Mamata Chankya Shahjahan: সন্দেশখালি-কাণ্ডে বর্তমানে উত্তাল বাংলার রাজনীতি। তার আঁচ পড়েছে দিল্লিতেও। এই কাণ্ডে উত্তপ্ত পরিবেশের মধ্যেই রাজ্যে আসার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। যা স্পষ্ট করে দিচ্ছে, সর্বভারতীয় রাজনীতিতে সন্দেশখালি ঠিক কতটা আঁচ ফেলেছে।
আর, এটা যেন হওয়ারই ছিল। দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত মানুষ তাঁর অধিকারের দাবিতে সরব। মুখ ফুটে কিছু বলার জায়গায় তাঁরা ছিলেন না। এক আতঙ্ক তাঁদের তাড়া করে বেড়িয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে সুযোগ পেতেই বিক্ষোভকারীরা সরব হয়ে উঠেছেন। এটা বুঝতে আর কারও বাকি নেই। ইতিমধ্যেই পরিস্থিতি বুঝে প্রশাসনও আগের অবস্থান থেকে অনেক নরম হয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী, ব্যবস্থাও নিতে শুরু করেছে।
আর, এক্ষেত্রেই যে প্রশ্নটা বারবার করে উঠে আসছে তা হল- এতদিন ধরে এসব প্রশাসনের নাকের ডগায় চলল কী করে? রাজ্যের শাসক দলের অবশ্য বক্তব্য অনেকটাই সাজানো। যা উসকানির জেরে বর্তমান চেহারা নিয়েছে। এনিয়ে যখন মানুষের ধন্দ চূড়ান্ত তখন একটা কথা প্রশাসনকে মাথায় রাখতেই হবে। তা হল- ব্রহ্মহাপি নরঃ পূজ্যো, যস্যাস্তি বিপুলং ধনম্। শশিনং সমবংশোহপি নির্ধনঃ পরিভূয়তে।
যার অর্থ করলে দাঁড়ায়, যত উপদেশই আমরা পাই না কেন, সমাজ কিন্তু ঐশ্বর্যশালী ব্যক্তিদেরই দাসত্ব করে বেড়ায়। বিপুল অর্থের অধিকারী কোনও ব্যক্তি যদি কাউকে হত্যাও করেন, তাকে কিন্তু সমাজ ক্ষমা করে দেয়। অর্থের প্রাচুর্যে ওই অপরাধী ব্যক্তি মুক্তি পেয়ে যায়। তার অপরাধ চাপা পড়ে যায়। কারণ, মুখে যে যাই বলুক- বাস্তব জগতে দরিদ্র ব্যক্তির কোনও সম্মান নেই। যদি সেই ব্যক্তি সৎ এবং চরিত্রবানও হয়, তবুও তিনি যোগ্য সম্মান পান না। হাজারো গুণের অধিকারী হয়েও তিনি যদি নির্ধন থাকেন, তবে যেন সমাজে তাঁর কোনও মূল্যই নেই।
আরও পড়ুন- জীবন সমস্যায় জর্জরিত! কাটাতে যে উপায় আপনার হাতের নাগালেই
একথা যে সে লোক বলেননি। যিনি বলেছেন, তিনি হলেন ভারতীয় রাজনীতির কিংবদন্তি কৌটিল্য চাণক্য। চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যকে প্রায় রাস্তা থেকে তুলে এলে মগধের সিংহাসনে বসিয়েছিলেন তিনি। আর, এই বিস্তীর্ণ পথ অতিক্রম করতে গিয়ে কৌটিল্য দেখেছেন জীবনটা ঠিক কী! সমাজে কীভাবে ধনীরা অপরাধ করেও বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়ায়। আর, দরিদ্রদের সেখানে কোনও সম্মানই নেই। আর, এই সব কারণেই যেন বাড়ছে সন্দেশখালির মত ঘটনা। এরাজ্য তো বটেই, হাজারো চেষ্টার পরও দেশজুড়ে বাড়ছে অপরাধের সংখ্যা।