Advertisment

ভক্তের ভার বহন করেন শ্যামনগরের মূলাজোড় ব্রহ্মময়ী কালী, জড়িয়ে রামপ্রসাদ-বামাক্ষ্যাপার নামও

কথিত আছে, এই তীর্থে এলে আর আর্তজনের অন্য তীর্থে যাওয়ার দরকার পড়ে না।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Shyamnagar Kali Temple

জাগ্রত দেবস্থানের অভাব নেই এই বাংলায়। এখানে ঈশ্বর যেন ভক্তের কাছে ধরা দেওয়ার অপেক্ষায় বসে থাকেন। এই বাংলাতেই রয়েছে একের পর এক তীর্থস্থান। ভক্তের মনস্কামনা পূরণের দেবালয়। যেখানে দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা আসেন কাতর হয়ে একের পর এক মনস্কামনা নিয়ে। আর, ফিরে যান হাসিমুখে। মনস্কামনা পূরণের পর আবার ছুটে আসেন নতুন কোনও কামনা নিয়ে। এ যেন চলতেই থাকে দিনের পর দিন। এই বাংলার এমনই এক তীর্থস্থান শ্যামনগরের মূলাজোড় ব্রহ্মময়ী কালী মন্দির। যে মন্দিরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বামাক্ষ্যাপা-সহ বহু সাধকের নাম। জড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য মানুষের আর্তি পূরণের কথা, তাঁদের ইতিহাস।

Advertisment

উত্তর ২৪ পরগনার এই মূলাজোড় ব্রহ্মময়ী কালীমন্দির শ্যামনগর কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইতিহাস বলে, ১৮০৯ সালে বৈশাখী পূর্ণিমায় এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন কলকাতার পাথুরিয়াঘাটার জমিদার গোপীমোহন ঠাকুর। তাঁর কন্যা আট বছরের ব্রহ্মময়ীকে বিয়ের দিন পালকি-সহ গঙ্গায় স্নান করানো হয়। কিন্তু, এরপর আর ব্রহ্মময়ীর খোঁজ মেলেনি। পরে, দেহ উদ্ধার হয় শ্যামনগরে যেখানে আজ মন্দির সেই জায়গায়। কথিত আছে, গোপীমোহনকে দেবী স্বপ্নে দেখা দিয়েছিলেন। নির্দেশ দিয়েছিলেন, ওই জায়গায় মন্দির প্রতিষ্ঠার। এর মধ্যেই সেখানে কষ্টিপাথরের অর্ধপ্রোথিত এক দক্ষিণাকালীর মূর্তিও উদ্ধার হয়। যাকে মন্দিরে ব্রহ্মময়ী কালীরূপে প্রতিষ্ঠা করেন গোপীনাথ।

পরে, তাঁর ছেলে প্রসন্নকুমার ঠাকুর ওই মন্দিরের উত্তর ও দক্ষিণ দিকে ছয়টি করে সারিবদ্ধ শিবের দেউল তৈরি করিয়ে দেন। মন্দিরে সিঁড়ির কাছে দুই স্তম্ভের ওপর শ্বেতপাথরের দুটি সিংহ মূর্তি রয়েছে। তার ওপরে আরও দুটি স্তম্ভের ওপরে রয়েছে দুটি বিষ্ণু মূর্তি। অতি প্রাচীন ওই দুটি বিষ্ণু মূর্তি নিয়ে আসা হয়েছে বাংলাদেশের রাজশাহী থেকে। পাশাপাশি, পাথুরিয়াঘাটার ঠাকুরবাড়ি থেকে গোপীনাথ জিউয়ের মূর্তি ব্রহ্মময়ী মন্দিরের পাশে এনে প্রতিষ্ঠা করা হয়।

আরও পড়ুন- আর্তজনের আশ্রয়স্থল, ভক্তদের মনস্কামনা পূরণের তীর্থ, রানাঘাটের সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দির

কথিত আছে স্থাপনার সময় থেকেই একের পর এক অলৌকিক ঘটনা ঘটতে থাকে এই মন্দির ঘিরে। কোনও এক সাধক গঙ্গাবক্ষে শ্যামাসংগীত করছিলেন। তাতে নাকি দেবীর মুখ ঘুরে যায়। তিনি হয়ে যান গঙ্গাবক্ষমুখী বা পশ্চিমমুখী। এমন অজস্র অলৌকিক কাহিনি শুনে খোদ বামাক্ষ্যাপাও নাকি তারাপীঠ থেকে এসে এখানে সাধনা করেছিলেন। পুজো করেছিলেন দেবী ব্রহ্মময়ীর। আবার, শোনা যায় দেবীর আদেশেই নাকি এখানে পৌষমাসে জোড়া মুলো দিয়ে পুজো করার রীতি প্রচলিত হয়। এই সব অলৌকিক কাহিনির উত্তরোত্তর সংযোজন ঘটিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য ভক্ত মনস্কামনা পূরণের জন্য ভিড় করেন শ্যামনগর ব্রহ্মময়ী কালী মন্দিরে।

Kali Puja Kali Temple pujo
Advertisment