/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/12/mughal-structure-in-malda-1-2025-10-12-23-08-30.jpg)
Lukochuri Gate: লুকোচুরি দরওয়াজা।
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/12/mughal-structure-in-malda-2-2025-10-12-23-08-45.jpg)
শাহজাহানের ছেলের নাম জড়িয়ে
Mughal structure in Malda: বাংলার এই স্থাপত্য মুঘল সাম্রাজ্যের অংশ। শুনে একটু অবাক হচ্ছেন বৈকি! হলেও ব্যাপারটা কিন্তু, সত্যি। শুধু সত্যিই নয়। এই স্থাপত্যের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ছিলেন তাজমহল যাঁর সময়ে তৈরি হয়েছিল, সেই মুঘল সম্রাট শাহজাহানের ছেলের নাম। শাহজাহানের পরবর্তী সময়ে ঔরঙ্গজেব সিংহাসনে না বসলে শাহজাহানের সেই ছেলেই হতেন মুঘল সম্রাট। আর, তাতে বাংলার নাম ইতিহাসে আরও দৃঢ়ভাবে খোদাই হত।
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/12/mughal-structure-in-malda-3-2025-10-12-23-09-25.jpg)
লুকোচুরি দরওয়াজা
যাক গে সেসব কথা। কিন্তু, জানেন কি? এই স্থাপত্যটা কোথায় দেখতে পাবেন? অথবা এর নামটা কী? এটির নাম লুকোচুরি দরওয়াজা। এটি আপনি দেখতে পাবেন মালদা জেলায়। ১৬৫৫ খ্রিস্টাব্দে বাংলার সুবেদার তখন ছিলেন ঔরঙ্গজেবের ভাই শাহ সুজা। তিনি গৌড় দুর্গে প্রবেশ করার জন্য এই দরজাটি তৈরি করিয়েছিলেন। এই স্থাপত্যটির উচ্চতা ৬৫ ফুট। চওড়া ৪২ ফুট। এর দুই দিকে প্রহরীদের ঘর ও ওপরে নহবতখানা আছে। এটি শাহি দরওয়াজা নামেও খ্যাত।
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/12/mughal-structure-in-malda-4-2025-10-12-23-09-59.jpg)
অতীতের স্মৃতি
বাংলার ইতিহাসে গৌড়-লখনৌতি এক অনন্য নাম। একসময় এই নগর ছিল বঙ্গদেশের রাজধানী, যার প্রাচীরঘেরা দুর্গ, মসজিদ, সমাধি ও প্রবেশপথ আজও স্মৃতি বহন করছে সেই গৌরবময় অতীতের। এই সব স্থাপত্যের মধ্যেই অন্যতম হল লুকোচুরি দরওয়াজা (Lukochuri Gate) — যা আজও গৌড়ের প্রাচীনত্বের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে নীরবে।
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/12/mughal-structure-in-malda-5-2025-10-12-23-11-37.jpg)
চমৎকার স্থাপত্য
লুকোচুরি দরওয়াজা মোগল স্থাপত্যরীতির এক চমৎকার উদাহরণ। এটি ইট ও চুন-সুরকির গাঁথুনিতে নির্মিত তিনতলা বিশিষ্ট আয়তাকার স্থাপত্য। কেন্দ্রীয় প্রবেশপথটি চতুষ্কেন্দ্রিক খিলানযুক্ত ‘ঈওয়ান’ রীতিতে গঠিত, যা মোগল আমলের স্থাপত্যে বিশেষ পরিচিত। দুই পাশের সমান্তরাল খিলান এই গঠনকে দিয়েছে এক সুষম সৌন্দর্য।
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/12/mughal-structure-in-malda-6-2025-10-12-23-12-28.jpg)
নহবতখানা
উচ্চতলার কেন্দ্রীয় খিলানের ওপরে রয়েছে তিনটি বড় জানালা বা মেসিকোলিস, যা একসময় বাদ্যযন্ত্র বাজানোর ঘর বা নহবতখানা হিসেবে ব্যবহৃত হত। এখান থেকেই রাজকীয় আগমন ও প্রস্থানের ঘোষণা করা হত। জানালার ওপরের অলঙ্করণে দেখা যায় মোগল শিল্পের বিখ্যাত মুকারনাস নকশা, যা স্থাপত্যে এক গাম্ভীর্য যোগ করেছে।
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/12/mughal-structure-in-malda-7-2025-10-12-23-13-26.jpg)
ওয়ালির দরগায় যেতেন সুজা
সপ্তদশ শতকে শাহ সুজা ছিলেন বাংলার সুবেদার। তিনি নিয়মিত যেতেন তাঁর পির শাহ নিয়ামতুল্লাহ ওয়ালি-এর দরগায়, যা গৌড়ের দক্ষিণ প্রান্তে ফিরোজপুরে অবস্থিত। এই দরওয়াজাটি মূলত তাঁর সেই যাতায়াতকে সহজ করার উদ্দেশ্যে তৈরি হয়েছিল। ফলে এটি ধর্মীয় ও প্রশাসনিক উভয় উদ্দেশ্যেই ব্যবহৃত হত।
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/12/mughal-structure-in-malda-8-2025-10-12-23-14-22.jpg)
লুকোচুরি নামটা পরে এসেছে
'লুকোচুরি দরওয়াজা' নামটি অবশ্য পরে হয়েছে। মনে করা হয়, পরবর্তী সময়ে স্থানীয় শিশুদের লুকোচুরি খেলার কারণে এই নাম জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। তবে ইতিহাসের দিক থেকে এই নামের মধ্যে লুকিয়ে আছে এক গভীর প্রতীক — গৌড় নগরের রাজনৈতিক উত্থান-পতনের লুকোচুরি। এই দরওয়াজাটি বাংলাদেশ সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থিত। প্রতিদিন বহু দেশি-বিদেশি পর্যটক এই ঐতিহাসিক স্থাপত্য দেখতে আসেন। ভারতের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ (ASI) এর সংরক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে। পর্যটকরা মালদা স্টেশন থেকে অটো বা ট্যাক্সি নিয়ে সহজেই এখানে পৌঁছাতে পারেন।