মহানবমীর সময়কাল
সোমবার ৫ কার্তিক, ২৩ অক্টোবর মহানবমী। থাকবে দিবা ৩টে ৪ মিনিট পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে
শারদীয়া দুর্গাদেবীর মহানবমীকল্পারম্ভ ও মহানবমীবিহিত পুজো করতে হবে। মহানবমীর মধ্যে দিয়েই সমাপ্ত হবে নবরাত্রি ব্রত।
মহানবমীতে আরাধনা
শাস্ত্র অনুযায়ী, দেবী দুর্গার বন্দনার সমাপ্তি। এই দিনে ভক্তরা দেবীর কাছে বিশেষ প্রার্থনা করেন। যজ্ঞের মাধ্যমে দেবীকে আহুতি দেওয়া হয়। ১০৮টি বেলপাতা, আমকাঠ, ঘি দিয়ে এই যজ্ঞ করা হয়।
মহানবমীর গুরুত্ব
নবদুর্গার নবম তথা শেষ রূপ দেবী সিদ্ধিদাত্রীর। নবমীতে দেবীর এই রূপের উপাসনা করা হয়। এই রূপের উপাসনায় সংসারে সুখ-সমৃদ্ধি আসে। পাশাপাশি সিদ্ধিও প্রাপ্তি হয়। ভগবত পুরাণ অনুযায়ী, স্বয়ং মহাদেব সিদ্ধিদাত্রী রূপে দেবী পার্বতীকে পুজো করেছিলেন। দেবীর এই রূপের কৃপাতেই নাকি মহাদেব সব সিদ্ধি লাভ করেছিলেন।
সিদ্ধিদাত্রীর রূপ
দেবীর বাহন সিংহ। দেবী চতুর্ভুজা। ডান দিকের ওপরের হাতে গদা, আর নীচের হাতে চক্র। বাম দিকে ওপরের হাতে পদ্মফুল আর, নীচের হাতে শঙ্খ। অবশ্য, মার্কণ্ডেয় পুরাণে আছে সিদ্ধিদাত্রী অষ্টভুজা। আর, ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণে শ্রীকৃষ্ণজন্ম খণ্ডে আছে, সিদ্ধিদাত্রী অষ্টাদশভুজা। তবে সিদ্ধিদাত্রীকে চতুর্ভুজা রূপেই বেশী আরাধনা করা হয়।
দেবীকে প্রসন্ন করার প্রচলিত উপায়
এক- দেবী সিদ্ধিদাত্রীকে প্রসন্ন করার জন্য মহানবমীতে জাফরান, চন্দনের আতর আর গাওয়া ঘি-- এই তিন জিনিস মিলিয়ে পানপাতায় স্বস্তিক চিহ্ন আঁকতে হয়। এরপর পান পাতায় সুপুরি রেখে মৌলী সুতো বেঁধে দিতে হয়।
দুই- দেবীকে শৃঙ্গারের জিনিস অর্পণ করতে হয়। পুজোর পর সেই শৃঙ্গারের জিনিস বিবাহিত মহিলাদের মধ্যে বিতরণ করতে হয়। দেবীর চরণে আটটি পদ্মফুল অর্পণ করতে হয়। এর পর লাল রঙের ওড়নায় কিছু কয়েন, মাখানা এবং বাতাসা রেখে ওড়নাটি দেবীর কোলে রেখে দিতে হয়। মনে করা হয়, এতে দেবীর বিশেষ আশীর্বাদ পাওয়া যায়।
তিন- বাড়ির অগ্নিকোণে দেবী দুর্গার নামের প্রদীপ জ্বালাতে হয়। পাশাপাশি দুর্গা সপ্তশতী পাঠ করতে হয়। ভক্তদের দাবি, এতে দেবীর আশীর্বাদে ধন-ধান্যের বৃদ্ধি ঘটে।
আরও পড়ুন- এগিয়ে থাকুন, শুধু দুর্গাপুজোই নয়, জানুন আগামী ৪ বছর মহালয়া থেকে কালীপুজোর দিন-ও
চার- অর্থ সমস্যা থেকে মুক্তিলাভের জন্য গঙ্গাজল দিয়ে দেবীকে স্নান করান। এর পর নিয়ম মেনে দেবীর পুজো করুন ও দুর্গা রক্ষা কবচ পাঠ করুন। নবমী পুজোর সময় হলুদ রঙের কড়ি ও শঙ্খের পুজো করাও বিশেষ ফলদায়ী বলে মনে করা হয়। ভক্তদের বিশ্বাস, এতে দেবী লক্ষ্মী প্রসন্ন হন ও সমস্ত আর্থিক সমস্যা থেকে মুক্তি দেন।