বৃষ্টি কার না ভাল লাগে ! ফুরফুরে আমেজ আর সঙ্গে এক কাপ চা কিংবা কফি চারিদিকে সবুজায়ন যেন চোখের এক নিদারুণ আরাম। তবে বৃষ্টি যে শুধু মনোমুগ্ধকর পরিবেশের সৃষ্টি করে তা কিন্তু একেবারেই নয়। বৃষ্টির সঙ্গে হাত ধরে সূত্রপাত হয় নানা ধরনের ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগের।
র্ষা মানেই জমা জল এবং তার সঙ্গে আমাশা, টাইফয়েড এবং ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়ার উৎপাত। আবহাওয়ার পরিবর্তন ও বাতাসের আর্দ্রতা বৃদ্ধি শরীরকে নানানভাবে অসুস্থ করে তোলে। তাই প্রয়োজন শরীরের সঠিক ভাবে যত্ন নেওয়া এবং অসুস্থতা থেকে দূরে থাকা। ইন্ডাস হেলথ প্লাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যসেবা বিশেষজ্ঞ কাঞ্চন নাইকাওয়াড়ি বলেন, বর্ষার মরশুমে চোখও আক্রান্ত হয়। যদিও করোনা মহামারfতে মুখ, নাক এবং হাত সুরক্ষা সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতনতা রয়েছে মানুষের মধ্যে তারপরে চোখের সুরক্ষা সম্পর্কে কিছু মানুষ এখনও অজ্ঞ থাকতে পারেন।
চোখের সমস্যা থেকে সুস্থ থাকার পদ্ধতি:
• স্বাস্থ্যসম্মত থাকুন: সবসময় মুখের তোয়ালে, ন্যাপকিন, রুমাল, আপনার চোখের ব্যবহারের যে কোনও কাপড় এবং হাত পরিষ্কার রাখুন। আপনার ব্যক্তিগত জিনিস যেমন তোয়ালে, চশমা, কন্টাক্ট লেন্স ইত্যাদি কারও সঙ্গে শেয়ার করবেন না।
• সানগ্লাস বা চশমা পরুন: ঘর থেকে বের হওয়ার সময় একজোড়া সানগ্লাস বা চশমা অবশ্যই পড়ুন। এগুলি চোখকে যে কোনও ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়ার মতো সংক্রামক পদার্থ থেকে বাঁচাতে পারে বা এর সান্নিধ্যে আসতে বাধা দেয়।
• চোখের যত্ন নিন: প্রতিদিন ঠান্ডা জল দিয়ে আপনার চোখ ধুয়ে নিন। ঘুম থেকে ওঠার পরে বা কন্টাক্ট লেন্স অপসারণের পরে আপনার চোখ কঠোরভাবে ঘষবেন না কারণ এটি কর্নিয়ার স্থায়ীভাবে ক্ষতি করতে পারে।
• বর্ষাকালে কন্টাক্ট লেন্স না পরার চেষ্টা করুন: এগুলো চোখে চরম শুষ্কতা সৃষ্টি করতে পারে এবং এর ফলে লালচে ভাব ও জ্বালা অনুভব হতে পারে। সেই কারণে চশমা পড়ার অভ্যাস করুন। আপনার চশমা পরিষ্কার এবং শুকনো রাখুন।
• জলাবদ্ধ এলাকা এড়িয়ে চলুন: এই জায়গাগুলোতে প্রচুর ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাক রয়েছে যা মানবদেহে স্থানান্তরিত হতে পারে এবং ক্ষতি করতে পারে।
• সুষম ও স্বাস্থ্যকর খাবার খান: যেকোনও সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আপনার শরীরকে সুস্থ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অক্ষুণ্ণ রাখুন। পুষ্টিকর এবং উপযোগী খাদ্য খান। শরীর ভাল রাখুন।
মূলত, চোখের যে রোগ গুলি এই মরশুমে দেখা দিতে পারে তার মধ্যে;
১. কনজাংটিভাইটিস বা চোখের ফ্লু: এটি চোখের সাদা অংশের জ্বালা সৃষ্টি করে, চোখ লাল হয়ে যায়, ঘনঘন জল পড়তে পারে চোখ দিয়ে। এটি অত্যন্ত সংক্রামক এবং এমনকি সামান্যতম যোগাযোগের মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে। যদিও সংক্রমণ কয়েক দিনের মধ্যে চলে যায়, তবে আপনার চোখকে উন্মুক্ত রাখা উচিত নয়, সানগ্লাস এসময় ব্যবহার করা প্রয়োজন।
২. স্টাই বা আঞ্জনি: চোখের ওপরের বা নিচের পাতায় লাল হয়ে ফুলে যাওয়া এর লক্ষণ এবং এটি বেদনাদায়ক হতে পারে। এতে পুঁজ জমা থাকে এবং কয়েকদিনের মধ্যে নিজে থেকেই এটি কমে যায় তারপরেও, উষ্ণ সেঁক দিলে ব্যথা কমে।ত বে সেটি ফাটানোর ভুল করবেন না।
৩. কর্নিয়াল আলসার: কর্নিয়াতে কালশিটে ভাব সঙ্গে পুঁজ , তীব্র ব্যথা এবং দৃষ্টি ক্রমশই ঝাপসা হয়ে যায়। এটি একটি মারাত্মক সংক্রমণ যা সঠিকভাবে চিকিৎসা না করলে দৃষ্টিশক্তি হ্রাস এবং স্থায়ী অন্ধত্ব হতে পারে।
আরও পড়ুন টিকা নেওয়ার পর অ্যালার্জির সমস্যায় ভুগছেন? জেনে নিন এর প্রতিকার
বার্ষিক ভিত্তিতে চোখের চেক-আপ করা গুরুত্বপূর্ণ কারণ আপনার চোখের রেটিনায় রক্তনালীর স্বাস্থ্য এবং অবস্থা ভালও কিনা সেই বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করা দরকার। চোখে পাওয়ার থাকলে সেই দিকেও পরিমাপ করা প্রয়োজন। তাই এক কথায় দৃষ্টিশক্তির অবহেলা করবেন না একে সচল রাখুন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন