বছর শেষের সূর্যটা অস্ত গিয়ে নতুন সূর্য উঠেছে। দেখতে দেখতে কেটে গেল একটা গোটা বছর। আরও খানিকটা বুড়ো হল পৃথিবী। অনেক যুগান্তকারী বদলের সাক্ষী থাকল আমাদের বাংলাও। শেষ একটা মাস জুড়েই অবশ্য অন্ধকার ঘনিয়েছে একটু একটু করে। তার মধ্যেই চলছে আলোয় ফেরার চেষ্টা। আজ অন্ধকারের কথা থাক। শেষ বছরটায় আর কী কী বদলাল দেখে নেওয়া যাক।
সব বদলে যাওয়ার কেন্দ্রে থেকেছে প্রযুক্তি। আরও স্পষ্ট করে বললে ইন্টারনেট, হাতের মুঠোয় গোটা দুনিয়াকে পেয়ে যাওয়ার প্রযুক্তি।
নেটফ্লিক্স আর ওয়েবসিরিজ
বোকাবাক্সে আটকে থাকা সন্ধেগুলো বদলে গেছে অফিস যাওয়া-আসার পথে হেডফোন কানে গোঁজা সকাল-বিকেল-রাতে। ছুটির দিনের অলস দুপুরে টিভিতে সিনেমা দেখা, সকাল বিকেল পাড়ায় পাড়ায় হারমোনিয়ামে গলা সাধার পরপরই সান্ধ্য সিরিয়াল দেখা কমেছে। জীবন এখন মজেছে নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন, হইচইয়ে।
আরও পড়ুন, চেনা বড়দিন, অচেনা শহর…কেমন আছে কলকাতা?
হোয়াটস অ্যাপে ভিডিওকল আর মুঠোফোনে যত খুশি আড্ডা গল্প
সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট বাঙালির জীবন ছেয়ে গিয়েছিল এক দশকের আগেই। দু’-এর দশকে এল হোয়াটসঅ্যাপ। পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তের যে কোনও মানুষের কাছে পৌঁছতে সময় লাগে কয়েক সেকেন্ড। ফোনে বাড়তি টাকা না ভরালেও এই অ্যাপ কাছাকাছি এনে দেয় দুর্গাপুরের মা আর তাঁর ডাবলিনে বসা মেয়েকে। সমমনস্কদের ভাবনা বিনিময়ের জন্যেও মঞ্চ তৈরি করেছে এই অ্যাপ। যদিও অনেকের মত, ভার্চুয়াল দুনিয়ায় এভাবে বেঁধে বেঁধে থাকা যায় না।
অনলাইন ফুড ডেলিভারি আর ক্যাফে সংস্কৃতি
এই দশক কলকাতা আর মফঃস্বলের চরিত্র বদলাতে দেখেছে। স্বপরিবারে ছুটির দিন কাটাতে এখন রেস্তোরাঁয় কম যায় বাঙালি। তার জায়গায় এসেছে অনলাইন ফুড ডেলিভারি অ্যাপ। বিশেষ অনুষ্ঠান থেকে, নিছকই পারিবারিক আড্ডায় এখন ভোজনরসিক নটুবাবুরা এখন বাজারের থলের আগে হাতে তুলে নেন মোবাইল ফোন। মধ্যবিত্তের আড্ডা বদলেছে, মেজাজ বলেছে, আড্ডার ভাষা বদলেছে, বদলেছে আড্ডার জায়গাও। ঝাঁ চকচকে রঙিন ক্যাফেতে ছয়লাপ শহর কলকাতা, আশেপাশের আধা শহরগুলো। ভেতরে ঢুকলেই কফি বিনের গন্ধ, অধিকাংশ ক্ষেত্রে আবহে পশ্চিমী জ্যাজ, পপ অথবা রক। পাল্টানো সময়ে এই ক্যাফেরাই ধরে রেখেছে বন্ধুত্ব, প্রেম পরিণয়ের হয়ে ওঠা, বিচ্ছেদ।