গত দুবছর ধরে মাস্ক মানুষের জীবনে নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটিকে ছাড়া বেরনো প্রায় অসম্ভব ছিল, চারিদিকে করোনা সংক্রমণ এবং তার সঙ্গেই মৃত্যুভয় - এই আতঙ্কে একেবারেই মানুষের যায় যায় অবস্থা। গত কিছুদিনে একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে মানুষ মাস্ক পড়া থেকে যথেষ্ট বিরত থাকছেন। একেতেই প্রচন্ড গরম তার মধ্যে দেশের কিছু কিছু জায়গায় এটি ব্যবহার আর বাধ্যতামূলক নয়- এমন বক্তব্যেই যথেষ্ট পরিমাণ গাফিলতি দেখা যাচ্ছে। তবে অতিরিক্ত তাড়াতাড়ি এই অভ্যাসের বর্জন কী সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে?
অনেক চিকিৎসকের থেকেই শোনা যাচ্ছে মাস্ক পড়ে থাকা অবশ্যই দরকার। শুধুই করোনা সংক্রমণ না বরং নানান ভাইরাল ফিভার তথা ইনফ্লুয়েঞ্জা কিংবা সোয়াইন ফ্লু এই থেকেও সমস্যা দেখা দিতে পারে। বর্তমানে দিল্লি এবং মহারাষ্ট্রে মাস্ক পড়া বাধ্যতামূলক নয়, এই বিষয়টিকে মনে রেখেই ভাইরলজিস্ট টি জ্যাকব জন বলেন, ভারতে করোনা মহামারীর প্রভাব একেবারেই শুন্য তাই মাস্ক না পড়লেও চলবে।
যদিও বা অত্যধিক ভিড় কিংবা যাত্রাপথে বাস ট্রেন এগুলিতে মাস্ক পড়ে থাকলেই ভাল। প্রথম কথা ধুলোবালি এবং দ্বিতীয়, সাধারণ কোল্ড কিংবা নানান ভাইরাস এগুলির প্রভাব কিন্তু মারাত্মক ভাবে শরীর খারাপ করতে পারে। এই অভ্যাস রোগের থেকে মানুষকে দূরে রাখতে পারে। বিশেষ করে যারা, কিডনি কিংবা হার্ট রোগী তাদের ভিড় জায়গায় অবশ্যই মাস্ক পড়া উচিৎ।
অন্যদিকে চিকিৎসক রবি শেখর ঝা বলছেন, একেবারে এই অভ্যাস তুলে দেওয়া কিংবা ঝেড়ে ফেলা উচিত নয়। এর আগে দ্বিতীয় ঢেউ আসার পরে মানুষ যেভাবে আক্রান্ত হয়েছিলেন কিংবা তাদের প্রাণ গিয়েছিল সেটিকে মাথায় রেখে যথেষ্ট সতর্ক থাকা উচিত। ভ্যাকসিন থাকলেও সেটি যথাযথ ভাবে মানুষকে সুস্থ রাখতে পারবে না, তাই রোগের ভয়াবহতা না থাকলেও এটির পরবর্তী প্রভাব কিন্তু সাংঘাতিক হতে পারে। তিনি আরও বলেন লং কো ভিড সম্পর্কে অনেকেই জানেন, এমন অবস্থায় গাফিলতির জেরে ফের আক্রান্ত হবেন সেটি না হলেই ভাল।
করোনা সংক্রমন যদিও বা কমেছে, তবে তার সঙ্গে পাল্লা দিয়েই সোয়াইন ফ্লু এবং সাধারণ জ্বরের মাত্রা যথেষ্ট বেড়েছে। তাই মাস্ক না খোলার ইঙ্গিতই বারবার মিলছে চিকিৎসকদের তরফে। আবার চিকিৎসক অক্ষয় বুধার্যা বলছেন, বাধ্যবাধকতা এবং সাধারণ পরিবেশ দুটির মধ্যে তফাৎ রয়েছে। একথা একেবারেই ঠিক যে মাস্ক পড়ার প্রয়োজনীয়তা নেই তবে যারা আগে থেকেই অসুস্থ কিংবা শারীরিকভাবে দুর্বল তাদের কিন্তু অবধারিত মাস্ক পড়তে হবে। ফ্যাশনের কারণে একে এখনই সম্পূর্ন বাদ দেওয়া উচিত নয়। পরবর্তী দিনে যাতে বিপদ না বাড়ে তাই সতর্ক এখন থেকেই হওয়া উচিত, কখন মাস্ক পড়বেন আর কখন নয় সেই বিষয়েও জ্ঞান থাকা উচিত। তবেই মঙ্গল!