গর্ভাবস্থা থেকে সন্তান প্রসবের পর প্রত্যেক মায়ের কাছেই সময়টা যেমন আবেগের তেমনই জটিলতারও। একরত্তিকে নিয়ে সারাদিনের ব্যস্ততা, মানসিক টানাপোড়েন সব মিলিয়ে একটা অদ্ভুত সময়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হয় মা-দের। আর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় সন্তানকে নিয়ে বিভিন্ন চিন্তায় তাঁরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তবে চিকিৎসকরা বলছেন ছবিটা একেবারেই অস্বাভাবিক নয়, সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে বহু ক্ষেত্রেই মহিলারা সন্তানের জন্ম দেওয়ার পর হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। বেশকিছু সামাজিক ও পারিপার্শ্বিক অবস্থাও মেয়েদের মানসিক অস্থিরতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এই অবসাদ শিশুর জন্মের সাত দিনের মধ্যেই শুরু হয় বা তার আগেও হতে পারে। কারও ক্ষেত্রে এই প্রবণতা বেশ অনেকটা সময় পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। সে ক্ষেত্রে অবস্থা জটিল হওয়ার আগেই অর্থাৎ উপসর্গ দু-সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হলেই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
মূলত যে উপসর্গ দেখা দিতে পারে
খুব সহজেই বিরক্ত হয়ে যাওয়া, কারও সঙ্গে কথা বলতে না ইচ্ছে করা, মনঃসংযোগে সমস্য়া, অকারণে রেগে যাওয়া বা খিটখিটে হয়ে যাওয়া, ঘুমে কমে যাওয়া বা মাঝরাতে ঘুম ভেঙে যাওয়া, মাথাব্যাথা, খাবারে অরুচি, ইত্যাদি।
আরও পড়ুন, Happy Mother’s Day 2020: লকডাউনে ওঁরা যেন শুধু মা নন, দুগ্গা মা!
ঝুঁকি কাদের
যে সমস্ত মহিলাদের সন্তানকে নিয়ে একা থাকতে হয়, বা বাড়িতে সদস্য কম তাঁদের ক্ষেত্রে এই সমস্যার সম্ভবনা প্রবল।। এ ছাড়াও, পারিপার্শিক পরিবেশ ভাল না হলে, পারিবারিক ইতিহাস থাকলে, গর্ভপাতের ইতিহাস থাকলে, ব্যক্তিগত সম্পর্কের জটিলতা থাকলে বা মায়ের বয়স কম হলে এই ধরনের অবসাদ দেখা দিতে পারে।
সমস্যা কাটিয়ে উঠবেন কীভাবে
নিজের যত্ন নিন
খুদের দেখভাল তো করবেনই, তবে ব্য়স্ততার মধ্যে নিজের কথা ভুললে চলবে না। ডাক্তারি পরামর্শ মেনে চলুন। পর্যাপ্ত খাওয়া এবং ঘুমের দিকে নজর দিন। সব কাজ নিজের কাঁধে না নিয়ে বাড়ির অন্যদের সাহায্য নিন, আয়াও রাখতে পারেন আপনার সদ্যোজাতের জন্য।
আরও পড়ুন, দূরে থাকা সবচেয়ে কাছের মানুষটিকে জানিয়ে দিন মাতৃ দিবসের শুভেচ্ছা
নিজের ইচ্ছেগুলো নিয়ে ভাবুন
এতদিন যে ইচ্ছেগুলোকে ধামাচাপা দিয়ে রেখেছিলেন সেগুলোর দিকে খেয়াল করুন, বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করুন, পছন্দের রেস্তোঁরায় যান, পার্লার বা শপিংয়েও সময় দিন। ঘরবন্দি হয়ে থাকলে সমস্যা আরও বাড়বে।
মন খুলে হাসুন, কথা বলুন
একা থাকবেন না, আপনার পছন্দের মানুষের সঙ্গে মন খুলে কথা বলুন, সমস্যাগুলো শেয়ার করুন, হাসুন, সর্বোপরি প্রাণ খুলে বাঁচুন। আপনার কোনও পরিচিত যিনি সদ্য মা হয়েছেন এমন কারও সঙ্গেও কথা বলতে পারেন।
পর্যাপ্ত বিশ্রাম প্রয়োজন
মা হবার পর দায়িত্ব অনেকটাই বেড়ে যায়। তবে যতটা সম্ভব বিশ্রাম নিন। দিনে অন্তত সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। ঘুম না এলে টিভি দেখুন বা ভাল বই পড়ুন।