Advertisment

কোভিডের পর হতে পারে হার্টের সমস্যা! জেনে নিন চিকিৎসকদের পরামর্শ

সুস্থ থাকতে বেশি তেল,ঝাল, মশলা যুক্ত খাবার না খাওয়াই ভালও।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

করোনা সংক্রমণ থেকে সুস্থ হওয়ার পরও যেন রক্ষে নেই মানবদেহের। এক থেকে শুরু করে নানান রোগের সূত্রপাত এবং তার সঙ্গে নানান শারীরিক সমস্যা। কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শ্বাসযন্ত্রের নানান সমস্যা এবং মাথা যন্ত্রণা, গা-হাত-পা ব্যথা এগুলি সাধারণ বিষয়। তবে চিকিৎসকদের মতে, সুস্থ হওয়ার পর হার্টের নানান সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।

Advertisment

দীর্ঘস্থায়ী হার্টের সমস্যা যেমন বুকে ব্যথা, হার্ট অ্যাটাক, হার্ট ফুলে যাওয়া, হার্ট ফেইলিওর, কম পাম্প ক্যাপাসিটি (কম ইজেকশন ভগ্নাংশ), এবং অ্যারিথমিয়া মানবদেহের বিপদ ঘটাতে পারে। সেই কারণে হার্টকে সুস্থ রাখতে, কোভিড-পরবর্তী রোগীদের অবশ্যই প্রতি ছয় মাস পর নিয়মিত কার্ডিয়াক স্ক্রিনিং করতে হবে। একটি স্বাস্থ্যকর ডায়েট মেনে চলতে হবে, শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকতে হবে এবং প্রতিদিনের ওষুধ নিয়ম মেনে খেতে হবে।

ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর অনেক রোগী মায়োকার্ডাইটিস (হার্ট পেশীর প্রদাহ), হার্ট অ্যাটাক, হার্ট ফেইলিওর, রক্ত ​​জমাট বাঁধা, অ্যারিথমিয়া এবং স্ট্রোকের সম্মুখীন হতে পারেন। কারণ হিসেবে বলা যায় ভাইরাসের প্রভাব শ্বাসযন্ত্রের সঙ্গে সঙ্গে রক্তের ইমিউন সিস্টেম কমিয়ে দেয়। বিশুদ্ধ রক্ত ব্যতীত হার্টের সমস্যার হাত থেকে রক্ষে নেই। ডা. প্রমোদ নরখেরে (হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ, অ্যাপোলো হাসপাতাল) জানান, অনেক সময় দেখা গেছে, করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার ছয় থেকে সাত মাস পরে কার্ডিয়াক সমস্যায় ভুগছেন কিছু মানুষ। ১০০-র মধ্যে ৭৮ জন করোনা রোগীই পরবর্তীতে হৃদরোগে আক্রান্ত।

মহামারির সঙ্গে যুঝতে মানুষ প্রতিনিয়ত নিজেদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সচেষ্ট। ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে নিজেদের ইমিউনিটি সিস্টেম বাড়িয়ে তুলতে নানান পদ্ধতির প্রয়োগ চলছে মানবদেহে। এবং সেইগুলি কিছু মাত্রায় হলেও ক্ষতি করছে প্রয়োজনীয় শারীরিক টিসুর। যেই কারণেই হার্টের সমস্যা ক্রমাগতই বৃদ্ধি পাচ্ছে মানুষের।

শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা এগুলি শুধু যে হৃদরোগের বহিঃপ্রকাশ এমনটাও কিন্তু নয়, এগুলি অন্যান্য অসুস্থতার কারণেও হতে পারে। ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় শারীরিক দুর্বলতা ভীষণ মাত্রায় গ্রাস করছে। দীর্ঘ নিষ্ক্রিয়তা এবং বিছানায় কয়েক সপ্তাহ বিশ্রাম নেওয়ার কারণেও এটি হতে পারে। ওপিডিতে দেখা যায়, ১০ জন রোগীর মধ্যে প্রায় ছয়জন (যাঁদের আগে থেকে হার্টের সমস্যা ছিল না) তাঁদের কোভিড কার্ডিয়াকের লক্ষণ রয়েছে সুতরাং সমস্যাগুলি দ্রুত সমাধান করা উচিত । যাঁদের আগে থেকেই হার্টের সমস্যা আছে তাঁদের সতর্ক হওয়া উচিত এবং প্রাণঘাতী জটিলতা রোধে নিয়মিত ওষুধ এবং চিকিৎসকের সঙ্গে ফলো-আপ করা উচিত।

সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন কী করে ?

প্রথমেই যেই বিষয়ে লক্ষ্য রাখা উচিত নিজের প্রতিদিনের রুটিনে অবশ্যই ফেরার দিকে নজর দিতে হবে। শারীরিক অ্যাক্টিভিটি যেমন অল্প সময় হাঁটা, যোগব্যায়াম এবং পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। ডা. কীর্তি প্রকাশ (প্যাথলজিস্ট, অ্যাপোলো হাসপাতাল) জানান, হার্টের অবস্থা আদৌ স্থিতিশীল কিনা সেই বিষয়ে পরীক্ষা করা অবশ্যই প্রয়োজন। উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের যথা ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের ইসিজি, এক্স-রে ( heart x-ray ) এবং লিপিড প্রোফাইল ছয় মাস পর পর অবশ্যই করানো উচিত। এই পরীক্ষাগুলি হার্টের কোনও ক্ষতি আছে কিনা তা নির্ধারণ করতে সহায়তা করবে। নিয়মিত ফলোআপের জন্য চিকিৎসকের কাছে যেতে একদম ভুলবেন না।

আরও পড়ুন মুখগহ্বরের সমস্যায় ডায়াবেটিস কি ভীষণ মাত্রায় ক্ষতিকর? উপকার পাবেন কী করে!

এছাড়াও, সুস্থ থাকতে বেশি তেল,ঝাল, মশলা যুক্ত খাবার না খাওয়াই ভালও। যতটা সম্ভব হালকা পাতলা, এবং প্রচুর পরিমাণে মিষ্টি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। প্রেশার এবং কোলেস্টরল নিয়মিত পরিমাপ করুন। ওজন বাড়তে দেবেন না সঙ্গে ধূমপান এবং মদ্যপান বন্ধ করা উচিত। শরীরের কোনও অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Heart Attack COVID-19 Side Effects
Advertisment