রুকমা দাক্ষীর রান্নাবিলাস: আচার নিয়ে কথা দু'চার

ছোটবেলায় শীত পড়ার সাথে সাথেই বড়ি, আচার আর কাসুন্দির কদর বেড়ে যেত। সেই জায়গায় ছোটদের ছিল 'নো-এন্ট্রি জোন'। রইল দুটি অতীব সহজ আচারের রেসিপি।

ছোটবেলায় শীত পড়ার সাথে সাথেই বড়ি, আচার আর কাসুন্দির কদর বেড়ে যেত। সেই জায়গায় ছোটদের ছিল 'নো-এন্ট্রি জোন'। রইল দুটি অতীব সহজ আচারের রেসিপি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
jolpai er achar

জলপাইয়ের আচার। প্রতীকী ছবি

আজও আচারের বয়ামগুলোর দিকে তাকালে জল আসে জিভে। মনে পড়ে যায় ছোটবেলার পুরনো স্বাদের কথা। সে সময়ে শীত পড়ার সাথে সাথেই বড়ি, আচার আর কাসুন্দির কদর বেড়ে যেত। সেই জায়গায় ছোটদের ছিল 'নো-এন্ট্রি জোন'। ছাদ জুড়ে শুকোতো আমলকী, বড়ি, কুল, তেঁতুল কিংবা ধপধপে কাপড়ে পাঁপড়। কড়া নির্দেশ ছিল মা-কাকিমাদের - অশুদ্ধ কাপড়ে কিছু ছোঁয়া যাবে না। আচারের নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে 'আচার' কথাটি। সেটি ভাঙলেই বিপত্তি। কিন্তু দিন পাল্টেছে। মানুষের হাতে সময় কম, তার চেয়েও কম হলো তৈরি করার ইচ্ছা। এই সবের জন্য এখন দোকানই একমাত্র ভরসা। হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য়ের কথা মনে রেখে আজকের দুটি রেসিপি।

Advertisment

জলপাইয়ের মাখা আচার

উপকরণ:

জলপাই - ৫০০ গ্রাম
সর্ষের তেল - ৩/৪ কাপ
নুন - পরিমাণমতো
চিনি - ৪০০ গ্রাম
হলুদগুঁড়ো - ১ চা-চামচ
সাদা ভিনিগার - ২ চা-চামচ
শুকনো খোলায় ভাজা শুকনো লঙ্কাগুঁড়ো - ১ টেবিলচামচ
সর্ষেগুঁড়ো - ১ ১/২ টেবিলচামচ

Advertisment

প্রণালী: জলপাইগুলির মুখ কেটে নিয়ে, নুন-হলুদ মাখিয়ে রোদে রাখুন দু'দিন। বেশ মজে গেলে হাত দিয়ে চটকে নিয়ে বাকি সব উপকরণ দিয়ে ভাল করে মেখে নিতে হবে। ওই মাখা জলপাই কোনও কাচের ছড়ানো পাত্রে কাপড় দিয়ে ঢেকে রোদ খাওয়াতে হবে তিন-চার দিন। দেখবেন, চিনি গলে গিয়েছে ও বেশ একটা লালচে চেহারা নিয়েছে। ব্য়স, আপনার আচার তৈরি। তবে এই আচার খুব বেশিদিন রাখা যায় না। তাই অল্প করে বানাতে হয়। টক-ঝাল-মিষ্টি এই আচার খেতে দারুণ।

kul er achar কুলের আচার। প্রতীকী ছবি

কুলের আচার

উপকরণ:

টোপা কুল - ১ কিলো
আখের গুড় - ১ কিলো
নুন - পরিমাণমতো
হলুদগুঁড়ো - ২ চা-চামচ
পাঁচফোড়ন গুঁড়ো - ৩ টেবিলচামচ
সর্ষেগুঁড়ো - ১/২ টেবিলচামচ
শুকনো খোলায় ভাজা শুকনো লঙ্কা গুঁড়ো - ২ টেবিলচামচ
ভিনিগার - ১ টেবিলচামচ

প্রণালী: কুল ধুয়ে জল ঝরিয়ে নিন। কুলগুলো অল্প ফাটিয়ে নিয়ে নুন-হলুদ মাখিয়ে কুলোতে করে রোদে দিন। তিনদিন রোদ খাওয়াতে হবে। এতে কুলের ল্যাতল্য়াতে ভাবটা কেটে যাবে। পাঁচফোড়ন শুকনো খোলায় ভেজে গুঁড়ো করে নিন। কড়াইতে গুড় জাল দিন। জাল দেওয়া গুড়ের মধ্যে শুকনো করে রাখা কুল দিন বেশ করে। গুড় আর কুল মিশে গেলে গ্যাস বন্ধ করে দিন।

এবার শুকনো লঙ্কাগুঁড়ো, সর্ষেগুঁড়ো, পাঁচফোড়ন গুঁড়ো ও ভিনিগার দিয়ে বেশ ভাল করে মিশিয়ে নিন। দেখবেন, মশলাগুলো যেন মিহি পেষা না হয়। একটু একটু মশলা মুখে পড়লে ভাল লাগবে। আচার ঠান্ডা হয়ে গেলে কাচের বয়ামে ভরে রাখুন। মাঝে মাঝে রোদে দেবেন। এই আচার দারুণ খেতে হয় এবং অনেক দিন থাকেও।