অদ্রিজা রায়চৌধুরী
সালটা ১৭৫৭, পলাশীর যুদ্ধে বাংলার শেষ নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার পতনের পর বাংলার ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় শুরু হল। নবাব মীর জাফরের কাছ থেকে হুগলী নদীর তীরে ৩৩টি গ্রাম কিনেছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। এই ৩৩টি গ্রামের নামের তালিকায় ছিল চিৎপুরও। বাঙালি জমিদার পরিবারের ঘনবসতি সম্বলিত এই চিৎপুর তখন ছিল ব্ল্যাক টাউনের হৃদয়। জোড়াসাঁকো, পাথুরিয়াঘাটার ঠাকুর পরিবার সহ রাজেন্দ্র মল্লিকের রাজবাড়িও ছিল এই অঞ্চলেই। এরপর ধীরে ধীরে বানিজ্যের কেন্দ্র হয়ে ওঠে এই চিৎপুর, মারোয়াড়ী, বিহারি, আওয়াধি এবং আরও বিভিন্ন জাতীর আনাগোনা শুরু হয় এখানে।
বর্তমানে মুসলিম সম্প্রদায়ের বসতি হিসেবেই পরিচিত চিৎপুর। তার অন্যতম কারণ কচের সুন্নি মুসলিম সম্প্রদায়ের তৈরি নাখোদা মসজিদের অবস্থান। বলা বাহুল্য, ঈদের মরসুমে চিৎপুর সেজে ওঠে নবাবি মেজাজে। পবিত্র রমজান মাসে চারিদিকে সাজ সাজ রব। স্বভাবতই সেজেছে চিৎপুরও, কোরান আর উপহারের পসরা সাজিয়েছেন দোকানিরা। বিক্রি হচ্ছে নানান প্রসাধনী, রয়েছে এমব্রয়ডারি করা রকমারি টুপি। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখ্য ঈদের খাবার। বিরিয়ানি, কাবাব থেকে হালিম, রয়েছে সবই। চেখে দেখতে পারেন মুঘল বা আওয়াধি ক্যুইজিন। নাখোদা মসজিদের ডান দিকেই রয়েছে জাকারিয়া স্ট্রিট। সেহরি আর ইফতারের সময়ে এই স্থানটা চোখে পড়ার মতো। রইল তারই কিছু ঝলক।
ছবি: অর্পণ গাঙ্গুলি