সকাল ছটায় গানের রেওয়াজ, আটটায় স্কুল, দুপুরে নাকে মুখে গুঁজেই টিউশন, বিকেলে নাচের ক্লাস, সন্ধেবেলায় হোমওয়ার্ক আর রাতে ইউটিউবে পোকেমন ডোরেমনের সঙ্গে ডিনার সেরে ব্যাক টু বিছানা। ঘড়ির কাঁটা আর ইঁদুর দৌড়ে পাল্লা দিতে গিয়ে ওদের শৈশবের ওষ্ঠাগত প্রাণ। অন্যদিকে বাবা মা-র কর্পোরেট জীবনে খুদেগুলো এখন ফার্স্টবয় বা ফার্স্ট গার্ল নামক গ্যাজেট মাত্র। বেড়ে ওঠার আকাশের অভাবে ডানাগুলো ঝরে যায় মেলে ধরার আগেই.। এই প্রতিযোগিতার বাজারেও আপনি নাহয় আপনার খুদেটকে একটু অন্যভাবেই মানুষ করলেন। দেখুন না পারেন কি না।
সন্তানের ইচ্ছের গুরুত্ব দিন, জোর করে কিছু চাপিয়ে দেবেন না, ডাক্তার ইঞ্জিনিয়রের বদলে সে যদি পেইন্টার বা ডান্সার হতে চায় সেটাই মেনে নিন। এতে পরবর্তীতে বাবা মা- এর ইচ্ছের গুরুত্ব দিতে শিখবে আপনার খুদেও।
ওকে নিজের মতো বেড়ে উঠতে দিন, খুব বেশি আগলে রাখবেন না বা নিয়ন্ত্রন করতে যাবেন না। এতে পরবর্তীতে কোনও কঠিন পরিস্থিতির সঙ্গে মোকাবিলা করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে আপনার সন্তান।
অতিরিক্ত বকাবকি বা মারধর করবেন না। ঠান্ডা মাথায় কথা বলে ওর ভুলটা শুধরে দিন, বন্ধুর মতো মিশুন আপনার খুদের সঙ্গে। ও ঠিক কী বলতে চাইছে বোঝার চেষ্টা করুন এতে ও নিজের ভুলগুলো আপনার সঙ্গে ভাগ করবে পরবর্তীকালে।
ছেলে মেয়ের সামনে তাদের অতিরিক্ত প্রশংসা না করাই ভাল, এতে আপনার খুদে ওভার কনফিডেন্সে বিগড়ে যেতে পারে।
বাবা মা-র ঝগড়া ঝামেলা ছোটোদের মনে খারাপ প্রভাব ফেলে, কাজেই ওর সামনে পারিবারিক অশান্তি না করাই ভাল।
ছোটদের সময় দিন, টাকা পয়সা, দামি খেলনা, গ্যাজেট দিয়ে তাঁদের ভুলিয়ে রাখার চেষ্ঠা করবেন না, মনে রাখবেন আপনার সন্তান কোনও ইনভেস্টমেনট পলিসি নয় যে তার জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় করলেই মোটা বেনিফিট পাবেন।
টিভি আর স্মার্ট ফোনে ওর শৈশবকে বেঁধে না দিয়ে খোলা মাঠে ছেড়ে দিন ওকে, উড়তে শিখলেই পোক্ত হবে ওর ডানা, যাতে বার্ধ্যক্যে আপনিও ভর দিতে পারবেন নিশ্চিন্তে।