Golden Jubilee celebration of 1968 Mexico Olympic Games: সুজাতা, ইরা, সনৎ, বিবেক ওরা এখন কোথায়? নিজেদের মধ্যে দেখা সাক্ষাৎ হয়? মন কেমনের দিনগুলোয় এ ওর পাশে বসে গল্প করে দুটো? কিম্বা ট্রাম-বাস-ট্রেনে যাওয়া আসার পথে হঠাৎ দেখা হলে বলে, "বন্ধু, কী খবর বল, কতদিন দেখা হয়নি"? নাকি শেষ পঞ্চাশটা বছর কেউ কাউকে দেখেওনি? মুখগুলো ভুলে গেছে অনেক দিন? মরচে পড়া স্মৃতিতে এবার তাহলে হাত বোলানোর পালা। ওরা সবাই একদিন একসাথে পাড়ি দিয়েছিল মেক্সিকো।
অবাক লাগছে? সালটা ১৯৬৮। সেই প্রথম কোনও স্প্যানিশ ভাষাভাষী দেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে অলিম্পিক গেমস। খেলাধুলোর পাশাপাশি বিশ্বের অন্য দেশের সঙ্গে সাংস্কৃতিক আদান প্রদানের মধ্যে দিয়ে বন্ধুত্ব গাঢ় করায় বিশ্বাসী ছিল মেক্সিকো। আশিটা দেশ থেকে খুদে শিল্পীদের রঙ-পেন্সিলের আঁচড় স্থান পেল সেখানে। এদের মধ্যেই ছিল ভারতের গোটা ছয় শিশু-কিশোর। 'বন্ধুত্বের পৃথিবী'- এই ছিল ছবির থিম। ৫০ বছর পর নতুন করে বন্ধুত্ব উদযাপনে উদ্যোগী হয়েছে মেক্সিকো। আর তাই দিল্লিতে অবস্থিত মেক্সিকোর দূতাবাস থেকে খোঁজ পড়েছে ভারতীয় শিশুদের।
আরও পড়ুন: ২৫ বছর ধরে ম্যাচের টিকিট জমাচ্ছেন এই মোহনবাগানি
৫০ বছর আগের প্রদর্শনীতে ছিল প্রায় ১,৮০০ ছবি। এখন অক্ষত অবস্থায় রয়েছে হাতে গোনা কয়েকটাই। ভারত থেকে অংশগ্রহণকারী প্রতিযোগীদের মধ্যে ছিল নয়া দিল্লি থেকে ১৪ বছরের সুজাতা শর্মা, ১২ বছরের ইরা সচদেব, ১৩ বছরের সনৎ কুণ্ডু, ৯ বছরের বিবেক কুচিভাতলা, লীলা সুধাকরন এবং ৮ বছরের এলা এমস। ওদের প্রত্যেকের বয়স এখন ৫৮ থেকে ৬৪-এর মধ্যে। চুলে পাক ধরেছে, ভাঁজ পড়েছে চামড়ায়। আর এক প্রতিযোগী জিতেন্দ্র পারেখ-এর আঁকা ছবি 'মার্কেট' সবার মনে থেকে গিয়েছিল বহু বছর। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে সেদিনের সেই কিশোর পারেখ এখন অনেক দূরে। কোনও চিঠি আর কোনোদিন পৌঁছবে না তাঁর ঠিকানায়। দীর্ঘ রোগ ভোগের পর ১৯৯৮ সালে চলেই গেছেন পারেখ।
ছয় শিশুর প্রত্যেকেই সম্ভবত দিল্লির শঙ্কর অ্যাকাডেমির ছাত্র। প্রখ্যাত কার্টুনিস্ট এবং শিশু সাহিত্যিক কেশব শঙ্কর পিল্লাই-এর কাছেই তাঁদের ছবি আঁকার হাতে খড়ি। সেই সূত্র ধরেই জোগাড় করা হয়েছিল ইরার ঠিকানা। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে বাড়ির ঠিকানা বদলেছে। বন্ধুর ঠিকানা পালটাক, বন্ধুত্বের ঠিকানা যেন না পাল্টায়। আধ শতক আগে একই দেশের হারিয়ে যাওয়া বন্ধুদের কাছাকাছি আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দূরের একটা দেশ। ভুল হল, বন্ধুত্বের কোনও দেশ হয় না বোধয়।