Advertisment

আমার পুজো: সুব্রত মুখোপাধ্যায়

নেতা-বিধায়ক-মন্ত্রীরা বরাবরই দুর্গাপুজোর সঙ্গে যুক্ত। এর দরুন জনসংযোগও থাকে সাধারন মানুষের সঙ্গে। একডালিয়ার দুর্গাপুজো মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের জীবনের অন্যতম অধ্যায়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Ekdalia Cover

একডালিয়া এভারগ্রীনের এবারের মন্ডপ। ছবি - শশী ঘোষ

"সাত পাক ঘুরিয়ে প্রতিমা নিরঞ্জন করা হত। বিসর্জনের সময় গঙ্গায় দুর্গাপ্রতিমার কাঠামোর নীচে চাপা পড়ে গিয়েছিলাম। আমি তো ভেবেছিলাম মৃত্যু নিশ্চিত। কিন্তু মায়ের কৃপায় সে যাত্রা বেঁচে গিয়েছি। জলের ঢেউয়ে আমার শরীরের ওপর দিয়ে দুর্গা মা ভেসে চলে যান। ডুবে গিয়ে আমি জলও খেয়ে নিয়েছিলাম। আমাকে সেখান থেকে তুলে পেটে চাপ দিয়ে জল বের করা হয়। তারপর টানা ১০ দিন হাসপাতালের বিছানায়। ঘরে ফেরার পর বিপত্তারিনীর পুজো দিয়েছিলেন মা।" এভাবেই দুর্গাপুজোর স্মৃতি রোমন্থন করলেন রাজ্যের প্রবীণ মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়।

Advertisment

সুব্রতবাবু বলেন, "তখন আমি রাজ্যের মন্ত্রী হয়েছি। সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায় ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সাল ১৯৭২। তার আগে ১৯৭১ সালে বালিগঞ্জে বিধায়ক হই। সেই থেকে একডালিয়া এভারগ্রীনের দুর্গাপুজোর সঙ্গে আমি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এই পুজো আমার জীবনে খুবই অঙ্গাঙ্গীভাবে যুক্ত।" 

Ekdalia Puja (2) একদিকে একডালিয়ার পুজোর দায়িত্ব সামলানো, অন্যদিকে নিয়মিত সল্টলেকের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তরে হাজির সুব্রত মুখোপাধ্যায়

কীভাবে এই পুজোর সঙ্গে জড়িত? মন্ত্রী বলেন, "আমি গত এক-দেড় মাস ধরেই রাত একটা পর্যন্ত মন্ডপে দেখভাল করি। কি ভাবে মন্ডপ হচ্ছে, কে কি কাজ করছে। ঠিকমত খাওয়া-দাওয়া হচ্ছে কী না, সবই নজরে রাখতে হয়।" পঞ্চায়েত মন্ত্রীর রাত একটা পর্যন্ত একডালিয়া এভারগ্রীনের মন্ডপে কেটে যায়। পরদিন ফের অফিসে যাওয়ার আগে একবার ঘুরে যান মন্ডপ থেকে। তারপর দিনভর অফিসের ফাইলে চোখ বোলানো। এই হচ্ছে পুজোর এক-দেড় মাস আগে থেকেই সুব্রতবাবুুর প্রতিদিনের রুটিন।

সুব্রতবাবু আরও জানান, পুজোর দিনগুলোতে রাত তিনটে পর্যন্ত মণ্ডপে থাকা খুবই স্বাভাবিক। ১৯৭১ সালে বিধায়ক হওয়ার পর থেকে টানা এই একডালিয়ার সভাপতি তিনি। এরপর ১৯৭২-এ মন্ত্রী হয়েছেন, মেয়র হয়েছেন, ফের ২০১১ ও ২০১৬ সালে মন্ত্রীত্ব। তা সত্বেও একডালিয়ার দুর্গাপুজো ও সুব্রত মুখোপাধ্যায় সমার্থক হয়ে গিয়েছে।

Ekdalia Puja (1) একডালিয়ায় শুধু সাবেকিয়ানার পুজো নয়, থাকে আকর্ষণীয় আলোকসজ্জা। ছবি: শশী ঘোষ

মহানগরের বড় পুজোগুলোর মধ্যে এখনও প্রতিমার সাবেকিয়ানা বজায় রেখে চলেছে একডালিয়া এভারগ্রীন। শুধু তাই নয়, নিয়মনিষ্ঠার সঙ্গে পুজার্চনার ওপর জোর থাকে অনেক বেশি। কেন থিম বা অন্য পুজোগুলোর মত আর্টের দিকে নজর নেই? সুব্রতবাবু বলেন, "আমরা চন্ডীতে বর্ণিত মায়ের আরাধনা করি। মা এখানে অপরূপা। অসুর এমন দেখতে হবে যেন সে বিয়ে করতে যাচ্ছে। মা অস্ত্র নিয়ে যতই নিধন করুন না কেন। উচ্চতা আনুযায়ী আমাদের প্রতিমা কলকাতায় সবথেকে বড়। আমি নিজে ব্রাহ্মনের সঙ্গে পুজোয় বসি।"

কীভাবে মায়ের আরাধনা করেন? মন্ত্রী বলেন, "মায়ের ঘটে জল ভরা থেকে শুরু হয়। তারপর ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত পুজোর সব কাজেই যুক্ত থাকি। পুষ্পাঞ্জলি তো দিতেই হবে। এখানে আমার নামেই সঙ্কল্প হয়।" মন্ত্রীর আক্ষেপ, মেয়র থাকাকালীন একবার সম্মলনে জেনেভা যেতে হয়েছিল। তবে মন পড়ে ছিল একডালিয়ায়। "কিছু ক্ষেত্রে কাজের খাতিরে আপোষ তো করতেই হয়। তবে বেশিরভাগ সময় পুজোয় এলাকাতেই থাকি।"

Durga Puja 2019
Advertisment