'গর্বিত বাঙাল' কলকাতার দ্যুতি! মাস্টারশেফের মঞ্চে পদ্মাপাড়ের খাবার রেঁধে তাক লাগালেন বঙ্গকন্যা: MasterChef India dyuti Banerjee Bengali girl special edition bangal dishes | Indian Express Bangla

‘গর্বিত বাঙাল’ কলকাতার দ্যুতি! মাস্টারশেফের মঞ্চে পদ্মাপাড়ের খাবার রেঁধে তাক লাগালেন বঙ্গকন্যা

নিজের রান্নাকে অন্য মাত্রায় পৌঁছে দিতে চান দ্যুতি

Dyuti Banerjee, MasterChef India
নিজের সত্বাকে সঙ্গে নিয়েই খাবারকে অন্যমাত্রা দেওয়ার এক সুন্দর যাত্রা শুরু করেছেন দ্যুতি বন্দোপাধ্যায়।

খাবার সবসময় এমন হওয়া উচিত, যা মানুষের মনের কাছের হয়। শুধু যে দেখতে সুন্দর হলেই হয়ে গেল একেবারেই না। বরং মনের কাছের হতে হবে খাবার, তাঁর সঙ্গে যেন জড়িয়ে থাকে স্মৃতি। নিজের সত্বাকে সঙ্গে নিয়েই খাবারকে অন্যমাত্রা দেওয়ার এক সুন্দর যাত্রা শুরু করেছেন দ্যুতি বন্দোপাধ্যায়। মাস্টারশেফ ইন্ডিয়ার এক পরিচিত মুখ তিনি। নিজেকে ‘আর্টিস্ট অফ ফ্লেভার’ বলেই পরিচয় দিতে বেশি পছন্দ করেন।

মাস্টারশেফ ইন্ডিয়ায় ফ্যানা ভাতের ফিউশন বানিয়েই তাক লাগিয়েছেন কলকাতার দ্যুতি। অত্যন্ত সাধারণ একটি রান্নাকে কীভাবে অসাধারণ বানানো যায় তার ব্যাখ্যা দিতেই জাতীয় স্তরে পাড়ি দিয়েছেন তিনি। উদ্দেশ্য বাংলার খাবার তথা বাঙাল খাবারকে আন্তর্জাতিক স্তরে পৌঁছে দেওয়া। তাঁর কথায়, বাঙাল খাবারের কী মারাত্মক ব্যাপ্তি! কত সহজে একে নানান মশলার সঙ্গে মিশিয়ে অন্যধরনের রেসিপি তৈরি করা যায়। দ্যুতি নিজেকে নিয়ে যে কতটা গর্বিত, সেই কথা মাস্টারশেফের মঞ্চে নিজেই জানিয়েছিলেন।

মাস্টারশেফ ইন্ডিয়ায় দ্যুতি বন্দ্যোপাধ্যায়।

‘হম কাঠ বাঙাল হ্যায়’.. এই একটা কথাই তাঁর পরিচিতি অনেকটা বদলে দিয়েছে। জাতীয় স্তরের মঞ্চে নিজেকে বাঙাল হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন বঙ্গ তনয়া, আর তাতেই আনন্দে ফুটছেন ওপার বাংলার বেশিরভাগ। কথায় বলে বাঙালদের রান্না মানেই ঝালে-ঝোলে আর অম্বলে। বারবার যেন সেই বিষয়টাই তুলে ধরছেন দ্যুতি। তিনি বললেন, “আমি হাতের কাছে যা পেয়েছিলাম সেই দিয়েই রেসিপিটি রান্না করি। গন্ধরাজ পাতা থেকে থাই বর্জাই চিলী সবই ছিল। কিন্তু, হঠাৎ বাঙাল রান্না কেন? খোসা বাটা, পাতা বাটার প্রতি ঝোঁক কেন এত বেশি? এপ্রসঙ্গে দ্যুতির বক্তব্য, আমাদের বাঙালদের রান্না খুব পিছিয়ে পড়ছে। এর ভবিষ্যত খুব অন্ধকার। কেউ না যদি নিজেদের খাদ্য সংস্কৃতি নিয়ে এগিয়ে যায় তাহলে খুব মুশকিল”।

তবে প্রশ্ন এখানেই, বাঙাল খাবারকে আন্তর্জাতিক স্তরে পৌঁছে দেওয়ার নেপথ্যে যে মানুষটি তিনি হলেন, কিশওয়ার চৌধুরী। মাস্টারশেফ অস্টেলিয়ার মঞ্চে পান্তা ভাত থেকে বেগুন পোড়া, কিছুই বাদ দেননি তিনি। তাহলে কি তাকেই অনুসরণ করতে চলেছেন দ্যুতি? একগাল হেসে তিনি বললেন, “অবশ্যই। আমি তো ওকে নিয়ে খুব গর্বিত। সত্যি কথা বলতে গেলে আমি পুনরায় এই বিষয়টাকে তৈরি করতে চাই তবে নতুন ভাবে। আমি আমার টেস্ট নিয়ে খুব সাবলীলভাবে কাজ করতে চাই। বাংলার কুইজিনের একটা বৈশিষ্ট্য আছে। সেটা নিয়ে পড়াশোনা করা, জানা খুব দরকার। কিশওয়ারকে যখন দেখি তখন সত্যিই দারুণ কিছু অনুভব করেছিলাম”।

হাতে ধরে রান্না শেখায়নি কেউ। দাদুর থেকেই প্রথম অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন। শুধু যে বাঙাল খাবারই পছন্দ তাঁদের এমন নয়। বরং, কেক বানাতেও সমান পারদর্শী তিনি। কাঠবাঙাল হয়েও মিষ্টি না হলে একেবারেই চলে না তাঁর। কখনও কখনও মিষ্টি দিয়েই ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ সেরে ফেলেন। সামনেই পৌষ মাস, নলেন গুড়ের নানান পদ চোখের সামনে। দ্যুতির কথায়, “মিষ্টি আমার খুব প্রিয়। আমি মিষ্টি খেতে ভালবাসি। আমার মা মিষ্টি খেতে ভালবাসেন।”

কিন্তু রান্নার যে এই প্যাশন সেটা কবে থেকে? রান্না করাটা একটা আর্ট। এটি বংশপরম্পরায় অনেকের মধ্যেই আসে। তবে, দ্যুতির এই প্যাশন শুরু হয়েছিল ২০২০ সালে কোভিডের সময় থেকে। রান্না করতে শুরু করেন। শুধু তাই নয়, এইসময় নিজের অসুস্থতার কারণে বেশ কিছুদিন ছুটি নিতে হয়। পরে অফিস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাক বিতণ্ডা তাকে বাধ্য করে নিজের তরফে কিছু শুরু করতে। সেই থেকেই দিনের পর দিন রান্নার সঙ্গে একটু একটু করে মিশে গিয়েছেন, আবার অন্যদিকে তাঁর রান্না চেটেপুটে সাফাই করেছেন অনেকেই।

তবে, মাস্টারশেফে ভাগ নেওয়ার বিষয়টা একেবারেই কাকতালীয়। তাঁকে ডেকে নেওয়া হয় অডিশনের জন্য। ‘নিলি নিলি অম্বর পোলাও’, অর্থাৎ অপরাজিতা ফুল দিয়ে বানানো এই তাক লাগানো ডিশ বাজিমাত করে দিয়েছে মাস্টারশেফের অডিশন  মঞ্চ। খোসা বাটা হোক অথবা, শুকনো লঙ্কা ফোঁড়ন দিয়ে পটলের নিত্যনতুন রেসিপি, আগামী দিনে দ্যুতি তৈরি নিজের মশলার জাদু দেখাতে।

Stay updated with the latest news headlines and all the latest Lifestyle news download Indian Express Bengali App.

Web Title: Masterchef india dyuti banerjee bengali girl special edition bangal dishes

Next Story
যে কোনও সমস্যা থেকে মুক্তির পথ, ভক্তদের ভরসা বড়বাজারের পঞ্চমুখী হনুমান মন্দির