ভারতের দ্বিতীয় জ্যোতির্লিঙ্গ রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীশৈলমে। এখানকার মল্লিকার্জুন জ্যোতির্লিঙ্গ অত্যন্ত জাগ্রত বলেই ভক্তদের বিশ্বাস। শিব ভক্তদের কাছে জ্যোতির্লিঙ্গ হল সর্বোচ্চ অনন্ত সত্য। যেখানে শিব আবির্ভূত হয়েছিলেন জ্যোতির্ময় রূপে। প্রথমদিকে মনে করা হত জ্যোতির্লিঙ্গের সংখ্যা ৬৪। পরে, শিব ভক্তরা ১২টি মন্দিরের শিবলিঙ্গকে জ্যোতির্লিঙ্গ বলে দাবি করেছেন। এই প্রতিটি জ্যোতির্লিঙ্গের আলাদা নাম রয়েছে। তবে, শুধু জ্যোতির্লিঙ্গ হিসেবেই নয়।
পুরাণের শ্রীশৈলমের মল্লিকার্জুন মন্দির ১৮টি মহাশক্তিপীঠেরও অন্যতম। কথিত আছে, এখানে সতীর ওপরোষ্ঠ পড়েছিল। এখানের শিবমন্দিরটি পূর্বমুখী। এর মূল মণ্ডপে অনেকগুলো স্তম্ভ রয়েছে। পাশাপাশি, নন্দী বা নন্দীকেশ্বরের বিরাট মূর্তি রয়েছে। সারা বছর দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু ভক্ত আসেন এই মন্দিরে নিজের মনস্কামনা পূরণের প্রার্থনা জানাতে। তবে, অন্যান্য শিব মন্দিরের মতই শিবচর্তুদর্শী বা শিবরাত্রির দিন এই মন্দিরে ব্যাপক ভক্ত সমাগম হয়।
শ্রীশৈলমের শিবমন্দির তৈরির পিছনে রয়েছে এক পৌরাণিক কাহিনি। কথিত আছে, শিব এবং পার্বতী তাঁদের দুই ছেলে গণেশ ও কার্তিকের জন্য উপযুক্ত পাত্রীর সন্ধান করছিলেন। সেই সময় কার্তিক নাকি তর্ক জুড়েছিলেন, কে আগে বিয়ে করবেন, সেই ব্যাপারে। শিব তখন জানিয়েছিলেন, যে আগে বিশ্ব প্রদক্ষিণ করে আসতে পারবে, তারই আগে বিয়ে হবে। কার্তিক তাঁর বাহন ময়ূরে চেপে বিশ্ব প্রদক্ষিণে বেরিয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু, গণেশ সেসব না-করে শুধু শিব-পার্বতীকেই সাতবার প্রদক্ষিণ করেছিলেন। কারণ, শাস্ত্রমতে নিজের মা-বাবাকে প্রদক্ষিণ করলেই বিশ্ব প্রদক্ষিণ হয়ে যায়।
আরও পড়ুন- দ্বাদশের মধ্যে প্রথমে নাম আসে এই জ্যোতির্লিঙ্গের, এখানেই অভিশাপ থেকে মুক্ত হয়েছিলেন চন্দ্র
শিব এই কারণে বুদ্ধি, ঋদ্ধি ও সিদ্ধির সঙ্গে গণেশের বিয়ে দিয়েছিলেন। ফিরে এসে সেসব দেখে ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন কার্তিক। তিনি কুমার এবং ব্রহ্মচারী হিসেবে থাকার জন্য ক্রৌঞ্চ পর্বতে চলে যান। ছেলেকে ফিরিয়ে নিতে শিব এবং পার্বতীও সেখানে যান। কিন্তু, কার্তিক ফিরতে রাজি হননি। তখন শিব ও পার্বতী কাছাকাছি এক স্থানে থাকা শুরু করেন। যেখান থেকে শিব প্রতি অমাবস্যা এবং পার্বতী প্রতি পূর্ণিমায় গিয়ে কার্তিককে দেখে আসতেন। যে জায়গায় শিব ও পার্বতী ছিলেন, সেই জায়গাই পরিচিত হয় শ্রীশৈলম নামে।