ভারতের কোণে কোণে ছড়িয়ে রয়েছে অধ্যাত্মবিদ্যা, মহাশক্তির বিচ্ছূরণ। এদেশ বহু সাধু-সন্তের জন্ম দিয়েছে। যাঁদের সিদ্ধাই দেখে বারবার হতচকিত হয়েছে গোটা বিশ্ব। কী করে এটা সম্ভব, তার থই খুঁজে পায়নি আজও। বিজ্ঞানের যুক্তিজাল বিস্তারের চেষ্টা করেছে। কিন্তু, ওটুকুই। কোনও লাভ হয়নি। সেই ধারা নিরন্তর চলছে।
এদেশে আজও বহু ধর্মস্থান আছে, যেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ নয়। ভক্তসংখ্যা কম। কিন্তু, সেই সব স্থানের মাহাত্ম্যের কথা শুনলে চোখ ছানাবড়া হয়ে যেতে বাধ্য। তেমনই এক ধর্মস্থান রয়েছে দেশের উত্তর অংশের অন্যতম রাজ্য উত্তরপ্রদেশে। সেখানকার এক জেলা হামিরপুর। সেই হামিরপুরেই রয়েছে ওই ধর্মস্থান।
যাকে স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন- সিংহ মহেশ্বরী মন্দির। কেউ বলেন সিংহম মহেশ্বরী মন্দির। আবার কেউ বলেন পাতালী মন্দির। কথিত আছে এই মন্দির অতি প্রাচীন। ঠিক কতটা প্রাচীন, তা জানা যায় না। তবে, অনেকের দাবি মন্দিরটি তৈরি হয়েছিল গুপ্ত সাম্রাজ্যের সময়ে। এটি একটি শিব মন্দির। সময়ের সঙ্গে তার রক্ষণাবেক্ষণ করছেন স্থানীয় ভক্তরা।
এই মন্দিরকে পাতালী মন্দির বলার সঙ্গেই জুড়ে রয়েছে রহস্য। কথিত আছে, যমুনা নদীতে ব্যাপক জলস্ফীতি দেখা দিয়েছিল। তার জেরে ওই অঞ্চল ভেসে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। তখন ভক্তরা মন্দিরটি অন্যত্র সরানোর চেষ্টা করেন। সেজন্যে শিবলিঙ্গটিকে তুলে আনার পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু, গভীর গর্ত করার পরও সেই শিবলিঙ্গের তল খুঁজে পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন- ভারতে কোথায় আছে সূর্য মন্দির, কী মেলে সূর্য উপাসনায়?
শেষপর্যন্ত হাল ছেড়ে দিয়ে ভক্তরা, ওই জায়গাতেই শিবের উপাসনায় বাধ্য হন। যমুনার জলও এই মন্দির পর্যন্ত আসেনি। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এই মন্দিরে যে শিবলিঙ্গ রয়েছে, তা নিজে থেকেই মাটি ফুঁড়ে উঠে এসেছিল। প্রতিবছর এখানকার শিবলিঙ্গের দৈর্ঘ্য চালের একটি দানার সমান বাড়ে। যার কারণ, আজও খুঁজে বের করতে পারেনি কেউ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এখানে প্রার্থনা করলে, সেই ব্যক্তিকে বিফল হতে হয় না। মানত করলে, তা অবশ্যই পূরণ হয়। এই মন্দির চত্বরে রয়েছে শতাধিক চন্দন গাছ। তা নিয়েও রয়েছে অলৌকিক কাহিনি। ৪০ বছর আগে, এই মন্দিরের আগের মহন্ত একটি চন্দন গাছ লাগিয়েছিলেন। তারপর থেকে এখানে নিজে নিজেই চন্দন গাছ গজিয়ে উঠছে। আর, তা বেড়ে চলেছে। যাকে মহাদেবের কৃপা ছাড়া অন্য কিছু ভাবতে নারাজ ভক্তরা।