ভক্তদের দাবি, এই মন্দিরে এসে মানসিক অসুস্থ সুস্থ হয়ে গিয়েছেন। তিনি দিব্যি চুটিয়ে ব্যবসা করছেন। দৃষ্টিহীন ব্যক্তি দৃষ্টি পেয়েছেন। তিনি চাকরি করছেন। এখানে দেবীর কাছে মন থেকে যা নাকি চাওয়া হয়, সব পাওয়া যায়। আজও সেই সব অলৌকিক কাণ্ড-কারখানা নাকি ঘটে চলেছে এই মন্দিরে। যার সাক্ষী হতে দূর-দূরান্ত থেকে অসংখ্য ভক্ত এখানে ভিড় করেন প্রতিদিন।
শুধু কী তাই? এই মন্দিরের জন্মলগ্ন থেকে জড়িয়ে আছে অলৌকিক সব ঘটনা। দেবীর স্বপ্নাদেশে পাওয়া গিয়েছিল প্রস্তরখণ্ড। গ্রামবাসীদের সাহায্যে তা উদ্ধার করেছিলেন স্থানীয় সাধক লালবাবা। তারপর ধীরে বদলেছে এই মন্দিরের চেহারা। এটি একটি সতীপীঠ। ৫১ সতীপীঠের অন্যতম এই পীঠস্থান। ভক্তদের দাবি, উদ্ধার হয় পাথরটি দেবী সতীর দেহের অংশ।
এই সতীপীঠে দেবীর নাম ভ্রামরী। কথিত আছে অরুণাসুরকে বধের জন্য দেবী অসংখ্য ভ্রমরের রূপ ধারণ করেছিলেন। সেই থেকে দেবী পরিচিত হন ভ্রামরী নামে। আর তাঁর ভৈরবের নাম ঈশ্বর বা জল্পেশ। জলপাইগুড়ির বোদাগঞ্জে রয়েছে দেবী ভ্রামরীর মন্দির। মন্দিরের তোরণদ্বারে লেখা আছে, ৫১ পীঠ ত্রিস্রোতা মা ভ্রমরীদেবীর মন্দির, বৈকুণ্ঠপুর শালবাড়ি, জোড়াবট, বোদাগঞ্জ, জলপাইগুড়ি।
জলপাইগুড়ি জেলার গোশালা মোড় থেকে এই মন্দিরের দূরত্ব প্রায় ১৬ কিলোমিটার। বেলাকোবা থেকে এর দূরত্ব প্রায় ১০ কিলোমিটার। আর, শিলিগুড়ি থেকে গাজলডোবা হয়ে এই মন্দিরের দূরত্ব প্রায় ৩৬ কিলোমিটার। মন্দিরের পথে রাস্তায় দু'পাশে রয়েছে বড় আকারের পরপর শাল, সেগুন গাছ। মন্দির চত্বরের কাছেই রয়েছে পার্কিং জোন। আছে পুজোর সামগ্রী কেনার দোকানও। ভক্তদের রীতিমতো বিস্ময় জাগিয়ে মন্দির চত্বরে রয়েছে ভোলানাথের বিরাট মূর্তি। যা প্রায় ৩০ ফুট লম্বা।
আরও পড়ুন- এই মন্দির থেকে খালি হাতে ফেরেন না ভক্তরা, জাগ্রত দেবী সর্বমঙ্গলা
ভক্তদের দাবি, এখানে দেবীর বাম পা এসে পড়েছে। আবার ভক্তদের একাংশের মতে, এখানে দেবীর বাম পায়ের বুড়ো আঙুল এসে পড়েছে। এখানে দেবীর সঙ্গে রয়েছেন ভোলানাথ এবং নন্দী মহারাজ। এই মন্দিরে দেবীর বিভিন্ন রূপ অত্যন্ত সুন্দরভাবে মূর্তির আকারে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। মন্দির চত্বরে রয়েছে জোড়া বটগাছ। সেই দুটি বটগাছ ওপরে উঠে গিয়ে একসঙ্গে হয়ে একটি বটগাছে পরিণত হয়েছে। এই বটগাছের নীচে ভক্তরা ধূপ-ধুনো দেন ও প্রদীপ জ্বালান। পাশাপাশি, মনস্কামনা পূরণের জন্য সুতোও বাঁধেন। মন্দির চত্বরে পুণ্যার্থীদের বসার ব্যবস্থা রয়েছে। পাশাপাশি, তৈরি হয়েছে নতুন মন্দির।