Advertisment

নববর্ষের খানাপিনায় দুই বাংলার ভিন্ন স্বাদ, খাবারের আয়োজনও নজর কাড়ার মতো

সহজ কথায় দুই বাংলাতেই নববর্ষ মানে আহারে বাহার, পাত পেড়ে রসিয়ে খাওয়ার দিন

author-image
Anurupa Chakraborty
New Update
NULL

নববর্ষের খাবার

বাঙালির নববর্ষ মানেই খাবারের ছড়াছড়ি। গুরুজনদের প্রণামের সূত্রে যেমন মিষ্টি রয়েছে তেমনই কিন্তু ঝালে ঝোলে অম্বলে কিছুই কম নেই। সকালের লুচি তরকারি থেকে নিশি শেষে একখানি সাদা মশলার পান, এদিন খাবার-দাবার থেকে দূরে থাকা একেবারেই সম্ভব নয়। আর নববর্ষ মানেই কিন্তু দুই বাংলার কিছু অসম্ভব লোভনীয় খাবার।

Advertisment

দুই বাংলার মধ্যে শুধুই নামের তফাৎ রয়েছে কারওর কাছে পয়লা বৈশাখ তো কারওর কাছে পহেলা বৈশাখ। তার সঙ্গে নতুন পোশাক, নিজের মানুষ আর নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে যেন এক অসম্ভব উচ্ছ্বাস। দুই বাংলার রান্নাঘরেই নববর্ষ মানে স্পেশ্যাল কিছু রেসিপি, অবশ্যই তাতে বাঙালিয়ানা থাকতে বাধ্য। এদিন মাছ, মাংসের ছড়াছড়ি - কোনও কমতি নেই!

এপার বাংলায় অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গের অন্দরে খোঁজ করলে দেখা যাবে নববর্ষ মানেই মাছ, মাংসের আয়োজন। কারণ তার ঠিক আগের দিনই চৈত্র সংক্রান্তি হিসেবে নিরামিষ আহারেই বেশিরভাগ মানুষ স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। ছোট আকারের লুচি সঙ্গেই এপার বাংলার মানুষের ঘরে ঘরে সেদিন চালের পায়েস কিংবা শিমুইয়ের পায়েস, আতিথেয়তায় ছিল ভরপুর সমাহার। এছাড়াও পার্শে, চিংড়ি বাটা থেকে কাঁচা আমের ডাল। এঁচোড় কিন্তু অনেকের বাড়িতেই সংক্রান্তি উপলক্ষে খাওয়া হয়ে থাকে। বেশিরভাগ বাড়িতেই এদিন পাঁঠার মাংস কিন্তু হবেই হবে, আবার বেশ কিছু বাড়িতে পুঁই মিটুলির চচ্চড়ি রান্না করা হয়। এদেশে এখন খাবারের স্বাদ অনেকটাই বদলেছে, মোগলাই থেকে তন্দুর, অনেকেই বাইরে খাওয়াদাওয়া করতে পছন্দ করেন। খাবারে এপার বাংলায় তেমন কোনও ভিন্ন নিয়ম না থাকলেও, ওপার বাংলায় কিন্তু দেখার মতো!

আরও পড়ুন হালখাতা জড়িয়ে রয়েছে বাংলার নবাবী শাসনে, নববর্ষের সঙ্গে এর সম্পর্কের শুরু কীভাবে?

publive-image

বাংলাদেশের নববর্ষ মানেই বৈশাখীর আয়োজন। এদিন সুন্দর সাজ পোশাকের সঙ্গেই, মেয়েরা খোঁপায় ফুল লাগাতে পছন্দ করেন। তেমনই খাবারেও রয়েছে বেশ কিছু ইতিহাস! সকালের শুরুতেই মিষ্টি টকের মেলবন্ধন দেখতে পাওয়া যেত সেদেশে - কাঁচা আমের শরবত দিয়েই ভোরের শুরু করতেন তারা। নতুন আমের আগমনের সঙ্গেই বৈশাখের প্রথম দিনের প্রথম প্রহর উদযাপন করতেন তারা। বাংলাদেশে বৈশাখ উপলক্ষেই আবির খেলার চলও কিন্তু আছে।

এই আম নিয়েই কিন্তু এক বিরাট ইতিহাস রয়েছে ওপার বাংলায় - যাকে আমানি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। চৈত্রের শেষ সন্ধেতেই এক হাঁড়ি জলে কিছু অপক্ক চাল এবং আমের কচি ডাল জলে ভিজিয়ে রাখা হয়। পরের দিন ভোর হতেই সেই চাল বাড়ির সকলে মিলে একসঙ্গে খান। আবার বাড়ির মা বউয়েরা আমের পাতা দিয়েও জল ছিটিয়ে ঘরদোর শুদ্ধ করেন।

publive-image

এছাড়াও সবথেকে বেশি নজর কাড়ে যে খাবারটি সেটি হল, পান্তা ভাত এবং ইলিশ ভাজা সঙ্গে অবশ্যই নানা ধরনের ভর্তা। সেটি নিরামিষ ভর্তা যেমন হতে পারে তেমনই নববর্ষে শুঁটকি ভর্তার চাহিদা কিন্তু প্রবল। অল্প লেবু, লঙ্কা আর তার সঙ্গেই ইলিশ ভাজা দিয়ে পান্তা ভাত। এদিন ধনী-গরিব সকলের পাতেই কিন্তু পান্তা ভাতের বিকল্প নেই!

আরও পড়ুন ঐতিহ্য ও সম্প্রীতির মেলবন্ধনে জানুন বাংলা ক্যালেন্ডারের গুরুত্ব

খাবারের কথা উঠলে মিষ্টি একেবারেই বাদ যায় না। বিশেষ করে নববর্ষ উপলক্ষে এইদিন, লবঙ্গ লতিকা এবং দুধ পুলি বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় মিষ্টি। দুই বাংলার রসনাতৃপ্তিতেই জড়িয়ে আছে আধুনিকতা এবং সাবেকিয়ানা। বাঙালির উৎসব থেকে পার্বণ খাওয়াদাওয়ার খামতি থাকলে একেবারেই চলবে না।

Bengali New Year food noboborsho banglades food
Advertisment