যে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ঋতুস্রাব হলে এখনও মেয়েদের একঘরে করে দেওয়া হয়, মনে করা হয় মেয়েরা এই সময় 'অশুদ্ধ', সে দেশেই আবার কোথাও উদযাপিত হয় শারীরবৃত্তীয় এই প্রক্রিয়া। খুব বেশি দূর যেতে হবে না, প্রতিবেশী দেশ ওড়িশাতেই সম্প্রতি চারদিন ব্যাপী উদযাপিত হল রজ পর্ব, এক কথায় মেয়েদের 'নারী' হয়ে ওঠার উৎসব।
'রজ' শব্দটি এসেছে রজস্বলা থেকে। ঋতুমতী মহিলাদের সংস্কৃতে রজস্বলা বলা হয়ে থাকে। ওড়িশায় এক ধর্মীয় বিশ্বাস প্রচলিত রয়েছে জগন্নাথ দেবের স্ত্রী ভূদেবী তিন দিনের রজস্বলা দশা কাটিয়ে চতুর্থ দিন স্নান করতে যেতেন।
আরও পড়ুন, বয়স ২০৭, তবু তার জন্মদিন উদযাপনে ভাটা পড়ে না একটি বারও
রজ পর্ব উৎসবের চারটি দিনের চারটি আলাদা নামও রয়েছে। প্রথম দিনটি পহিলি রজ। দ্বিতীয় দিন মিথুন সংক্রান্তি, তৃতীয় দিন ভূ দাহ। উৎসবের একেবারে শেষ দিনটি হল বসুমতী স্নান।
সারা রাজ্য জুড়ে চাষবাসের কাজ একরকম বন্ধই থাকে এই চারদিন। মনে করা হয় ওই তিনদিনে বসুন্ধরার পুনর্জন্ম হয়। ওই কদিন বসুন্ধরা মা কে একদম বিরক্ত করে না কেউ। মেয়েরা, মায়েরা, মহিলারা সব সেজে গুজে আলতা পড়ে এই উৎসব উদযাপন করেন। উৎসবের চারদিন রোজকার ছকে বাধা জীবন থেকে ছুটি অর্ধেক আকাশের। ভালো মন্দ খেয়ে আর যেমন খুশি হেসে খেলে কেটে যায় চারটে দিন। উৎসবের প্রথম দিন সূর্যাস্তের আগে ঘুম থেকে উঠে চান করে সেজে গুজে নেয় মেয়েরা।
ভাবতে অবাক লাগে এই দেশেরই কোনও প্রান্তে ঋতুমতী মহিলারা মন্দিরে প্রবেশ করলে সারা দেশ উথাল পাথাল হয়। এই দেশে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিক্রি হয় কালো প্যাকেটে, হ্যাঁ ঝা চকচকে শপিং মলেও। কালো মোড়কের ভেতর গুঁজে দেওয়া হয় সমাজের 'গোপন' অন্ধকার।