নদিয়ার কল্যাণীর কাটাগঞ্জ অঞ্চলে রয়েছে দেবী মৃত্যুনাশিনী কালীর মন্দির। কাটাগঞ্জের ছোট পাড়া হল বুড়িবটতলা। সেখানেই রয়েছে এই মন্দির। এখানে মন্দিরটি তৈরি হয় ১৯৫০ সালে। তবে, স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, পুজো শুরু হয়েছিল তার অনেক আগে থেকেই। এখানে ছিলেন এক সিদ্ধ যোগিনী। তিনিই ছিলেন এই মন্দির তৈরির পিছনে। সেই সাধিকার দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছে মন্দিরের পাশে। তবে, ওই সিদ্ধ যোগিনী চেয়েছিলেন দেবীর বেদির নীচেই তাঁকে সমাধিস্থ করা হোক। কিন্তু, সেই সিদ্ধযোগিনীর সেই ইচ্ছা শেষ পর্যন্ত পূরণ করতে পারেননি ভক্তরা।
এই সিদ্ধযোগিনী এলাকায় পরিচিত ছিলেন সাধিকা মা নামে। কথিত আছে তাঁর বিয়ে হয়েছিল রাজপরিবারে। তাঁর স্বামী ছিলেন বিয়ের পরদিনই ঘর ছেড়ে ব্রহ্মচারী হয়ে যান। তাঁর নতুন নাম হয় মাধবানন্দ ব্রহ্মচারী। ঈশ্বর আরাধনায় স্বামীর আগ্রহ দেখে এরপর ঘর ছাড়েন তাঁর স্ত্রীও। তৎকালীন সামাজিক কঠোরতা উপেক্ষা করে তিনি এই কাজ করেছিলেন। সেই সময় ভাগীরথী এই অঞ্চলের পাশ দিয়ে বয়ে যেত। সেই ভাগীরথীর পাড়ে এসে বসেছিলেন ওই বধূ। সেই সময় তিনি একটি দেবীর ঘট গঙ্গায় ভাসমান অবস্থায় দেখতে পান।
আরও পড়ুন- ভেলোর ফেরত রোগীও এখানে সুস্থ হয়ে ওঠেন প্রার্থনায়, জাগ্রত দেবী ঝিংলেশ্বরী
কথিত আছে, দেবীর স্বপ্নাদেশে এরপর ওই বধূ এক বটগাছের নীচে ঘটটি রেখে খোলা আকাশের নীচে সাধনা শুরু করেন। এরপর সাধনায় সিদ্ধিলাভ করে স্বপ্নাদেশে দেবীর বর্ণনা পেয়ে, সেই অনুযায়ী মূর্তি তৈরি করে দেবীর পুজো শুরু করেন। দেবীর সেই মূর্তি প্রতিবছরই অঙ্গরাগ করা হয়। কিন্তু, মূর্তিতে কোনও ক্ষত দেখা দিলে, তা পরিবর্তন করার আদেশ ওই সাধিকা মা ভক্তদের দিয়ে গিয়েছেন।
এই দেবীমূর্তির পাশেই রয়েছে তাঁর ভৈরব কপালভৈরব। এই মন্দিরে এসে অসুস্থ রোগীর সুস্থ হওয়া, বেকার যুবকদের চাকরি হওয়া, নিঃসন্তানের সন্তানলাভের মত বহু অলৌকিক ঘটনা ঘটেছে। এমনকী, সাধিকা মা কোনও কিছু বলে দেওয়ার পর, সেখানকার বাস্তব পরিস্থিতিটাও বদলে যেত বলেই দাবি ভক্তদের।