প্রবাদ বলে, শব্দ নাকি জ্ঞান বাড়ায়। আর বইয়ের পাতা নিজেকে আরও উন্নত করার চেষ্টা দেখায়। ছোট্ট ছোট্ট অন্তর্নিহিত প্রতিটা অক্ষর অনেক সময় অগোচরেই শিখিয়ে যায় নতুন কিছু। খেলিয়ে দেয় নতুন ইচ্ছে, জানার আগ্রহ। আরেহ! এটা তো আগে জানতাম না - এই ভাবেই অজানাকে হাতের মুঠোয় আর জ্ঞানের কলসি ধীরে ধীরে ভরিয়ে তোলার রাস্তা কিন্তু বই।
কত রকমের বিষয়, তার কত রকমের ব্যাখ্যা পৌরাণিক কাহিনী থেকে বিজ্ঞানের বিস্তৃতি আবার সাহিত্যের সমাগম থেকে প্রেমের পদাবলী কতকিছুই না জড়িয়ে আছে চারিদিকে। কথায় বলে জীবনের আসল উদ্দেশ্য বেদ উপনিষদের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে রচিত। জানার বিষয় তো রইলো, আপনি কি জানেন বই আপনাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে একাই একশো? আপনাকে প্রেরণা যেমন দেবে তেমনই পুনরায় বাঁচার রসদও কিন্তু যোগাবে।
• প্রথমত বই আপনার জ্ঞান বৃদ্ধি করবে। নিজেকে তথ্য সমৃদ্ধ করতে গেলে এর থেকে ভাল সুযোগ আর নেই। বই থেকে আপনি যা জানতে পারবেন বিশ্বের দরবার আপনার দোরগোড়ায় এসে দাঁড়াবে। বিশেষভাবে বিভিন্ন দেশের সাহিত্য আনতে পারে আপনার মানসিকতায় পরিবর্তন।
• বই পড়া মানেই একধরনের মস্তিষ্কের ব্যায়াম। কেন? গবেষণা বলছে বই পড়লে মগজাস্ত্রে জটিল কোষগুলি উদ্দীপিত হয়। সঙ্গে গল্পে উত্তেজনা, রহস্য ইত্যাদি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই ব্রেনের স্নায়ুগুলো আরও উজ্জীবিত হতে থাকে। রহস্য এবং রোমাঞ্চ মানুষের জীবনে দরকার আছে বইকি। মস্তিষ্কের সংযোগ বৃদ্ধি পায়, পরবর্তী দিনগুলিতে ব্রেন ভালভাবে কাজ করে।
• বই কিন্তু সাংঘাতিক ভাবে আপনার মানসিক চাপ দূর করতে সাহায্য করে। পড়ার এবং মনোনিবেশ করার কাজটি আপনার মনকে উদ্বেগ এবং দিনের চাপ থেকে মুক্তি দিতে সহায়তা করতে পারে। কিন্তু বই পড়া কীভাবে মানসিক চাপ কমায়? পড়ার সময়, আপনার মস্তিষ্ক অবিলম্বে ভিন্ন জগতে বিচরণ করে। গল্পের কিছু চরিত্রের সঙ্গে নিজেকে মেলাতে পারেন আপনি। গল্পের অংশ হিসেবে নিজেকে ভাবতে শুরু করেন। তাই যতই আপনি চাপে থাকুন এটি আপনার ক্ষেত্রে দারুন কাজ দেয়। একবার বই পড়া শুরু করলে আপনি চাপের উপর নয়, শব্দ এবং গল্পের দিকে মনোনিবেশ করতে শুরু করবেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গেই আপনার মানসিক এবং শারীরিকভাবে উন্নতিই হবে।
• স্মৃতিশক্তি ক্রমশই বাড়ে। নানান ধরনের বই মানেই নানান ধরনের প্লট। রহস্য হোক কিংবা রোমাঞ্চ মানুষের জীবনে আগ্রহের কিন্তু শেষ নেই। পাতার পর পাতা সহজেই শেষ করার ক্ষমতা রাখেন অনেকেই। তার সঙ্গে এমনটিই খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গল্পের প্লট এবং বাকি সবকিছু মনে রাখার সঙ্গে সঙ্গেই স্মৃতিশক্তি ক্রমশই বাড়তে থাকে। প্রচুর তথ্য মনে রাখতে হয়। তাই জন্য পাঠ্যবই পড়ার মাঝে মাঝেই গল্পের বই চলতেই পারে।
• সারাদিনে অত্যধিক মাত্রায় কাজ করেন কিন্তু বিশ্রাম নেওয়া একেবারেই হয় না! বই কিন্তু বিশ্রামের দারুন উপায়। যেহেতু এটি ফাঁকা সময় মানুষকে মানসিক চাপ থেকে মুক্তি দেয় তাই বইয়ের মাধ্যমে সহজেই ঘুমের আসক্তি সম্ভব। রাত্রিবেলা বই পড়া কিন্তু ভীষণ ভাল। সঙ্গে হালকা একটু মিউজিক ব্যাস আর কি চাই।
• বই পড়া ভীষণভাবে মনোযোগ বৃদ্ধি করে। একটি কাজে অনেক্ষণ মন দেওয়া সেটি থেকে বিচলিত না হয়ে সম্পূর্ণ করার বিষয়টি বই পড়ার অভ্যাস থেকে মানুষের মধ্যে বেড়ে ওঠে।
তাই, অবশ্যই সারাদিনে নিজের পছন্দমত বই পড়া কিন্তু খুব কঠিন কাজ নয়। ইউটিউব ফেসবুক তো সারাদিনই রয়েছে, এবার একটু শব্দের খেলা হোক!
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন