/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2018/11/megh-2-759.jpg)
জাতীয় মানবাধিকার সংগঠনের চিফ পেট্রন পদের সার্টিফিকেট হাতে মেঘ সায়ন্তন ঘোষ। ছবি সৌজন্যে, মেঘ সায়ন্তন ঘোষ।
একসময় তাঁকে সমাজ টিটকিরি দিত, ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করত। তাঁর বেশভূষা দেখে "হাঁ করে তাকিয়ে থাকত।" সমাজের সেই দৃষ্টির সামনে তিনি লজ্জায় মুখ লুকোন নি। বরং বুক চিতিয়ে নিজের মতো করে দাঁতে দাঁত চেপে লড়েছেন। যে লড়াইয়ে আবারও জয়ী হলেন মেঘ সায়ন্তন ঘোষ। দেশের প্রথম রূপান্তরকামী আইনজীবী হিসেবে মামলা জিতে আগেই নজির সৃষ্টি করেছেন তিনি। এবার প্রথম রূপান্তরকামী হিসেবে জাতীয় মানবাধিকার সংগঠনের এ রাজ্যের চিফ পেট্রন বা প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে নিযুক্ত হলেন মেঘ। যে সাফল্যকে "বড় জয়" হিসেবেই দেখছেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে মেঘ বললেন, "এটা আমার জীবনের বড় জয়। তবে এটা আমার কাজের জয়। কাজ করেছি বলেই এই জয় পেলাম। এই সম্মান পাওয়ার পর অনেক কাজ করতে পারব আরও। সামাজিক কাজ করার ক্ষেত্রে পথটা অনেকটাই সহজ হবে। অনেকেই ভাল কাজ করার জন্য আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তাঁদের নিয়ে সকলে মিলে কাজ করতে চাই।"
কীভাব এল এই প্রস্তাব? জবাবে মেঘ বললেন, "আসলে ছ'মাস আগেই ওঁরা আমায় চিফ পেট্রন পদের প্রস্তাব দেন। তবে প্রথমে ওঁরা কেমন কাজ করেন, সেটা দেখতে চেয়েছিলাম। দেখলাম, ওঁরা খুব ভাল ভাল সামাজিক কাজ করছেন।শুধু রূপান্তরকামীদের জন্য নয়, সমাজের সমস্ত প্রান্তিক মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। সেই ভাবনা থেকেই ওঁদের প্রস্তাবে সায় দিলাম।"
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2018/11/megh-4-759.jpg)
আরও পড়ুন: পুজোর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর থেকে সফল আইনজীবী, বিজয়ী রূপান্তরকামী মেঘ সায়ন্তন ঘোষ
জাতীয় মানবাধিকার সংগঠনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আপাতত দুটি কাজে ঝাঁপিয়ে পড়তে চান দেশের প্রথম রূপান্তরকামী আইনজীবী। এ প্রসঙ্গে মেঘ বললেন, "চিত্রাঙ্গদা বলে একটা প্রকল্প শুরু করছি আগামী বছর থেকে। যে প্রকল্পে স্কুল স্তরে তৃতীয় লিঙ্গ নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর কাজ করা হবে। আমিই প্রকল্পের নাম রেখেছি 'চিত্রাঙ্গদা'। ইচ্ছে আছে এ রাজ্যের স্কুলের পাঠক্রমে যাতে তৃতীয় লিঙ্গ নিয়ে পড়ানো হয়, সে আর্জি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠাব।" একইসঙ্গে মেঘ বললেন, "রূপান্তরকামীদের জন্য আলাদা শৌচালয় গড়তে চাই। প্রথমে কলকাতায় উদ্যোগ নেব। প্রতিটি ওয়ার্ডে যেন একটা করে রূপান্তরকামীদের জন্য শৌচালয় বানানো হয়। এটা খুবই জরুরি।"
তিনি স্বীকৃতি পেয়েছেন ঠিকই, কিন্তু তাঁর কথায়, "আমার বিশ্বাস, আগামী দিনে রূপান্তরকামীরা আরও অনেক স্বীকৃতি পাবেন। আগামী দিনে রূপান্তরকামীদের আরও ভাল ভাল কাজ করার সুযোগ দেওয়া হবে।" এই প্রসঙ্গে কিঞ্চিৎ আক্ষেপের সুরে মেঘ বললেন, "উত্তরাখণ্ড হাইকোর্ট তো রায় দিয়েছে যে প্রতিটি রাজ্যে রূপান্তরকামীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করতে হবে। সেদিক থেকে আমাদের রাজ্য অনেক পিছিয়ে আছে বলে মনে হয়। সেই জায়গাটা ঠিক করা খুব দরকার।"