করোনার নতুন ভেরিয়েন্ট দ্রুতহারে ছড়াচ্ছে। গোটা বিশ্বের একই ছবি। ভারতেও সেই ভেরিয়েন্ট প্রবেশ করেছে কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে অভিজ্ঞতা থেকে দেশবাসীর মধ্যে করোনা নিয়ে আতঙ্ক নেহাত কম নয়। সকলেই জানতে চাইছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু কী বলছে? কারণ, অতীতে দেখা গিয়েছে, সংক্রমণের আগে বারবার হু সতর্ক করেছে। এবার হু-এর বক্তব্য জানালেন সৌম্যা স্বামীনাথন। তাঁর নামটা করোনার ব্যাপক প্রাদুর্ভাবের সময় গোটা বিশ্ব জেনে গিয়েছে। তিনি হু-এর প্রধান বিজ্ঞানী। এখন অবশ্য তার আগে প্রাক্তন কথাটা বসে গিয়েছে।
সেই সৌম্যা স্বামীনাথন বলেছেন, করোনার গতিপথ নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা খুবই কঠিন। এটি ধীরে ধীরে একটি সাধারণ সংক্রমণে পরিণত হবে। তবে যতক্ষণ না সেটা হচ্ছে, টিকাই হচ্ছে করোনার বিরুদ্ধে প্রধান এবং শক্তিশালী প্রতিরোধমূলক হাতিয়ার। ডা. সৌম্যা স্বামীনাথনের কথায়, 'ভ্যাকসিন দেওয়ার ক্ষেত্রে এখনও বিশ্বব্যাপী বৈষম্য আছে। আর, এর সমাধান দরকার। এখনও পর্যন্ত, করোনার মূল ভ্যাকসিনের তৃতীয় ডোজ অত্যন্ত ভালোভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলছে। আর, যে সমস্ত দেশে বাইভ্যালেন্ট ভ্যাকসিন (বুস্টার) নেই, সেখানে মূল ভ্যাকসিনই ব্যবহার করা উচিত।'
বর্তমানে চিন এবং কয়েকটি দেশে করোনা দ্রুতহারে বাড়ছে। আমাদের ভৌগলিক নৈকট্য এবং ঘনঘন বিমান যোগাযোগের প্রেক্ষিতে নতুন তরঙ্গ সম্পর্কে চিন্তা করার অবশ্যই দরকার আছে। যখন বিশ্ব স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসার চেষ্টা করছে। করোনাকে ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করছে। সেই সময় ফের করোনা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে। করোনা নতুন রূপে ফিরে এসেছে। সেই ভবিষ্যদ্বাণীও আগেই করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বিজ্ঞানীরা আরও বলছেন, এটাই শেষ নয়। নতুন বছরে করোনার অন্য রূপও দেখা যাবে। যেমনটা গত তিন বছর ধরে বিশ্ববাসী দেখে চলেছে।
কিন্তু, তাই বলে করোনার নতুন স্ট্রেনকে এখনই ভেরিয়েন্টস অফ কনসার্ন বা VoC অর্থাৎ উদ্বেগজনক ভিওসি বলতে পারছে না হু। তার কারণ, সেই তকমা কেবল তখনই দেওয়া সম্ভব, যখন আরও গুরুতর রোগ সৃষ্টি করবে। ব্যাপক ক্ষতিকারক হয়ে উঠবে। অনেক বেশি সংক্রমণযোগ্য হয়ে যাবে। চিনে বর্তমানে সংক্রমণ ব্যাপকহারে বাড়ছে। কিন্তু, ২০২২ সালের আগে কিন্তু, চিনে সেভাবে সংক্রমণ ছড়ায়নি। আর, তাতে খুশি চিন বিধিনিষেধ সামান্য তুলতেই দেখা গিয়েছে ব্যাপকহারে সংক্রমণ ছড়ানো শুরু করে দিল।
আরও পড়ুন- আগামী ৪০ দিন সতর্ক থাকতেই হবে, না-হলে বিপদ, আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চিন যেহুতু আগে গণহারে করোনা সংক্রমণের মধ্যে পড়েনি, সেই কারণে চিনের নাগরিকদের মধ্যে সংক্রমণ রোধ করার ক্ষমতাও তেমন একটা জন্ম নেয়নি। শুধু তাই নয়, চিনের বিপুল সংখ্যক মানুষ করোনার টিকাও পাননি। বুস্টার ডোজ তো বহু দূরের ব্যাপার। সেই কারণেই ওমিক্রন ভারতের প্রতিবেশী দেশটিকে ব্যাপকহারে ছড়াতে পেরেছে। তবে, এতে সন্তুষ্ট থাকতে নারাজ ভারত থেকে হু, কোনও স্তরের বিজ্ঞানীই। তাঁরা বরং, পরিস্থিতিতে নজর রাখার ওপর বিশেষ জোর দিচ্ছেন।
Read full story in English