Omicron And Plasma Therapy: দ্বিতীয় ঢেউএর সময় থেকেই করোনা ভাইরাস নিয়ে আক্রান্ত যেন অনেক বেড়ে গিয়েছে। বেশিরভাগ মানুষ এই সময়েই ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হন, এবং দেখা যায় তাদের মধ্যে তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়েছেন খুব কম সংখ্যক মানুষ। এখনও এমন অনেকে আছেন যারা পুরোপুরিভাবে নিজেকে আগের মত সুস্থ করে তুলতে পারেননি। বিশেষ করে যারা অন্যান্য শারীরিক রোগে আক্রান্ত ছিলেন তাদের অবস্থা যেন আরও খারাপ। তবে এই সময় থেকেই নিত্যনতুন চিকিৎসা পদ্ধতির খোঁজে চিকিৎসক এবং বিজ্ঞানীরা। মানুষকে সুস্থ করে তুলতে কত কিই না পথ খুঁজেছেন তারা।
এর মধ্যেই প্লাজমা থেরাপির প্রসঙ্গ উল্লেখ না করলেই নয়। চিকিৎসকদের আবিষ্কৃত এই কনভালেসেন্ট প্লাজমা থেরাপি ওমিক্রনকে দমন করতে পারবে কিনা সেই নিয়েও মতভেদ কম নেই, এর আগে অবশ্য এই পদ্ধতি অবলম্বন করে অনেক মানুষকে বাঁচান সম্ভব হয়েছে তবে আদৌ এটি কার্যকরী কিনা সেই নিয়েও ভিন্নমত শোনা যায়।
কনভালেসেন্ট প্লাজমা থেরাপি আসলে কী?
গবেষণা বলছে, এটি এমন একটি বিষয় যখন কোনও ব্যক্তি ভাইরাস দ্বারা অসুস্থ হয়ে পড়েন তখন তার শরীরে ভাইরাসের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। ভাইরাসের প্রতিরোধী এই প্লাজমা গুলি মানবদেহে রক্তেই ভাসমান অবস্থায় থাকে। এবং এই থেরাপির দ্বারা ঠিক কী করা হয়? চিকিৎসকরা করোনা জয়ী মানুষদের দেহ থেকে প্লাজমা বের করেন, আদৌ এটি নিরাপদ কিনা সেই নিয়ে অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষা চালান, এবং পরবর্তীতে যারা এই ভাইরাসের সংক্রমণে ভুগছেন তাদের ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করা হয়।
ওমিক্রন সংক্রমণে এটি কাজে আসতে পারে?
চিকিৎসকরা বলছেন এর আগে মানুষ ডেল্টা দ্বারাই আক্রান্ত হন। এবং এটির মিউটেশন মাত্রা অনেক কম ছিল। তাই যে পরিমাণ অ্যান্টিবডি মানবদেহে তৈরি হয়েছে তার প্রেক্ষিতে ওমিক্রনের সঙ্গে পাল্লা দেওয়া বেশ মুশকিল। যেহেতু বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে ওমিক্রন ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা খুব কম, এবং অ্যান্টিবডি তৈরি হতেও বেশ কিছুদিন সময় লাগে, তাই তাৎক্ষণিক কিছু করা চিকিৎসাবিজ্ঞানে সম্ভব নয়। তবে ডেল্টা ভাইরাস থেকে সুস্থ হওয়া মানুষের প্লাজমা ব্যবহার করে আদৌ রেহাই সম্ভব কিনা সেই নিয়ে চিন্তা ভাবনা প্রয়োজন।
এপ্রসঙ্গে WHO এর পরামর্শ কী?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে অমিক্রন সংক্রান্ত গাইডলাইন পেশ করা হয়েছে। কোভিড ১৯ সম্পর্কিত নির্দেশিকা অনুযায়ী, যাদের লক্ষণ একেবারেই কিঞ্চিৎ মাত্র, তাদের জন্য প্লাজমা থেরাপির ব্যবহার সঠিক নয় বলেই জানানো হয়েছে। যাদের মধ্যে ওমিক্রনের ক্রনিক লক্ষণ দেখা যাচ্ছে তাদের ক্ষেত্রে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের মাধ্যমে এটির প্রয়োগ করা সম্ভব।
ICMR - এই প্রসঙ্গে ধারণা দিয়েছেন সমস্ত বিষয়টিই সন্দেহজনক। কারণ এমন রোগীদেরও হদিশ মিলেছে যাদের প্লাজমা থেরাপি পাওয়ার পরেও মধ্যম লক্ষণ রয়েছে। তাই এর কার্যকারিতা কতটা প্রভাবশালী সেই নিয়েও আলোচনা প্রয়োজন। অসুস্থ অবস্থায় প্লাজমা দিলেই যে তিনি সুস্থ হয়ে যাবেন, এমন কোনও প্রমাণ নেই। মৃত্যু হয়েছে এমন ব্যক্তির মধ্যেও প্লাজমা থেরাপি ব্যবহার করা হয়েছিল- তাই, ওমিক্রন থেকে মুক্তি পেতে প্লাজমা থেরাপি কাজে দেবে কিনা এই নিয়েও বাদানুবাদ থাকছেই।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন