/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2023/05/Durga_Puja.jpg)
হুগলি জেলার চুঁচুড়ার ধরমপুর। এখানে জামাইষষ্ঠীর দিন থেকে শুরু হয়েছে চারদিনের দেবী মহিষমর্দ্দিনীর পুজো। এখানে দেবীকে বাড়ির কন্যা বলেই মনে করা হয়। সেই জন্য জামাইষষ্ঠীর দিন থেকে পুজো করা হয়। এই রীতি কমপক্ষে ৩৫০ বছর ধরে। একাংশের দাবি, এই পুজোর বয়স ৬০০ বছর। দেবীর নামে জায়গাটির নাম মহিষমর্দ্দিনী তলা।
আগে এখানে একটি ছোট্ট মন্দির ছিল। সেখানেই দেবীর পুজো হত। ২০১৮ সালে সেখানেই তৈরি হয়েছে নাটমন্দির। এখানে দেবী মহিষমর্দ্দিনী দশভুজা। তিনি মহিষাসুর নিধনরতা। দেবীর ডানদিকে রয়েছে শিব। বামদিকে রয়েছে গণপতি। এই প্রতিমার একটি রেপ্লিকা মণ্ডপে সারাবছর থাকে। দেবী মহিষমর্দ্দিনীর প্রতিমার একটু দূরে ডানদিকে থাকে হনুমানজির প্রতিমা।
কথিত আছে বাংলায় বৌদ্ধধর্মের প্রভাব শিথিল হওয়ার পর এখানে শুরু হয়েছিল হিন্দু দেবতা ধর্মঠাকুরের পুজো। সেই থেকে এই জায়গার নাম ধরমপুর। তারপর শাক্ত সাধনার প্রভাবে এখানকার বাসিন্দারা শক্তিসাধনায় আগ্রহী হয়ে ওঠেন। সেই সময় এই পুজোর প্রচলন হয়। বর্তমানে প্রতিমার নিরঞ্জন হয় গঙ্গায়। আগে তা হয় স্থানীয় ময়রা পুকুরে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সারাবছর সেই ময়রা পুকুর শুকনো থাকলেও দশমীর দিন তা নিজে থেকেই ভরে যেত। আজও এখানে দেবীর ঘট বিসর্জন হয় ময়রা পুকুরেই। আগে এখানে মহিষ বলি হত। পরে হত ফল বলি। দেবীর স্বপ্নাদেশে এখন এখানে কোনও বলি হয় না।
চুঁচুড়া শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে ছিল সপ্তগ্রাম বন্দর। যা বর্তমানে আদি সপ্তগ্রাম নামে পরিচিত। সেখান থেকেই সরস্বতী নদী পেরিয়ে একদল মৎস্যজীবী এবং কুমোর সম্প্রদায়ের মানুষ ধরমপুরের এসেছিলেন বসবাস করতে। কথিত আছে, তাঁদের হাত ধরেই শুরু হয়েছিল দেবী মহিষমর্দ্দিনীর পুজো। এখানে অষ্টমীর দিনই হয় অঞ্জলি দেওয়া, দণ্ডী কাটা, ধুনো পোড়ানো। দশমীর রাতে দেবীকে গঙ্গার ঘাটের দিকে নিরঞ্জনের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। পুজো উপলক্ষে এখানে মেলাও বসে।
আরও পড়ুন- জাগ্রত দেবী ভীমাকালী, দেবী যেখানে কান পেতে শোনেন ভক্তের মনের কথা
এখানে যেতে গেলে হাওড়া মেইন লাইনের ট্রেনে চেপে চুঁচুড়া স্টেশনে নেমে অটো বা বাস ধরে ধরমপুর স্টপেজে নামতে হবে। অথবা টোটো ধরে মহিষমর্দ্দিনী তলায় নামতে হয়। আবার নৈহাটি থেকে লঞ্চঘাট পেরিয়ে অটো বা বাস ধরে ধরমপুর স্টপেজ বা টোটো ধরে মহিষমর্দ্দিনী তলায় যাওয়া যায়।