মনের কোণে দাগ কেটেছেন তিনি। আর তাই 'কোন্নগরের কনে'-কে খুঁজতে তৈরি হল ৬ মিনিট ২৩ সেকেন্ডের শর্ট ফিল্ম, স্টেশন চত্তরে পড়ল ৪,০০০ পোস্টার। আপাতত কোন্নগর থেকে বালি-হাওড়া শাখার ওই স্টেশনগুলিতে নামলেই চোখে পড়বে একটি শর্ট ফিল্মের পোস্টার, নাম কোন্নগরের কনে। তবে এই শর্ট ফিল্মের পোস্টারের আড়ালেই লুকিয়ে আছে এক বাস্তব কাহিনি।
গত ২৩ জুলাইয়ের ঘটনা। বর্ধমান লোকালে তারাপীঠ থেকে ফিরছিলেন গল্পের নায়ক বিশ্বজিৎ পোদ্দার। এদিন ট্রেন ছাড়ার খানিক আগেই বাবা-মায়ের সঙ্গে এক তরুণী এসে বসেন বিশ্বজিতের উল্টোদিকের সিটে। মেয়েটির সঙ্গে চোখাচোখি হয় বিশ্বজিতের। এরপর তারাপীঠ থেকে বর্ধমান, গোটা যাত্রাপথ এভাবেই চলে চোখাচোখি। ট্রেন বর্ধমান পৌঁছালে বেহালার বাসিন্দা বিশ্বজিৎ ট্রেন পাল্টে হাওড়াগামী একটি ট্রেনে ওঠেন। এখানেই শেষ হয়নি গল্প, বরং পাল্টা মোড় নেয়, কারণ ফের সেই ট্রেনেই আবারও উল্টোদিকের আসনে এসে বসেন ওই একই পরিবার। বিশ্বজিৎ এবার ফোন নম্বরও নেওয়ার চেষ্টা করেন ওই তরুণীর থেকে, তবে সে নম্বর বললেও কোনও কারণে শুনতে পাননি বিশ্বজিৎ। আর তারপর রাতের ঘুম উড়েছে বছর উনত্রিশের রাজ্য সরকার কর্মী বিশ্বজিৎ পোদ্দারের।
আরও পড়ুন: ‘আপত্তিজনক’ পদবী থাকায় মহিলার অ্যাকাউন্ট খুলতে নারাজ ওয়েবসাইট
এরপরেই সেই তরুণীকে খুঁজতে শুরু করেন বিশ্বজিৎ। জানান, ওই পরিবারের কথোপোকথনে মনে হয়েছিল এখানেই আশেপাশে থাকেন তাঁরা। এদিন কোন্নগর স্টেশনেই নেমেছিলেন তাঁরা। কাজেই সেদিন যে পোশাক পরে ওই তরুণীকে দেখেছিলেন বিশ্বজিৎ, সেই একই লাল-কালো-সবুজ ডোরা কাটা টি-শার্ট আর সঙ্গে থাকা কালো পিঠব্যাগ কাঁধে ঝুলিয়ে ছবি তোলেন। বন্ধুরা বিশ্বজিতের এই চেষ্টাকে আরও এক ধাপ এগিয়ে দেন। গোটা গল্পটা নিয়ে একটা ছবি বানানোর পরামর্শ দেন তাঁরা।
এরপরই তৈরি হয় সেই ট্রেনের গল্প নিয়ে স্বল্প দৈর্ঘের ছবি, 'কোন্নগরের কনে'। ১৪ অগাস্ট ইউটিউবে আপলোডও করা হয় সেই শর্ট ফিল্ম। তারপর, সেই ছবির পোস্টার ছাপিয়ে কোন্নগর থেকে বালি, সমস্ত স্টেশনে লাগিয়ে দেন বিশ্বজিত। পোস্টারের তলায় নিজের ফোন নম্বরও দিয়ে রেখেছেন তিনি। তবে ইতিমধ্যেই দু’সপ্তাহের বেশি সময় কেটে গিয়েছে। এখনও বিশ্বজিতের ফোনে সেই তরুণীর ফোন আসেনি। কিন্তু হাল ছাড়তে রাজি নন তিনি। বিশ্বজিতের বিশ্বাস, এই পোস্টার তরুণীর চোখে পড়বেই, এবং যোগাযোগও করবেন তিনি।