রবিবারই কোজাগরী লক্ষ্মীর আরাধনা করেছে বাঙালি। ধনদেবীর আরাধনার মাধ্যমে জীবনের সার্বিক উন্নতির কামনা করেছে দেবী লক্ষ্মীর কাছে। এছাড়াও প্রতি বৃহস্পতিবারও গৃহের দেবতা লক্ষ্মীর আরাধনা করেন ভক্তরা। উদ্দেশ্য থাকে সেই, অর্থাৎ জীবনের সর্বাঙ্গীণ উন্নতি। হিন্দুশাস্ত্রে অবশ্য জীবনের নানা পর্যায়ের সঙ্গেই দেবী লক্ষ্মী জড়িয়ে রয়েছেন।
এজন্য দেবী লক্ষ্মীর নানা রূপের আরাধনার কথাও রয়েছে শাস্ত্রে। এর মধ্যে প্রধান হল অষ্টলক্ষ্মীর আরাধনা। এই অষ্টলক্ষ্মী হলেন দেবী লক্ষ্মীর আটটি বিশেষ রূপ। যে রূপের আরাধনার মাধ্যমে ভক্তরা জীবনের মানোন্নয়ন ঘটাতে পারেন। বহু জায়গায় অষ্টলক্ষ্মীকে একযোগে পূজা করা হয়। আবার, প্রয়োজনের ভেদে এই আট রূপের কোনও বিশেষ রূপের পুজোও করা হয়ে থাকে। আর, এই আট রূপের মাধ্যমে সুখ, সমৃদ্ধি, সুস্বাস্থ্য, জ্ঞান, শক্তি, সন্তান, ক্ষমতা- সবকিছুই লাভ করে থাকেন ভক্তরা।
শ্রীঅষ্টলক্ষ্মী স্ত্রোত্র অনুযায়ী, এই আট রূপের মধ্যে প্রধান রূপ হল দেবী আদিলক্ষ্মীর। তিনি দেবী মহালক্ষ্মী নামেও পরিচিত। কথিত আছে, দেবী আদিলক্ষ্মী মহর্ষি ভৃগুর কন্যা। তিনি সমুদ্র মন্থনের পর উঠে এসেছিলেন বলে সমুদ্রকন্যা নামেও পরিচিত। দেবী আদিলক্ষ্মী শ্রীবিষ্ণুকে তাঁর স্বামী হিসেবে বরণ করে নিয়েছিলেন। দেবী আদিলক্ষ্মী বা মহালক্ষ্মীর আরাধনা করলেন রোগভোগ থেকে মুক্তি পান ভক্তরা। শুধু তাই নয়, তিনি কড়ি, রত্ন এবং মুক্তার অধিষ্ঠাত্রী দেবী।
আরও পড়ুন- জাগ্রত দেবী গোটা গ্রামের আরাধ্যা, ঘরের বদলে এলাকার মন্দিরেই হয় কোজাগরীর পূজা
দেবী আদিলক্ষ্মীর পরই ভক্তরা বেশি আরাধনা করেন দেবী ধনলক্ষ্মীর। দেবী ধনলক্ষ্মীর আরাধনা করলে অর্থ ও সোনা লাভ করেন ভক্তরা। দেবী ধনলক্ষ্মী সাধককে যাবতীয় বৈষয়িক সুখ ও সমৃদ্ধি দান করেন। দেবী ধনলক্ষ্মীর পরই আসে দেবী ধান্যলক্ষ্মীর কথা। দেবী ধান্যলক্ষ্মী কৃষিসম্পদদাত্রী। বহু কৃষক তাঁর বাড়িতে নবান্নে ধান্যলক্ষ্মীর পুজো করে থাকেন। এরপরই আসে দেবী বিদ্যালক্ষ্মীর কথা। বিদ্যালক্ষ্মী দেবী ভক্তকে নানাপ্রকার জ্ঞান দান করেন। শুধু তাই নয়, তিনি ধনও দান করে থাকেন। এরপরই নাম আসে দেবী সন্তানলক্ষ্মীর। দেবী সন্তানলক্ষ্মীর আরাধনা করলে সন্তানসুখ পান ভক্তরা।