বায়ুদূষণে বাড়ছে ফুসফুসের ক্যান্সার, সাবধানতা আজ থেকেই

রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৭ সালে ১২.৪ লক্ষ মৃত্যুর অর্ধেকেরও বেশি হয়েছে বায়ু দূষণের কারণে। এর মধ্যে অন্যতম ফুসফুসের সংক্রমণ ও ক্যান্সার। জেনে নেওয়া যাক নিস্তারের উপায়। পরামর্শ দিচ্ছেন ডাঃ দেবাশিস পাল।

রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৭ সালে ১২.৪ লক্ষ মৃত্যুর অর্ধেকেরও বেশি হয়েছে বায়ু দূষণের কারণে। এর মধ্যে অন্যতম ফুসফুসের সংক্রমণ ও ক্যান্সার। জেনে নেওয়া যাক নিস্তারের উপায়। পরামর্শ দিচ্ছেন ডাঃ দেবাশিস পাল।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
daktar boddi

ফুসফুসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে সতর্ক হন আজই।

ন্যাশনাল এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী গত বছর নভেম্বরের মাঝামাঝি কলকাতায় বস্তুকণার (পিএম ২.৫) মাত্রা ঠেকেছিল ৩৮১-তে। বিশেষজ্ঞদের কথায় যাকে "very poor"-এর আওতায় ফেলা হয়ে থাকে। এতদিন পর্যন্ত দিল্লি দূষণের নিরিখে এগিয়ে থাকলেও গত বছরে এ বিষয়ে দিল্লিকে পেছনে ফেলে বেশ খানিকটা এগিয়ে গিয়েছে কলকাতা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বায়ূ দূষণের মাত্রা কমলে এ দেশে গড় আয়ু বাড়ত প্রায় ১.৭ বছর। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৭ সালে ১২.৪ লক্ষ মৃত্যুর অর্ধেকেরও বেশি হয়েছে বায়ু দূষণের কারণে। আর এর মধ্যে অন্যতম ফুসফুসের সংক্রমণ বা ফুসফুস ক্যান্সার। চলুন জেনে নেওয়া যাক এর থেকে নিস্তারের উপায় কী। পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসক দেবাশিস পাল।

Advertisment

বর্তমানে সবচেয়ে বেশি রোগী আসেন অবস্ট্রাক্টিভ এয়ারওয়ে ডিজিজ নিয়ে। এই রোগে শ্বাসনালী ক্ষীণ হতে থাকে। পাশাপাশি দূষণ এবং অন্যান্য কারণে ফুসফুসের আর যে সমস্যা দেখা দিতে পারে তা হল - অ্যাজমা বা হাঁপানি, সিওপিডি (COPD, Chronic Obstructive Pulmonary Disease), ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস, এম্ফিসিমা, লাঙ ক্যান্সার, সিস্ট্রিক, ফাইব্রোসিস, নিউমোনিয়া।

রোগের কারণ কী

এই রোগের পিছনে মূলত দুটো কারণ - অ্যাজমা বা হাঁপানি ও সিওপিডি। অ্যাজমা কিছুটা বংশানুক্রমিক হলেও, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এর জন্য দায়ী অনিয়মিত জীবনযাপন এবং মাত্রাতিরিক্ত দূষণ। সিওপিডি দুর্বুদ্ধি প্রসূত, ধূমপান এবং দূষণ যার অন্যতম কারণ। আর এর থেকেই বাড়ছে ফুসফুসের ক্যান্সারের প্রবণতা।

Advertisment

এক্ষেত্রে মূল সমস্যা হলো, রোগ নির্ণয় করতে দেরি করে ফেলেন রোগী বা তাঁর পরিবার। অর্থাৎ সঠিক সময়ে রোগটা ধরা পড়ছে না, এবং পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডিফিউজ প্যারেনকাইমাল লাং ডিজিজ। এই রোগে ফুসফুস শুকিয়ে যায়। সঠিক চিকিৎসায় বর্তমানে যক্ষ্মা সম্পূর্ণ নির্মূল হওয়া সম্ভব। তবে অচিকিৎসা বা অপচিকিৎসা হলে তার পরিণাম ভয়ঙ্কর হতে পারে।

ফুসফুসের সমস্যা বুঝবেন কীভাবে

শ্বাসকষ্ট ধীরে ধীরে বাড়লে বোঝা কিছুটা সমস্যার। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রোগী এড়িয়ে যান। ঘন ঘন বুকে ব্যথা, সঙ্গে শ্বাসকষ্ট অনুভূত হলে ভাবতে হবে। কাশির সঙ্গে রক্ত পড়া এ ক্ষেত্রে সবসময়ই মারাত্মক উপসর্গ। এই ধরনের যেকোনও সমস্যা দেখা গেলেই তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। শ্বাসনালীতে প্রদাহ হতে থাকলে ধীরে ধীরে ফুসফুস তার কার্যক্ষমতা হারাতে থাকে।

পরীক্ষা কী ধরনের করা হয়

বুকের এক্সরে, ব্রঙ্কোস্কপি, স্পাইরোমেট্রি

সাবধানতা অবলম্বন করুন আজ থেকেই। দূষণ যেভাবে তার প্রভাব বিস্তার করে চলেছে তাতে পুরোপুরি তা এড়িয়ে চলা সম্ভব নয়। তবুও যতটা সম্ভব সাবধানতা অবলম্বন করা দরকার। অনেকদিন ধরে কাশি হলে তা অবহেলা করার নয়। শীতকালে যাঁদের শ্বাসকষ্ট বাড়ে তাঁদের বিশেষ সতর্কতার প্রয়োজন। ধূলোবালি এড়িয়ে চলুন যতটা সম্ভব। ধূমপান বর্জন করুন আজই, নিয়মিত শরীরচর্চা এবং সঠিক খাদ্যাভ্যাস মেনে চলুন।