Navapatrika Puja: দেবী দুর্গার কলাবউ! এর প্রতিটি পাতার আড়ালে লুকিয়ে আছে মহাশক্তির রহস্য?

Navapatrika Puja: দুর্গাপূজার নবপত্রিকা বা কলাবউ পূজা কেবল প্রতীক নয়, দেবী দুর্গার নয় রূপের প্রকাশ। জানুন প্রতিটি পাতার আড়ালে থাকা দৈবশক্তি এবং এর আধ্যাত্মিক তাৎপর্যের কথা।

Navapatrika Puja: দুর্গাপূজার নবপত্রিকা বা কলাবউ পূজা কেবল প্রতীক নয়, দেবী দুর্গার নয় রূপের প্রকাশ। জানুন প্রতিটি পাতার আড়ালে থাকা দৈবশক্তি এবং এর আধ্যাত্মিক তাৎপর্যের কথা।

author-image
IE Bangla Lifestyle Desk
New Update
Navapatrika Puja

Navapatrika Puja: নবপত্রিকা পূজা

Navapatrika Durga Pujo: দুর্গাপূজা মানেই ভক্তির আবেগে ভেসে যাওয়া দিনগুলো। তবে এই পূজার প্রতিটি আচারেই লুকিয়ে থাকে গভীর শাস্ত্রীয় তাৎপর্য। এর মধ্যে অন্যতম হল নবপত্রিকা পূজা। অনেকেই একে শুধু 'কলাবউ' বলে ভাবেন। কিন্তু বাস্তবে, নবপত্রিকা হল দেবী দুর্গার নয়টি রূপের মিলন। প্রতিটি গাছ বা পাতার আড়ালে বিরাজ করেন দেবীশক্তি, যিনি মানুষের জীবনের দুঃখ-কষ্ট দূর করে সমৃদ্ধি ও শান্তি দান করেন।

Advertisment

নবপত্রিকা কী?

নবপত্রিকা হল নয়টি বিশেষ গাছ বা পাতার সমাহার, যা দুর্গাপূজার সময় গণেশের ডান পাশে স্থাপন করা হয়। অপরাজিতা লতা দিয়ে এই ডালগুলো বেঁধে দেওয়া হয় এবং বস্ত্রে আবৃত করে পুজো করা হয়। এই কারণে একে অনেকেই ভুলবশত 'গণেশের বৌ কলাবউ' ভাবেন। কিন্তু শাস্ত্রমতে, নবপত্রিকা আসলে দেবী দুর্গারই জীবনীশক্তির প্রতীক।

আরও পড়ুন- দুর্গাপূজায় পঞ্চমী থেকেই এখন 'মহা' শব্দটা জুড়ে দেওয়ার চল, শাস্ত্র কী বলে?

Advertisment

নবপত্রিকা মূলত নয়টি গাছের সমাহার। প্রতিটি গাছে অধিষ্ঠান করেন দেবী দুর্গার একেকটি রূপ। কলা গাছ – দেবী ব্রহ্মাণী। শক্তি ও ধৈর্যের প্রতীক। হলুদ গাছ – দেবী দুর্গা। ব্যাধি ও দুঃখ নাশিনী। অশোক গাছ – দেবী শোকরহিতা। ভয় ও দুঃখ দূর করেন। বেলগাছ – দেবী শিবা। সংসারে শান্তি আনেন। জয়ন্তী গাছ – দেবী কার্তিকী। বিজয়ের প্রতীক। মানকচু গাছ – দেবী চামুণ্ডা। অশুভ শক্তি বিনাশিনী। ধান গাছ – দেবী লক্ষ্মী। অন্ন, ধন ও সমৃদ্ধির প্রতীক। ডালিম গাছ – দেবী রক্তদন্তিকা। রক্তিম শক্তির প্রতীক। কচু গাছ – দেবী কালিকা। শত্রু বিনাশিনী শক্তি।

আরও পড়ুন- নবরাত্রির ষষ্ঠীতে পুজো হয় দেবী কাত্যায়নীর, জানেন কে তিনি, কী মাহাত্ম্য?

প্রাচীন শ্লোকেও উল্লেখ আছে – 'ব্রহ্মাণী কদলীদণ্ডে দাড়িমে রক্তদন্তিকা, ধান্যে লক্ষ্মী হরিদ্রায়াং দুর্গা মানপত্রকে।। চামুণ্ডা কালিকা কচ্চ্যাং শিবা বিল্বে প্রতিষ্ঠিতা, অশোকে শোকরহিতা জয়ন্ত্যাং কার্ত্তিকী স্মৃতা।।' এ থেকেই বোঝা যায়, প্রতিটি গাছেই লুকিয়ে আছেন মহাশক্তির রূপ।

আরও পড়ুন- কেন এদিনের ষষ্ঠীকে দুর্গাষষ্ঠী বলা হয়? এর পিছনে রয়েছে এই কাহিনি!

নবপত্রিকা পূজা আসলে প্রাকৃতিক শক্তির আরাধনা। বৃক্ষ-লতা থেকে শুরু করে স্থাবর-জঙ্গম সমস্ত জগতে দেবী মাতৃরূপে বিরাজ করেন। তাই নবপত্রিকা হল প্রকৃতির পূজা, যা মানুষকে স্মরণ করিয়ে দেয়— এই বিশ্ব সংসারের স্রষ্টা, পালনকর্ত্রী এবং সংহারিণী হলেন মা দুর্গা। 

আরও পড়ুন- ষষ্ঠীতে দুর্গাপূজার বোধন! নবরাত্রি তো শুরুই হয়ে গিয়েছে, বোধনের দরকার কী?

নবপত্রিকা বা কলাবউ কোনও সাধারণ গাছ নয়, এটি মহাশক্তির প্রতীক। প্রতিটি পাতার আড়ালে যে দেবীশক্তি লুকিয়ে আছেন, সেই শক্তিই আমাদের জীবনকে অশুভ থেকে রক্ষা করে সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ দেখান। তাই দুর্গাপূজার সময় নবপত্রিকা স্নান ও পূজা করা মানে আসলে দেবী দুর্গার নয় রূপকে আহ্বান করা।

pujo durga