অতীত ভুলতে নিজেই হয়ে উঠুন আপনার মনের ডাক্তার

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, অতীতের অনেক না পাওয়া বা হেরে যাওয়াগুলোই আমাদের ডিপ্রেশনের জন্য অনেকাংশে দায়ী। আপনার জন্য রইল এবিষয়ে কিছু সুলুক সন্ধান।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, অতীতের অনেক না পাওয়া বা হেরে যাওয়াগুলোই আমাদের ডিপ্রেশনের জন্য অনেকাংশে দায়ী। আপনার জন্য রইল এবিষয়ে কিছু সুলুক সন্ধান।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
depression

ডিপ্রেশনকে বাড়তে দেবেন না।

ডিপ্রেশন নাকি মন খারাপ, এটা আমাদের অনেকের কাছেই একটা বড় ধাঁধা। অনেকসময়ই আমরা বুঝে উঠতে পারিনা আমাদের মনের আসল অসুখটা ঠিক কী? রেজাল্ট খারাপ বা ফুটবল ম্যাচ হেরে যাওয়ার দুঃখ কিন্তু ডিপ্রেশন নয়। বহুদিন ধরে পারিপার্শিক অনেক কঠিন অবস্থার সঙ্গে যুঝতে যুঝতে ক্লান্ত হয়ে পড়ি আমরা অনেকেই। আর এখান থেকেই শুরু হয় যাবতীয় সমস্যা।

Advertisment

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, অতীতের অনেক না পাওয়া বা হেরে যাওয়াগুলোই আমাদের ডিপ্রেশনের জন্য অনেকাংশে দায়ী। আর এই দৈনন্দিন সমস্যাগুলি অনেকেই কাটিয়ে উঠতে পারেননা। কাজেই অতীত ভুলে আবার নতুন করে শুরু করুন। আপনার জন্য রইল এবিষয়ে কিছু সুলুক সন্ধান।

depression1 ডিপ্রেশন কোনটা বুঝুন

Advertisment

আরও পড়ুন, অফিস জীবনের শুরু? ঘাবড়ে না গিয়ে মাথায় রাখুন এই কটা দিক, সহজ হবে দিনগুলো!

হয়ে উঠুন নিজেই নিজের সাইকোলজিস্ট
আসলে কোনও মানুষ নয়, এসমস্ত ক্ষেত্রে আসলে দায়ী সেই মুহূর্তগুলিই, তা সে ভাল বা খারাপ যাই হোক না কেন। সেই সমইয়ের কথা ভেবেই আমরা বেশিরভাগ সময়ই ভেঙে পড়ি। প্রথমে মনস্থির করুন যে না পাওয়াগুলো নিয়ে আর ভাববেন না। জীবন আপনাকে ভাল কী দিয়েছে এবার থেকে সেগুলো ভাবুন, দেখবেন তালিকাটা খুব ছোট নয়। জীবনের পজিটিভ দিকগুলো সম্পর্কে নিজেকে বোঝান। এভাবে নিজেই নিজের সাইকোলজিস্ট হয়ে উঠতে পারবেন অনায়াসেই।

পরিস্থিতিকে মেনে নিতে শিখুন
যা ঘটছে সেগুলি আপনি বদলাতে পারবেন না, কাজেই মেনে নেওয়াই শ্রেয়। কোন পরিস্থিতিই বদলানো আপনার একার পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু আপনি চাইলেই বদলে নিতে পারেন নিজেকে। সুতরাং নিজেকে বোঝান 'যা গেছে তা যাক', যা আছে তাকে নিয়ে বাঁচতে শিখুন। হতে পারে অকারণে অতীতকে আঁকড়ে ধরে রেখে নিজের অজান্তেই সুন্দর একটা ভবিষ্যত নষ্ট করে ফেলছেন আপনি।

কয়েনের দু-পিঠ
সবসময় খারাপ দিকটা না দেখে জীবনের ভাল দিকগুলিও দেখুন। ভাবুন যে ঘটনার কথা ভেবে আপনি কষ্ট পাচ্ছেন তা না ঘটলে আর কী কী ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। কাজেই নিজেকে বোঝান যা হয়েছে তা ভালর জন্যই হয়েছে। শুধু খারাপ নয়, আপনার চারপাশে ভাল থাকারও রসদ রয়েছে প্রচুর। এবার খুঁজতে শুরু করুন সেগুলি।

প্রয়োজনীয়তার গুরুত্ব
অতীত তো চলেই গেছে, তাই বিগত ঘটনা নিয়ে অযথা ভেবে আদৌ কোনও লাভ আছে কি? ভেবে দেখুন। অতীত ভেবে কষ্ট পাবেন নাকি ভবিষ্যতে কীভাবে ভাল থাকবেন সেটা নিয়ে চিন্তা করবেন, এই সিদ্ধান্ত নিতে হবে নিজেকেই। এ ক্ষেত্রে বল কিন্তু আপনার কোটেই, গোল হাঁকাবেন নাকি মিস, সেটা স্থির করুন নিজেই।

মুছতে শিখুন
কথাতেই আছে 'আউট অফ সাইট, আউট অফ মাইন্ড'। সেসমস্ত বিষয় আপনাকে অতীত নিয়ে ভাবতে বাধ্য করে সেগুলো থেকে নিজেকে দূরে রাখুন। সেটা কোনও মানুষ হতে পারে যেমন বন্ধু বা আত্মীয়, অথবা কোনও ছবি বা উপহারও হতে পারে। যা আপনাকে জোর করে অতীত নিয়ে ভাবতে বাধ্য করে সেসব বিষয় থেকে নিজেকে সরিয়ে নিন।

আরও পড়ুন, অন্যদের ক্ষমা করতে শিখুন, মানসিক শান্তি মিলবে হাতেনাতেই

শেষে
প্রতিযোগিতার ইঁদুর দৌড়ের তাল মেলাতে গিয়ে আমরা প্রত্যেকেই হাঁফিয়ে উঠি একটা সময়ের পর। আমাদের পারিপার্শিক সমাজ যত আধুনিক হবে, প্রতিযোগিতাও ততই বাড়বে এবং পাল্লা দিয়ে বাড়বে আমাদের মানসিক সমস্যাগুলিও। পরিসংখ্যানটা শুনলে হয়ত অবাক হবেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২০ সাল নাগাদ ডিপ্রেশন নামক রোগটি মহামারির আকার ধারণ করতে পারে। এপ্রসঙ্গে ডাঃ অরিজিত দত্ত বলেন, "এই মূহূর্তে এদেশের প্রতি ১০০ জন মানুষের মধ্যেই প্রায় ১০ জনই ডিপ্রেশনের শিকার।"

কাজেই আপনার মানসিক যেকোনও সমস্যা জটিল আকার ধারণ করবার আগেই নিজেকে বাঁচান। ডিপ্রেশন একবার মাথাচাড়া দিলেই সাইক্রিয়াট্রিস্টের পরামর্শ নিন। সচেতনতার অভাবে আপনার ডিপ্রেশনটি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। অনেকেই মনে করেন, মানসিক সমস্যায় চিকিৎকের পরামর্শ নেওয়া মানেই পাগল প্রমানিত হওয়া। যা একেবারেই ভুল ধারণা। কাজেই রোগটা জাঁকিয়ে বসার আগে, তাকে গোড়াতেই নির্মূল করুন।