এই ভাদ্রেই সবে মা হয়েছে নাফিসা। ফুটফুটে আসমানির চোখ ফুটেছে সদ্য। খুশিতে টইটুম্বুর ওরা। তার ওপর আলম কথা দিয়েছে অষ্টমীর রাতে মা-মেয়েকে নিয়ে কলকাতার ঠাকুর দেখতে যাবে। যাওয়া- আসার ঝক্কি সামলে আসমানি আর ওর মায়ের আদৌ দুর্গা দর্শন হবে কী না, কে জানে? ওই ভিড়ে ঠিক থাকবে তো ছোট্ট আসমানি? শহরের কিছু বড় বড় পুজো উদ্যোক্তা অবশ্য এবার আশ্বস্ত করেছে নির্বিঘ্নে নাফিসারা ঠাকুর দেখতে পারবে। মণ্ডপের ধারেকাছেই থাকবে স্তন্যদানের আলাদা ঘর। শুধু তাই-ই নয়, মহিলা দর্শনার্থী মহিলাদের জন্য থাকবে শৌচাগার। ঠাকুর দেখতে এলে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে, থাকবে চিকিৎসক। দরকার পড়লেই অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে যাওয়া হবে কাছের কোনও হাসপাতালে।
ঢাকে কাঠি পড়েই গেছে। আকাশে যদিও শরতের চাইতে শ্রাবণ মেঘেরই ঘনঘটা বেশি, তবু দিনের হিসেব বলে দিচ্ছে পুজো আসতে আর মাত্র সপ্তাহ দুয়েক। মহালয়া থেকেই শহরের রাস্তায় নামবে মানুষের ঢল। উত্তর কলকাতার আহিরীটোলা সার্বজনীন, মধ্য কলকাতার চক্রবেরিয়া সার্বজনীন এবং সল্টলেকের এফডি ব্লক, এই তিনটি পুজোকে নিয়ে এই শারদীয়ায় আসছে মহা উৎসব অনলাইন। ফেস্টিভ্যাল এক্সপেরেনশিয়ার পক্ষ থেকে মঙ্গলবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠকের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করা হল ওয়েবসাইট www.mahautsavonline.com। উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন সংগীত শিল্পী রূপম ইসলাম, ফ্যাশন ডিজাইনার শর্বরী দত্তরা।
এই মহা উৎসব অনলাইন আসলে কী? প্রবাসে থাকা বাঙালি, যারা 'আশ্বিনের শারদ প্রাতে' হাজার চাইলেও ঘরে ফিরতে পারেন না, তাঁদের কাছে পুজোর মেজাজটুকু পৌঁছে দিতে চাইছে এই মঞ্চ। সপ্তমী থেকে দশমী কলকাতার নামী তিনটি পুজো সরাসরি সম্প্রচার হবে অনলাইনে। আগে থেকে ওয়েবসাইট মারফত নথিভুক্ত করা থাকলে অনলাইনেই অঞ্জলি দিতে পারবেন সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা মানুষ। উদ্যোক্তাদের আশা, এ বছর তিনটে পুজো দিয়ে শুরু করলেও আগামী দিনে শহরের আরও নামী দামি পুজো জুড়ে যাবে এই মঞ্চের সঙ্গে। আর শুধু শারদোৎসব নয়, ভবিষ্যতে আরও নানা উৎসবকেই মহা উৎসব অনলাইনের আওতায় আনা যাবে বলে আশাবাদী তাঁরা।
কাজের সূত্রে বছর চারেক আগে দেশ ছেড়েছিল অভিষেক। অফিসের সহকর্মী জ্যাকলিনের সঙ্গে ঘর বেঁধে প্যারিসেই রয়েছে ওরা দু'জন। হোয়াটসঅ্যাপে কাশ আর শিউলি দেখিয়ে, ঢাকের শব্দ শুনিয়ে কেটেছে শেষ তিনটে পুজো। এবার অনলাইনে প্রথম অঞ্জলি দেবে জ্যাকলিন। দুর্গা ছিল পাড়ায় পাড়ায়, দুর্গা ছিল সার্বজনীন। এবার দুর্গা বিশ্বজনীন।