ভারতের দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের অন্যতম মধ্যপ্রদেশের মহাকালেশ্বর। সারা বছর অসংখ্য পুণ্যার্থী আসেন উজ্জয়িনীর এই জ্যোতির্লিঙ্গে পুজো দেন। এই মন্দিরের বিশেষত্ব এটা দক্ষিণমুখী। শুধু তাই নয়, মহাকালেশ্বরের মূর্তিটিও দক্ষিণামূর্তি। মন্দিরের মত এখানকার মূর্তিরও একটা বিশেষত্ব রয়েছে। তা হল, মূর্তিতে তান্ত্রিক শিবনেত্র প্রথা রয়েছে। দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের মধ্যে একমাত্র মহাকালেশ্বরের শিবলিঙ্গেরই তান্ত্রিক শিবনেত্র প্রথার চল রয়েছে।
এখানকার ওঙ্কারেশ্বর মহাদেবের মূর্তিটি মহাকাল মন্দিরের গর্ভগৃহের ঠিক ওপরে রয়েছে। এখানকার মন্দিরের গর্ভগৃহের পশ্চিমে রয়েছে গণেশের মূর্তি। উত্তর দিকে রয়েছে পার্বতীর মূর্তি। পূর্ব দিকে রয়েছে কার্তিকের মূর্তি। দক্ষিণে রয়েছে শিবের বাহন নন্দীর মূর্তি। মন্দিরের তৃতীয় তলে আছে নাগচন্দ্রেশ্বর মূর্তি। কেবলমাত্র নাগপঞ্চমীর দিনই তা ভক্তদের দর্শনের জন্য খুলে দেওয়া হয়। এই মন্দিরের মোট পাঁচটি তল রয়েছে। তার মধ্যে একটি রয়েছে ভূগর্ভে। এছাড়াও এই মন্দিরে একটি বিশাল প্রাঙ্গণ রয়েছে। রুদ্রসাগর হ্রদের দিকে প্রাঙ্গণটি প্রাচীর দিয়ে ঘেরা।
আরও পড়ুন- শ্রাবণ মাসে সাদা ফুলেই তুষ্ট মহাদেব, ভগবান শিবের আরাধনায় লাগে বিশেষ কিছু সামগ্রী
এখানে মন্দিরের চূড়া শাস্ত্রে উল্লিখিত পবিত্র বস্ত্র দিয়ে ঢাকা থাকে। ভূগর্ভস্থ কক্ষের পথ পিতলের প্রদীপ দিয়ে আলোকিত থাকে। দেবতাকে এই কক্ষেই ভোগ দেওয়া হয়। এভাবে ভোগের ব্যবস্থা মহাকালেশ্বর মন্দির ছাড়া অন্য কোথাও নেই। শিবভক্তরা বিশ্বাস করেন, ভগবান শিবই হলেন উজ্জয়িনীর শাসক। আর, তিনিই হলেন মহাকালেশ্বর। এই মন্দিরের শিবলিঙ্গকে স্বয়ম্ভূ বা শিবের সাক্ষাৎ মূর্তি বলে মনে করা হয়।
শিবরাত্রির উৎসবে মন্দিরের কাছে বিরাট আকারের মেলা বসে। মহাকালেশ্বর মন্দিরের কাছে স্বপ্নেশ্বর মহাদেবের একটি মন্দির রয়েছে। সেই মন্দিরে শিবভক্তরা পূজা করেন। কথিত আছে, স্বপ্নেশ্বর মহাদেবের মন্দিরে পূজা করলে জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্বপ্নটি অনুধাবন করা যায়। এখানে স্বপ্নেশ্বর শিবের শক্তি স্বপ্নেশ্বরী রূপে বিরাজ করেন। কথিত আছে, মহাকালেশ্বরে শুধু শিবমন্দিরই নয়। এটি একটি সতীপীঠও। এখানে দেবী সতীর ঊর্ধ্ব ওষ্ঠ পড়েছিল বলেই বিশ্বাস ভক্তদের। এখানে দেবী সতীকে মহাকালী রূপে পুজো করা হয়।