খুব বেশি বিখ্যাত নয়। কিন্তু, এই বাংলায় এমন বহু মন্দির আছে, যেখানে গিয়ে ভক্তরা দু'দণ্ড শান্তি পান। অনুভব করেন, আসলেই কেন যেন মনটা শান্ত হয়ে যায়। হয়তো জনে জনে সেসব বলা সম্ভব হয় না। তবে, অতি ঘনিষ্ঠদের কাছে তাঁরা সেকথা মন খুলে বলেও দেন। এমনই এক মন্দির হল উত্তর ২৪ পরগনার সাইবনার নন্দদুলালজিউয়ের মন্দির।
সাধারণত, এই বাংলায় মন্দির বলতে আমরা চূড়ো থাকবে, এমন কিছকে বুঝি। সাইবনার এই মন্দিরের ছবিটা অবশ্য সেই তুলনায় অনেকটাই আলাদা। এর ছাদ সমতল, দালান পূর্বমুখী। গর্ভগৃহে কাঠের মঞ্চে রাধার ধাতব মূর্তি আর কৃষ্ণের কষ্টিপাথরের মূর্তি রয়েছে। এই মূর্তি নাকি অতি প্রাচীন, ভক্তদের দাবি ষোড়শ শতকের। এখানেই আলাদা আসনে জগন্নাথ, সুভদ্রা, বলভদ্রের দারুবৃক্ষের মূর্তি রয়েছে।
কথিত আছে গৌড়ের রাজপ্রাসাদ থেকে শিলা সংগ্রহ করে এই মূর্তি তৈরি হয়েছিল। শুধু এটিই নয়। সঙ্গে, কৃষ্ণের আরও দুটি মূর্তিও তৈরি হয়। তার একটি মূর্তি রাধাবল্লভজিউয়ের। যা রয়েছে বল্লভপুরে। দ্বিতীয় মূর্তিটি শ্যামসুন্দরজিউয়ের। যা রয়েছে খড়দহের মন্দিরে। ভক্তদের বিশ্বাস, একদিনে এই তিন মূর্তি দর্শন করলে আর পুনরায় জন্ম নিতে হয় না। সঙ্গে, সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্তের মধ্যে উপবাস থেকে দর্শন করলে গৌরাঙ্গ, নিত্যানন্দ ও অদ্বৈত মহাপ্রভুর দর্শন হয়। এখানে নাটমন্দির-সহ গোটা মন্দির চত্বর পাঁচিল দিয়ে ঘেরা রয়েছে। মন্দির চত্বরে প্রবেশের পর ডান দিকে রয়েছে দুটি আটচালা মন্দির। যেখানে রয়েছে শিবলিঙ্গ।
আরও পড়ুন- হুবহু দক্ষিণেশ্বর মন্দির, ভবতারিণীর মন্দির থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে, জানেন কয়জন?
সাইবনার এই মন্দিরে নন্দদুলালজিউ নিত্য পুজো পান। এছাড়া রথযাত্রার সময় মন্দিরে জগন্নাথদেবের বিশেষ পুজোর রীতি রয়েছে। সেই সময় জগন্নাথ, সুভদ্রা ও বলভদ্রকে রথে চাপিয়ে ঘোরানো হয়। মাঘী পূর্ণিমায় বেশ বড় করে উৎসব হয়। ফাল্গুনের পূর্ণিমায় হয় দোল উৎসব। সেই সময় রাধাকৃষ্ণের মূর্তি দোলায় চাপিয়ে মন্দির চত্বরেই দোলমঞ্চে রাখা হয়। সেখানেই চলে দেবদোলপর্ব। এই সব উৎসবে যোগ দিতে দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা সাইবনার মন্দিরে আসেন।