সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে, দাঁড়িয়ে খাওয়ার থেকে বসে খাওয়া অনেক বেশি কার্যকর। বসে নিয়ে তবে খাবার খেলে তা পাচনে সাহায্য করে। জার্নাল অব কনজিউমার রিসার্চে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে সেরকমটাই।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক দীপায়ন বিশ্বাস তাঁর গবেষণায় দেখিয়েছেন মাধ্যাকর্ষণের ফলে রক্ত শরীরের নীচের দিকে নামতে শুরু করে। স্বাভাবিক ভাবেই দেহের ওপরের অংশে রক্ত সরবরাহ করতে রীতিমত বেগ পেতে হয় হৃদযন্ত্রকে। ফলত, হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়।
তার ফলে হাইপো থ্যালামিক পিটুইটারি অ্যাড্রিনাল অতি সক্রিয় হয়ে ওঠায় স্ট্রেস হরমোন নিঃসরণের হার বেড়ে যায়। তার ফলে খাবারের স্বাদ, তাপমাত্রা, খাদ্য গ্রহণের পরিমাণও প্রভাবিত হয়।
শরীরে কোনোরকম অস্বস্তি হলে খাবার তুলনামূলক ভাবে কম সুস্বাদু লাগে। ৩৫০ জন অংশগ্রহণকারীকে নিয়ে সমীক্ষা চালিয়ে এই সিদ্ধান্তে এসেছেন অধ্যাপক দীপায়ন বিশ্বাস। যারা দাঁড়িয়ে খাবার খেয়েছেন, তাঁরা খাবারের স্বাদের ব্যাপারে তুলনামূলক কম রেটিং দিয়েছেন। আর যারা গদিযুক্ত চেয়ারে বসে খেয়েছেন, খাবারের স্বাদের ব্যাপারে তাঁরা বেশি রেটিং দিয়েছেন।
আরও পড়ুন, ধূমপান ছাড়ুন আয়ুর্বেদিক উপায়ে
মজার ব্যাপার, দাঁড়িয়ে খেলে খাবারের স্বাদ সঠিক পাওয়াই যায় না, বলছে গবেষণা। শহরের বেকারিতে তৈরি হয়া লোভনীয় পুডিং-এর স্বাদও যেমন তাঁরা পাননি, আবার একই ভাবে পুডিং কে বিস্বাদ করার জন্য প্রচুর পরিমাণে লবণ দিয়ে তা খাওয়ানো হলে ফল হয়েছে একেবারে উল্টো। যারা বসে, আরাম করে খেলেন, তাঁরা তেমন কোনও স্বাদের ফারাক বুঝতে পারলেন না।
অধ্যাপক বিশ্বাস জানিয়েছেন, "অভিভাবকেরা যদি স্বাস্থ্যকর অথচ তেমন সুস্বাদু নয়, এমন খাবার তাঁদের সন্তানদের খাওয়াতে চাইলে দাঁড় করিয়ে খাওয়ান। তেঁতো ওষুধ গেলাতে হলেও বাচ্চাকে দাঁড় করিয়ে খাওয়ান"।
একই গবেষণায় স্পষ্টই ধরা পড়েছে, খাবারের তাপমাত্রার ফারাক বোধ তেমন প্রখর হয় না দাঁড়িয়ে থাকলে। যারা দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় খাচ্ছেন, তারা তুলনামুলক ভাবে কম জল পান করেন। স্ট্রেসের ফলে খিদে কমে যায় এদের। কাজেই ওজন কমানোর প্রয়োজন হলে দারড়িয়ে খাওয়াই কাম্য, এতে কম খাবার খাওয়া হয়।
Read the full story in English