত আছে গণেশ চতুর্থী থেকেই শুরু হয়েছিল মহাভারত লেখার কাজ। ১০ দিন লাগাতার লেখার পর গণেশের শরীরে ধুলো-ময়লা জমে গিয়েছিল। তাই ১০ দিন পর তিনি সরস্বতী নদীতে স্নান করে দেহ পরিষ্কার করেন। পৌরাণিক মতে, এই চতুর্থীতেই জন্ম হয়েছিল গণেশের। কীভাবে হয়েছিল গণেশের জন্ম, তা-ই নিয়েও কিন্তু নানা কাহিনি রয়েছে।

Advertisment

শিবপুরাণ অনুযায়ী, পার্বতী একদিন নন্দীকে দ্বাররক্ষী নিযুক্ত করে স্নান করতে গিয়েছিলেন। সেই সময় শিব নন্দীকে তিরস্কার করে স্নানাগারে প্রবেশ করেন। এতে অপমানিত পার্বতী সখী জয়া-বিজয়ার সঙ্গে পরামর্শ করে জল থেকে পাঁক তুলে সুন্দর পুত্রের মূর্তি নির্মাণ করেন। আর, সেই মূর্তিতে প্রাণ প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেন।

এরপর সেই পুত্রকে দ্বাররক্ষী নিয়োগ করে পার্বতী স্নানে গিয়েছিলেন। সেই সময় শিব স্নানাগারে প্রবেশ করতে চাইলে পার্বতীর ওই পুত্র বাধা দেন। শিব, তাঁর অনুচর এবং সকল দেবতা ওই বালককে পরাজিত করতে ব্যর্থ হন। তখন নারদের পরামর্শে বিষ্ণু ওই বালককে মোহাচ্ছন্ন করেন। আর, শিব ত্রিশূলের সাহায্যে ওই বালকের মাথা ছিন্ন করেন।

এতে ক্ষুব্ধ পার্বতী বিশ্বসৃষ্ট ধ্বংস করতে উদ্যোগী হন। পার্বতীকে শান্ত করতে শিব তাঁর অনুচরদের বিভিন্ন দিকে পাঠান। নির্দেশ দেন, যাকে প্রথমে দেখা যাবে, তাঁরই মাথা নিয়ে আসতে। শিবের অনুচররা একটি হাতির মাথা নিয়ে এলে, দেবতারা সেই মাথাই গণেশের ধড়ের ওপর বসিয়ে দেন। আর, গণেশকে জীবিত করেন।

আবার পদ্মপুরাণ অনুযায়ী, হরপার্বতী ঐরাবতের বেশে বনে বিহার করছিলেন। তাঁদের সেই রূপে মিলনের ফলেই গজমুণ্ড গণেশের জন্ম হয়। লিঙ্গপুরাণ মতে, দেবগণ শিবের কাছে উপস্থিত হয়ে অসুরদের হাত থেকে নিরাপত্তা চান। তখন, দেবগণকে রক্ষার জন্য শিব নিজের শরীর থেকে গণেশের জন্ম দেন।

আরও পড়ুন- গণেশ চতুর্থী, কেন এই বিশেষ দিনের অপেক্ষায় থাকেন লক্ষ লক্ষ ভক্ত

দেবীপুরাণ মতে আবার, শিবের রাজসিক ভাব দেখা দিলে তাঁর দুই হাত ঘামতে থাকে। সেই ঘাম থেকেই জন্ম হয় গণেশের। বামনপুরাণ মতে, পার্বতী স্নানের সময় নিজের গায়ের ময়লা দিয়ে চতুর্ভুজ গজাননের মূর্তি তৈরি করেন। তাঁকে জীবনদান করেন। মহাদেব তাঁকে পুত্ররূপে গ্রহণ করেন। এছাড়াও মৎসপুরাণ, বরাহপুরাণ, বৃহদ্ধর্মপুরাণ, ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণ, স্কন্দপুরাণ মতে গণেশের জন্মের এব তাঁর গজমুণ্ডপ্রাপ্তির আলাদা কাহিনি রয়েছে।

ইতিহাসবিদদের মতে, বৈদিক ও প্রাক বৈদিক উৎসে গণেশের উল্লেখ পাওয়া গিয়েছে। তবে, পৃথক দেবতা হিসেবে গণেশের উদ্ভব হয়েছিল গুপ্তযুগে। নবম শতাব্দীতে পাঁচ প্রধান দেবতার মধ্যে গণেশ অন্যতম দেবতা হিসেবে গণ্য হন। এই সময়ে গণেশকে সর্বোচ্চ দেবতার স্বীকৃতি দিয়ে উদ্ভব ঘটে গাণপত্য সম্প্রদায়ের।

Hindu lord ganesha Ganesh Chaturthi Puja Vidhi
Advertisment