Maha Shivaratri 2024 History: শুক্রবার মহাশিবরাত্রি। হিন্দুধর্মের সর্বোচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন দেবতা, দেবাদিদেব মহাদেব বা শিবের 'মহারাত্রি'। শিবপুরাণ অনুযায়ী, এই রাতে শিব প্রলয় বা মহাতাণ্ডব নৃত্য করেছিলেন। আবার এই রাতে হয়েছিল শিব-পার্বতীর বিয়ে। স্কন্দপুরাণ, লিঙ্গপুরাণ, পদ্মপুরাণ-সহ বিভিন্ন পুরাণে মহাশিবরাত্রির উল্লেখ আছে। মধ্যযুগীয় শৈব গ্রন্থগুলো থেকেও উপবাস এবং শিবলিঙ্গ পুজোর কথা জানা যায়।
মহাশিবরাত্রি কবে?
ফেব্রুয়ারি অথবা মার্চ মাসে সাধারণত শিবরাত্রির তিথি পড়ে। এবছর, অর্থাৎ ২০২৪ সালে মহাশিবরাত্রি পালিত হবে ৮ মার্চ, ২০২৪ শুক্রবার। এটা ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথি। এই তিথি শুরু হবে ৮ মার্চ, রাত ৯টা ৫৭ মিনিটে। আর, চতুর্দশী তিথির অবসান হবে ৯ মার্চ সন্ধে ৬টা ১৭ মিনিটে।
মহাশিবরাত্রির ইতিহাস
মহাশিবরাত্রির নৃত্যে ঐতিহ্যের শিকড় আছে। কোনারক, খাজুরাহো, পাট্টদাকাল, মোধেরা, চিদাম্বরমের মত প্রধান হিন্দু মন্দিরগুলোয় মহাশিবরাত্রি উপলক্ষে বার্ষিক নৃত্য উৎসব হয়। যে উৎসব শিল্পীদের একটি ঐতিহাসিক মিলন হিসেবে কাজ করে। এর মধ্যে চিদাম্বরম মন্দিরে এই অনুষ্ঠানকে নাট্যাঞ্জলি বলা হয়। যার আক্ষরিক অর্থ, 'নৃত্যের মাধ্যমে উপাসনা'। ভাস্কর্যের মাধ্যমে এই নাট্যশাস্ত্রকে তুলে ধরা আছে বিভিন্ন মন্দিরে। যেখানে শিল্পকলার সাহায্যে প্রাচীন হিন্দুশাস্ত্রের সমস্ত নৃত্য মুদ্রাকে চিত্রিত করা হয়েছে। আবার আলেকজান্ডার কানিংহামের ১৮৬৪ সালের নথি অনুযায়ী, খাজুরাহোর শিব মন্দিরগুলোয় মহা শিবরাত্রিতে একটি প্রধান মেলা এবং নৃত্য উত্সব আয়োজন হত। যেখানে শৈব তীর্থযাত্রীরা মন্দির চত্বরের চারপাশে মাইলজুড়ে শিবির বসাতেন।
মহাশিবরাত্রির তাৎপর্য
বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনিতেও মহা শিবরাত্রির তাৎপর্যের উল্লেখ আছে। কিংবদন্তি অনুসারে, এই রাতেই শিব সৃষ্টি, স্থিতি এবং ধ্বংস বা প্রলয়ের স্বর্গীয় নৃত্য (তাণ্ডব) করেছিলেন। সেই উপলক্ষে ভক্তরা এই রাতে স্তোত্রপাঠ করেন। মন্ত্রজপ করেন। শৈব ধর্মগ্রন্থ পাঠ করেন। সমবেতভাবে ধর্মীয় নাচ ও গান করেন। পাশাপাশি, সর্বত্র শিবের উপস্থিতি স্মরণ করেন। অপর এক কিংবদন্তি অনুসারে, এই রাতেই শিব ও পার্বতীর বিয়ে হয়েছিল। যার নিগুঢ় অর্থ হল শিব তথা আদিপুরুষ ও আদিপ্রকৃতির মিলন। একটি ভিন্ন কিংবদন্তিতে বলা আছে যে শিবের মূর্তির মত লিঙ্গের পুজো হল একটি বার্ষিক আচার। যার মাধ্যমে অতীতের পাপ থেকে মুক্তি মেলে। পুণ্যর পথে চলা পুনরায় শুরু হয়। আর, এর ফলে ভক্তদের কৈলাশ পর্বতে পৌঁছানো এবং মুক্তি লাভ করাও সম্ভব হয়। আবার, মনে করা হয় যে, অন্ধকার আর অজ্ঞতা দূর করার লক্ষ্যেও এই ব্রত পালন করা হয়।