একদল মানুষ রয়েছেন, যাঁদের কাছে যা দ্বিতীয়া তাই-ই অষ্টমী। বছরের তিনশো পঁয়ষট্টি দিনই তাঁরা অন ডিউটি। চব্বিশ ঘণ্টাই তাঁরা পরিষেবা দিয়ে চলেছেন সাধারণ মানুষের স্বার্থে। বলার অপেক্ষা রাখে না, সেই তালিকায় রয়েছেন পুলিশ, রেলকর্মী থেকে শুরু করে সাংবাদিক, হাসপাতাল কর্মী। এরকমই একদল কর্মী ক্রমাগত কাজ করে চলেছেন নারকেলডাঙা রেলওয়ে কারশেডে।
পুজোয় নয়, কাজে ব্যস্ত
ওর বয়সী আর পাঁচটা মেয়ে যখন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে শেষ পর্বের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত, বছর পঁচিশের এই মেয়েটা তখন ব্যস্ত ওর কাজে। পোশাকে স্বাভাবিকভাবেই কোনও আড়ম্বর নেই। ঝাঁ চকচকে মেকআপ নেই। আপামর বাঙালি যখন মেতেছেন শারদোৎসবে, তখন ওঁরা কাজে করেন, করেই চলেন।
পুজোয় পরিবার নয়, কারশেড
"শেষবার কবে পরিবারের সঙ্গে পুজো কাটিয়েছি মনে নেই। বাড়িতে একটা ছোট ছেলে রয়েছে, ওরা নিজের মতো করেই পুজো কাটায়। আমার যাওয়া হয়নি গত ৩৮ বছরেও," হেসেই বললেন এক রেলকর্মী।
তেল কালিতে স্বচ্ছন্দ তাঁরা
পুজোর নতুন জামা নয়, তেল কালিতেই বেশি স্বচ্ছন্দ তাঁরা। কেমন সাবলীলভাবে হেঁটে চলে যাচ্ছেন মাটির তলায়। ছেনি-হাতুড়ি আর টর্চই অস্ত্র।
এটাই পুজো
রেলের রক্ষণাবেক্ষণ, ধোয়া মোছা, সবটাই ওঁরা দেখাশোনা করেন। বাস-ট্রাম-অটো একটা আধটা বন্ধ হতেই পারে। লোকাল ট্রেনের বন্ধ হওয়ার জো নেই, পুজোর কটা দিন অন্তত।
গনগনে গরমে কাজ
গরমে ভিতরে তাপমাত্রা থাকে কম করে ৮০ থেকে ৯০ ডিগ্রি। তার মধ্যেই অম্লানবদনে তেল কালি মেখে সারাদিন কাজ করে চলেছেন তাঁরা। মুখে ক্লান্তির লেশমাত্র নেই। গত ৩০, ৪০ বছর ধরে এতেই অভ্যস্থ সুখেন, দেবাশিসরা। পুজোর মরসুমে পেঁজা তুলো নয়। মাথার ওপর রেলের পাটাতনই থাকে গোটা পুজো জুড়ে।