দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের অন্যতম গুজরাতের জামনগরের নাগেশ্বর মন্দির। বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনিতে এই মন্দির সুপ্রাচীন কাল থেকে স্থান পেয়েছে। কথিত আছে, এই জ্যোতির্লিঙ্গ সমস্ত বিষ থেকে মুক্তির প্রতীক। শুধু তাই নয়, স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণও নাকি নাগেশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতেন বলেও কথিত আছে। এখানকার লিঙ্গটি দক্ষিণমুখী। এই লিঙ্গটি দ্বারকা শিলায় তৈরি বলেই ভক্তদের দাবি। এই লিঙ্গের শীর্ষে ছোট ছোট চক্র রয়েছে। যা দেখতে অনেকটা ত্রিমুখী রুদ্রাক্ষের মত। কথিত আছে, ঔরঙ্গজেব নাগেশ্বর শিবলিঙ্গ ধ্বংসের জন্য আক্রমণ করেছিলেন। সেই সময় কোথা থেকে হাজার হাজার মৌমাছি তাঁকে ও তাঁর সেনাদের আক্রমণ করেছিল। যার জেরে শেষ পর্যন্ত সেনাবাহিনী নিতে পালাতে হয়েছিল প্রবল প্রতাপশালী মুঘল সম্রাটকে।
শিবপুরাণ অনুযায়ী, আজ মন্দির যেখানে সেই জায়গায় সাপেদের রাজা দারুক রাক্ষস রাজত্ব করত। তার স্ত্রী দারুকী ছিল আবার দেবী পার্বতীর ভক্ত। দারুকীর ওপর সন্তুষ্ট হয়ে পার্বতী আশীর্বাদ করেছিলেন, দারুকী যেখান দিয়ে যাবে, দারুকবনও সেই স্থানে চলে যাবে। পরবর্তী সময়ে দেবতারা দারুকের অত্যাচার বন্ধ করতে তার রাজ্য আক্রমণ করে। সেই সময় দারুকের কথামতো তার স্ত্রী পার্বতীর দেওয়া বরদান প্রয়োগ করে। যার ফলে দারুকী সাগরতট দিয়ে পালায়। আর দারুকবনও সেই জায়গায় চলে যায়। দারুকবনের সাহায্যে নিরাপদে পালানোর পর ফের অত্যাচার শুরু করে দারুক। এমনকী, মহাদেবের উপাসক সুপ্রিয় ও তার সহচরদেরও বন্দি করে।
আরও পড়ুন- অন্যতম জ্যোতির্লিঙ্গ, লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থীর কাছে যা পরিচিত ‘বাবাধাম’ নামে
সুপ্রিয়র শিবভক্তিতে তাকে অস্ত্র দেন মহাদেব। সেই অস্ত্র দিয়ে দারুক রাক্ষসকে বধ করে সুপ্রিয়। ভক্তের কামনায় শিব সেখানে নিজের জ্যোতি দিয়ে জ্যোতির্লিঙ্গ তৈরি করেন। সেই লিঙ্গকে নাগেশ্বর বা নাগদের দেবতা রূপে পুজো করা হয়। দেবী পার্বতীকে এখানে পুজো করা হয় নাগেশ্বরী রূপে। নাগেশ্বর মন্দিরের আশপাশে আরও কয়েকটি মন্দির রয়েছে। যেমন রুক্মিনী মন্দির, গায়ত্রী মন্দির, গীতা মন্দির, ব্রহ্ম কুণ্ড, হনুমান মন্দির। শিবরাত্রি এবং শ্রাবণ মাসে এখানে দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা আসেন।