প্রতিদিনের খাবারে ডাল সব বাড়িতে হয়েই থাকে। আর শরীর সুস্থ রাখতে সঙ্গে সুস্বাদু খাবার হিসেবে বাদামের জুড়ি মেলা ভার। বেশিরভাগ ডাল জাতীয় শস্য রান্না করার আগেই সেটি বেশ কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখা হয়, তার মধ্যে ছোলা, তুও, এবং তরকার ডাল প্রায় একরাত ধরে ভিজিয়ে রাখার পর তারপরেই রান্না করা হয়। এমনকি ব্যতিক্রম নয় বাদামের ক্ষেত্রেও। বেশ কিছু বাদাম যেমন আলমন্ড, কাজু এবং আখরোট অনেক সময় জলে ভিজিয়ে রেখেই পরবর্তীতে রান্নার ক্ষেত্রে কাজে লাগান হয়।
আচ্ছা, কখনও কি ভেবে দেখেছেন এমন করার কারণ কি? বাদাম এবং ডাল ভিজিয়ে রাখার বিষয়ে বেশ কিছু মিথ আছে, প্রথমত এটি জলের সাহায্যে নিজেকে নরম করে তুলতে পারে ফলে বেশ সহজ উপায়ে তাড়াতাড়ি রান্না সম্পন্ন হয় এবং দ্বিতীয়ত এর কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, যা শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে।
পুষ্টিবিদ নমামী আগরওয়াল, এই বিষয়ে কিছু ধারণা এবং তথ্য শেয়ার করেছেন। কীভাবে শরীরের সর্বোত্তম পুষ্টির ক্ষেত্রে ভেজানো বাদাম এবং বিশেষত মুসুর ডাল কাজ করে সেই বিষয়ে ইনস্টাগ্রামে ভিডিও শেয়ার করেছেন তিনি। জানান, আলমন্ডের মতো বাদাম স্বাস্থ্যকর প্রোটিন, উপকারী ফাইবার এবং প্রচুর ভিটামিন এবং পুষ্টি সরবরাহ করে। তবে এর থেকে কিন্তু হতে পারে নানান ধরনের সমস্যা। অতিরিক্ত পরিমাণে ডাল এবং বাদাম অনেকেই হজম করতে পারেন না সহজে। তার সঙ্গে অ্যালার্জি, পেটের গোলযোগ তো আছেই। তাই নিজের শরীর বুঝে পরিমাণ অল্প হিসেবেই খাওয়া উচিত। তার সঙ্গে তিনি আরও বলেন, ডাল এবং বাদাম জলে ভিজিয়ে রাখলে এর পুষ্টি বিরোধী উপাদান কমে যায়, যার ফলে শরীরে সঠিক পরিমাণে প্রয়োজনীয় সামগ্রী যেমন পৌঁছায় তেমনই হাত পা ফোলা কমে যায়, গ্যাস এবং হজমের সমস্যা দূর হয়।
আরও পড়ুন সারাদিনে শরীর সঠিক মাত্রায় না চললে কী হতে পারে জানেন?
কেন ভিজিয়ে খাওয়া উচিত ?
বিশেষজ্ঞদের মন্তব্য অনুসারে, বাদাম এবং ডাল জাতীয় শস্যে ফাইটিক অ্যাসিডের আবরণ থাকে যেটি তাদের বৃদ্ধিতে সহায়ক হলেও,মানবদেহের গোলমাল ঘটায়। হজমে এবং পুষ্টির ঘাটতির সৃষ্টি করে। তবে ফাইটিক অ্যাসিড সব উদ্ভিদ এবং শস্যে মজুত থাকলেও, বাদাম-লেবু এবং ডাল জাতীয় খাদ্যদ্রব্যে এর পরিমাণ বেশি। শুধু তাই নয়, এতে উপস্থিত ট্যানিন এবং পলিফেনলের মাত্রাও হ্রাস করে যা শরীরের আয়রন, দস্তা এবং ক্যালসিয়াম সহ খনিজ শোষণের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। ছোলা এবং মটর জাতীয় খাবারে পাওয়া প্রোটিন মানবদেহের পক্ষে বেশ উপযোগী।
ভেজানোর সঠিক পদ্ধতি:
• কমপক্ষে দুই থেকে আট ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখা উচিত।
• ডাল জাতীয় শস্য ভেজানোর সময় আগে একবার ভালও করে ধুয়ে নিন। তারপর জল দিয়ে ভিজিয়ে রাখুন। পরে, রান্না করার আগে পুরনো জল ফেলে দিয়ে নতুন ঠান্ডা জল দিয়ে আরেকবার ধুয়ে নিন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন