মাত্র একটি রক্তপরীক্ষা, চার বছরের জন্য নিজের স্বাস্থ্য নিয়ে সুরক্ষিত থাকুন, স্ট্রোক অথবা হার্ট অ্যাটাক দৈনন্দিন জীবনের আমাদের সব থেকে বর ঝুঁকি। এবার স্ট্রোক অথবা হার্ট অ্যাটাক হওয়ার চার বছর আগেই জেনে নিন আপনার জন্য রিস্ক ফ্যাক্টর ঠিক কতটা!
পরীক্ষায় ১১ হাজার অংশ গ্রহণকারীদের করা একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে চার বছর আগেই রোগীরা জেনে নিতে পারছেন তাদের স্ট্রোক অথবা হার্ট ফেলিওরের সম্ভাবনা ঠিক কতটা। কলোরাডোর এক মার্কিন সংস্থা এই গবেষণাটি পরিচালিত করেছে। পরীক্ষাটি রক্তে প্রোটিন পরিমাপের উপর নির্ভর করে।
মূলত রক্তে উপস্থিত ট্রোপোনিন প্রোটিনের মাত্রার উপর নির্ভর করে হৃত্পেশীর স্বাস্থ্য। হৃত্পেশীতে কোনওরকম প্রদাহ তৈরি হলে রক্তে ট্রোপোনিনের পরিমাণ বেড়ে যায়। হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা নির্ধারণের ক্ষেত্রে ট্রোপোনিন বায়োমার্কার হিসেবে কাজ করে থাকে। যার উপর ভিত্তি করেই এই রক্ত পরীক্ষার রেজাল্ট নির্ধারণ করা হয়েছে।
পরীক্ষার ফলাফলের স্বচ্ছতা নিয়েও বিজ্ঞানীর ১০০ শতাংশ নিশ্চিত। সম্প্রতি এই গবেষণাটি সায়েন্স ট্রান্সলেশনাল মেডিসিন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। তাতে বলে হয়েছে এই গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল একটি প্রোটিওমিক প্রগনোস্টিক পরীক্ষা তৈরি করা যা স্ট্রোক এবং হার্ট ফেলিওর সম্পর্কে আগাম সতর্কতা প্রদান করে।
আরও পড়ুন: বাচ্চাদের মধ্যেও উদ্বেগ বাড়াচ্ছে উচ্চ রক্তচাপ! আপনার সন্তান এই তালিকায় নেই তো?
বিজ্ঞানীরা ২২ হাজার ৮৪৯ জনের রক্তের নমুনা থেকে ৫০০০ প্রোটিন পরিমাপের ভিত্তিতে ২৭টি বিশেষ ধরণের প্রোটিনকে শনাক্ত করেছে যা হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক বা এমনকি হার্ট ফেইলিওরের চার বছরের সম্ভাবনার পূর্বাভাস দিতে পারে। গবেষণার প্রধান বিজ্ঞানী স্টিফেন উইলিয়ামস দ্য গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘এই পরীক্ষার মাধ্যমে একজন ব্যক্তির কি উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন, কোন ধরণের চিকিৎসা অথবা ওষুধ তিনি খাচ্ছেন, কী কী পরিবর্তন জীবনযাত্রায় আনা প্রয়োজন তার একটা আভাস পাওয়া যাবে’।
নতুন এই পরীক্ষার ভারতের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করতে পারে। যেখানে কার্ডিওভাসকুলার রোগ যেমন ইস্কেমিক হার্ট ডিজিজ এবং সেরিব্রোভাসকুলার যেমন স্ট্রোকের জন্য প্রতি বছর ১ কোটির বেশি মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য (WHO) অনুসারে, বিশ্বব্যাপী স্ট্রোকের কারণে বিশ্বে পাঁচ ভাগের একভাগ মৃত্যু ঘটছে ভারতে।