রসগোল্লা তুমি কার, বাংলার না ওড়িশার? রসগোল্লার 'জিআই ট্যাগ' নিয়ে এতদিন লড়াই জারি ছিল বঙ্গ কলিঙ্গের। যদিও গত বছরই রসগোল্লার উৎসস্থল হিসেবে জিআই ট্যাগ ছিনিয়ে নিয়েছিল বাংলা। কিন্তু লড়াই জারি রেখেছিল মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েকের রাজ্য। সব লড়াইয়ের অবসান ঘটিয়ে সোমবার জিওগ্রাফিকাল ইন্ডিকেশন বা জিআই ট্যাগে 'রসগোল্লার জনক' রাজ্য হিসেবে ওড়িশার নাম নথিভুক্ত করল চেন্নাইয়ের জিআই রেজিস্ট্রির অফিস। শংসাপত্রে তারা জানিয়ে দিয়েছে, এবার থেকে ওড়িশার স্মল ইন্ডাস্ট্রিস কর্পোরেশন এবং উৎকল মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী সমিতির নামে নিবন্ধিত হল 'ওড়িশার রসগোল্লা' জিআই ট্যাগ ৬১২। এই নিয়ে দ্বিতীয়বারের জন্য জিআই ট্যাগ পেল ওড়িশা।
ওড়িশার এই প্রাপ্তিযোগে খুশি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক। একটি টুইট করে তিনি বলেন, "বিশ্বজুড়ে সকলের পছন্দের এই মিষ্টিটি তৈরি হয় ছানা দিয়ে। কয়েক শতাব্দী ধরে প্রভু জগন্নাথকে এই মিষ্টি ভোগে নিবেদন করা হয়।"
Happy to share that #Odisha Rasagola has received GI Tag in Geographical Indication Registry. This mouthwatering culinary delight made of cottage cheese, loved by Odias across the world, is offered to Lord Jagannath as part of bhog since centuries #OdishaRasagola pic.twitter.com/9SchxLaAcv
— Naveen Patnaik (@Naveen_Odisha) July 29, 2019
বিগত চার বছর ধরে রসগোল্লার ভৌগলিক স্বত্বের দাবিদার হওয়ার লক্ষ্যে লড়াই চলে পশ্চিমবঙ্গ এবং পড়শি রাজ্য ওড়িশার। বঙ্গের হাতে জিআই ট্যাগ আসার পরেই, গত বছর ওড়িশা সরকার জিআই রেজিস্ট্রি অফিসে 'ওড়িশার রসগোল্লা'র স্বীকৃতির জন্য আবেদন করে। পশ্চিমবঙ্গ তাদের রসগোল্লার নিজস্বতা নিয়ে জিআই ট্যাগ পাওয়ার পরই রসগোল্লার উৎস সম্পর্কে নিজেদের যুক্তি প্রদান করে লড়াইকে আরও উত্তেজক করে তোলে এই পড়শি রাজ্য।
তবে এই জিআই ট্যাগকে ঘিরে তৈরি হয়েছে একরাশ প্রশ্ন। কীভাবে প্রায় একই ধরনের মিষ্টিকে দুই রাজ্যে জিআই ট্যাগ দেওয়া হচ্ছে, সেখানেই প্রশ্ন উঠছে। তবে সেই প্রসঙ্গে জিআইয়ের উচ্চপদস্থ অফিসার প্রশান্ত কুমার বলেন, "কোনও রকম দ্বন্দ্ব ছাড়াই দুটি জিআই ট্যাগই তাদের নিজস্বতা বজায় রেখে চলতে পারবে। রসগোল্লা একধরনের মিষ্টির জেনেরিক নাম। বাংলা এবং ওড়িশার রসগোল্লার মধ্যে কিছু বৈশিষ্ট্যগত পার্থক্য রয়েছে। সেই কারণে এই সিদ্ধান্ত।" এছাড়াও উল্লেখ্য, ওড়িশার মিষ্টির নাম 'রস গোলা'। আকৃতিগত ঐক্য থাকলেও, বাংলার রসগোল্লার সঙ্গে প্রকৃতিগত অনেক তফাৎ এই মিষ্টির।
Odisha Rasagola receives Geographical Indication (GI) tag
Read @ANI Story | https://t.co/MMvrHpCB2k pic.twitter.com/GdnXJk4SRW
— ANI Digital (@ani_digital) July 29, 2019
'রসগোল্লা লড়াই' চলাকালীন পশ্চিমবঙ্গের জিআই-এর আবেদনে লেখক পঞ্চানন বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্ধৃত করে বলা হয়, যে তিনি দাবি করেছিলেন যে রসগোল্লা পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলায় প্রথম তৈরি হয়েছিল। ১৮৯৬ সালে রাখালদাস অধিকারী তাঁর কবিতাতেও রসগোল্লাকে "বাংলার সম্পদ" বলে প্রশংসা করেছিলেন।
অন্যদিকে, ওড়িশা সরকার জিআই ট্যাগের আবেদনে বলে, পঞ্চদশ শতাব্দীর শেষের দিকে ওড়িয়া রামায়ণে রসগোল্লার উল্লেখ পাওয়া যায়। এখন ওড়িশার রসগোল্লার এই জিআই ট্যাগ প্রাপ্তিতে বাংলার রসগোল্লার একচেটিয়া আধিপত্য কিছুটা হলেও হ্রাস পেল, এমনটাই মনে করছেন মিষ্টিপ্রেমীরা।
Read the full Story in English