এই মেঘ তো এই বৃষ্টি! মেজাজও বোধহয় এত বদলায় না। আবহাওয়ার এই ভিন্ন ধরন মানুষের শারীরিক দিকে নানান পরিবর্তন ফেলে। আর এই আবহাওয়ায় খাবারের দিকে ভীষণ নজর রাখতে হয়। বর্ষায় খাবার থেকে পেটের সমস্যা হওয়া ভীষণ স্বাভাবিক বিষয়। তবে শুধু খাবার নয়, বর্ষায় কিন্তু মেনে চলতে হয় নানান বিধিনিষেধ! বৃষ্টিতে না ভেজা, মাঠে ঘাটে খেলাধুলার পর ভাল করে হাত-পা ধোয়া এবং স্বচ্ছ পরিষ্কার থাকার অভ্যাস কিন্তু করতেই হয়! গরমের পরেই এরকম বৃষ্টির আমেজ দেখতে এবং উপভোগ করতে যেমন সুন্দর ও আরামদায়ক, তেমনই এর প্রভাব অসুস্থতার লক্ষণ ও বটে।
তাই, বর্ষায় এমন কিছু কিছু বিষয় অবলম্বন করুন যার থেকে আপনি সুস্থও থাকবেন এবং ঋতু উপভোগেও বাধা পড়বে না।
১. সিট্রাস জাতীয় ফল খাওয়া বন্ধ করবেন না: সিট্রাস ফল ভিটামিন সি-র একটি বড় উৎস এবং ভিটামিন সি আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য দারুণ। এটি সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই ফলগুলো টক থাকার কারণে লোকেরা বর্ষাকালে এগুলি এড়ানোর প্রবণতা রাখে যার ফলে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যদি সামগ্রিকভাবে সিট্রাস ফল খাওয়া পছন্দ না করেন, তবে অন্ততপক্ষে খাবারে লেবু ছিটিয়ে দিতে পারেন বা ফলের রস বানাতে পারেন। আপনি যদি সত্যিই সিইট্রাস ফল খেতে না পারেন, তাহলে পেঁপে, পেয়ারা এবং ক্যাপসিকাম খেতে ভুলবেন না কারণ এগুলি ভিটামিন সি-র সমৃদ্ধ উৎস।
২. প্রি-বায়োটিক এবং প্রো-বায়োটিক খাবার পরিহার করা: সিট্রাস ফলের মতো, মানুষকে প্রায়ই দইয়ের মতো প্রো-বায়োটিক খাবার এড়িয়ে যেতে দেখা যায়। বর্ষাকালে, নিশ্চিত করতে হবে যে আপনি আপনার অন্ত্রকে এমন একটি খাদ্য সরবরাহ করেন যাতে প্রয়োজনীয় পুষ্টি যেমন পৌঁছায় তেমনই আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও যত্ন নেয়। দই, বাটার মিল্ক, আচারযুক্ত শাকসবজি জাতীয় খাবার অন্ত্রকে রোগ-প্রতিরোধী জীবাণু এবং অন্যান্য ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে।
৩. ঠান্ডা জল বর্জন করুন: বর্ষায় ঠান্ডা জল এক্কেবারে নৈব নৈব চ! গলা ব্যাথা, জ্বর, সর্দি কাশি থেকে মুক্তি চান তো এটি বন্ধ করুন। প্রয়োজনে মাটির কুজোর জল খান, এটি কেবল আপনার তৃষ্ণা মেটাবে না, বিপাককে বাড়ানো থেকে শুরু করে হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা এবং সান স্ট্রোক প্রতিরোধ পর্যন্ত বিস্তৃত সুবিধা প্রদান করে।
আরও পড়ুন আলু থেকে নিঃসৃত ‘দুধ’ কি ডেয়ারির দুধের বিকল্প হতে পারে?
৪. মরশুমের শাক সবজি এবং ফল অবশ্যই খান: মৌসুমী ফল এবং সবজি খাওয়ার উপর জোর দেওয়ার কারণ হল, কারণ আপনার অঞ্চলে উত্থিত ফল এবং সবজি মৌসুমী হলেই উপকার পাওয়া যায়। আমদানি করা ফল ও শাকসবজি কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয় এবং তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে এটি কার্যকরী নয়।
৫. বাইরের খাবার থেকে দূরে থাকুন: বর্ষায় রাস্তার খাবার থেকে যত পারবেন দূরে থাকুন। পকোড়া, ভাজাভুজি এবং স্ট্রিট ফুড খাবেন না এতে পেটের সমস্যা হয়। বর্ষাকালে, কেউ তৃষ্ণার্ত বোধ করে না এবং প্রায়শই পর্যাপ্ত জল খাওয়া এড়িয়ে যান, যা আর্দ্রতার কারণে জলশূন্যতার দিকে পরিচালিত করে। তাই প্রতিদিন ২.৫-৩ লিটার জল পান করতে ভুলবেন না।
তাই নিয়ম মেনে চলুন আর সুস্থ থাকুন!
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন