দক্ষিণ আমেরিকার একটি বোলতায় প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন পেপটাইড ব্যবহার করে শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সংক্রমণ ও অন্যান্য সংক্রমণের মোকাবিলা করতে এক নতুন ধরণের ব্যাক্টেরিয়া-প্রতিরোধক পেপটাইড আবিষ্কার করেছেন ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অফ টেকনলোজি বা এমআইটি-র একদল ইঞ্জিনিয়ার।
মৌমাছি অথবা বোলতার বিষ অনেক ব্যাক্টেরিয়া খতম করতে সক্ষম। সমস্যা হচ্ছে, এই বিষের বহু যৌগ মানুষের জন্যে এতটাই ক্ষতিকারক, যে তা থেকে অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ তৈরি করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। সম্প্রতি, পলিবিয়া পাওলিসটা নামক এক প্রজাতির আমেরিকান বোলতার বিষকে বিজ্ঞানীরা পরিশোধিত করে ইঁদুরের ওপর পরীক্ষা করে দেখেছেন। ব্যাক্টেরিয়া খতম করতে সক্ষম কিন্তু মানবদেহের জন্যে নিরাপদ পেপটাইড তৈরি করতেই এই পরীক্ষা করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: ভারতে প্রতি আটটির মধ্যে একটি মৃত্যুর কারণ বায়ু দূষণ
পরীক্ষায় দেখা গেছে, শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সংক্রমণ ও মূত্রনালীর যেসব সংক্রমণ রোধে অধিকাংশ অ্যান্টিবায়োটিক অচল, সেসব সংক্রমণের ব্যাক্টেরিয়া - সিউডমোনাস এরুজিনসাকে পুরোপুরি ধ্বংস করতে পারে এই নতুন ধরণের ব্যাক্টেরিয়া-প্রতিরোধক পেপটাইড। "আমরা একটি বিষাক্ত পরমাণুকে সংক্রমণ রোধে সক্ষম পরমাণুতে পরিণত করেছি। এইসব পেপটাইডের গঠন ইত্যাদি পর্যবেক্ষণ করে আমরা সেগুলোর চরিত্র এবং কার্যকারিতা নির্ধারণ করতে পারি," জানান এমআইটি-র ডক্টরাল গবেষক ফিয়েন্তে-নুনেজ।
নেচার কমিউনিকেশন বায়োলজি জার্নালে এই পেপটাইডের বিষয়ে একটি গবেষণাপত্র ছাপা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে যে মাত্র ১২ টি অ্যামাইনো অ্যাসিডের তৈরি এই পেপটাইডটি মানুষের জন্যে কম ক্ষতিকর ও জীবানুর জন্যে মারাত্মক আরো বিভিন্ন ধরণের পেপটাইড তৈরিতে সক্ষম। সাত ধরনের ব্যাক্টেরিয়া ও দুই ধরণের ফাঙ্গাসের বিরুদ্ধে এই নতুন পেপটাইড ব্যাবহার করে পরীক্ষা করেছেন বিজ্ঞানীরা। ল্যাবরেটরিতে তৈরি মানব কিডনি কোষে এই পেপটাইড প্রয়োগ করে তার বিষক্রিয়ার মাত্রাও যাচাই করেছেন তাঁরা। নুনেজ আরও জানিয়েছেন, মাত্র চারদিনের মধ্যেই সংক্রমণ পুরোপুরি সারিয়ে তুলতে পারে এই যৌগ।